মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ১২:৪৯ পূর্বাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান

শ্রীলঙ্কার নির্বাচনে প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে প্রতিবেশী ভারত ও চীনের লড়াই

  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর, ২০১৯
  • ২০৩ বার পঠিত

 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আগামী নভেম্বরে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী বা বিরোধী দলনেতা কেউই এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন না। তবে শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক ইতিহাসের বিরল হলেও কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রটির নির্বাচন নিয়ে প্রতিবেশী ভারত ও চীনের লড়াই প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে।

আগামী ১৬ নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রেকর্ড ৩৫ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। শ্রীলঙ্কা পদুজনা পেরামুনার বা এসএলপিপি দলের প্রার্থী সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও গোতাবায়া রাজাপাকসে এগিয়ে আছেন। তিনি সমর্থন পাচ্ছেন ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট সিরিসেনার শ্রীলঙ্কা ফ্রিডম পার্টি বা এসএলএফপি।

অপর শক্ত প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হলেন বর্তমান জোট সরকারের গৃহায়নমন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টির (ইউএনপি) উপনেতা সাজিথ প্রেমাদাসা। আসন্ন নির্বাচনে প্রধান ইস্যুগুলো হচ্ছে অর্থনীতি, জাতীয় নিরাপত্তা, দুর্নীতি, জাতিগত মেরুকরণ ও ধর্মীয় পরিবেশ।

দক্ষিণ ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে প্রভাব বিস্তারের ক্ষেত্রে শ্রীলঙ্কা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই শ্রীলঙ্কার নির্বাচনে পেছন থেকে কলকাঠি নাড়ছে চীন এবং ভারত। গোটা অঞ্চলে চীন যাতে একচ্ছত্র প্রভাব বিস্তার না করতে পারে তাই ভারতও তাদের পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করে যাচ্ছে।

এপ্রিলের ইস্টার সানডে বোমা হামলা এলটিটিইর বিরুদ্ধে দীর্ঘ গৃহযুদ্ধ অবসানের সময় নিরাপত্তা বাহিনীর দায়িত্বে থাকা রাজাপাকসের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলেছে। জাতীয় নিরাপত্তাকে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হিসেবে তুলে ধরছেন তিনি। যুদ্ধবসানের কারণে ভূমিকা সিংহলী বৌদ্ধদের মধ্যে তার জনপ্রিয়তা বাড়িয়েছে।

তবে রাজাপাকসে এগিয়ে থাকলেও তার জয় নিশ্চিত নয় গোতাবায়া রাজাপাকসের। কেননা তার ভাই সাবেক প্রেসিডেন্ট মহিন্দা রাজাপাকসের সময়ে (২০০৫-২০১৫) ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছিল। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগও উঠেছিল তার বিরুদ্ধে।
অন্যদিকে সাজিথ প্রেমাদাসার বাবা রনসিঙ্গে প্রেমাদাসা তামিল বিদ্রোহীদের হামলায় নিহত হয়েছিলেন। বাবার যোগ্য উত্তরসূরী হিসেবে তাকে বিবেচনা করা হয়। তামিল ও মুসলিমদের বেশিরভাগ ভোট তিনি পাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, গোতাবায় রাজাপাকসেকে সমর্থন দিচ্ছে চীন। অপর প্রতিদ্বন্দ্বী রনসিঙ্গে প্রেমদাসার পক্ষে রয়েছে ভারত। চীনের প্রভাব কমাতে ভারত প্রচ্ছন্ন সমর্থন দিচ্ছে তাকে। গত বছর শ্রীলঙ্কায় রাজনৈতিক সঙ্কট চলাকালে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন প্রেমদাসা।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের অন্যতম প্রার্থী গোতাবায়া রাজাপাকসের বড় ভাই মাহিন্দা রাজাপাকসে যখন শ্রীলঙ্কার ক্ষমতায় ছিলেন তখন তার চার ভাইয়ের নিয়ন্ত্রণে ছিল বেশিরভাগ মন্ত্রণালয়। সরকারি ব্যয়ের প্রায় ৮০ শতাংশই এই চার ভাই নিয়ন্ত্রণ করতেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, গোতাবায়া রাজাপাকসে নির্বাচিত হলে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিতে চীনের ঋণ প্রভাব ফেলবে। মাহিন্দা রাজাপাকসে চীন থেকে ঋণ নিয়েছিলেন। তার কারলে ১১০ কোটি ডলারে গুরুত্বপূর্ণ বন্দর হাম্বানটোটার নিয়ন্ত্রণ পেয়েছে চীন।

শ্রীলঙ্কার মোট জনসংখ্যার ১০ ভাগ মুসলিম। হিন্দু প্রায় ১২ ভাগ। তারা মূলত তামিল। আর ৭০ ভাগের বেশি সিংহলী বৌদ্ধ। ২০২০ সালে শ্রীলঙ্কায় পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে সংবিধান সংশোধনের ফলে দেশটির প্রধানমন্ত্রী ও পার্লামেন্টের হাতে অনেক ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com