ক্রীড়া ডেস্ক : অলিম্পিকে স্বাধীন ভারতের প্রথম পতাকা উড়েছিল তাঁর হাত ধরে। শুধু-ই কি একবার? ১৯৪৮ সালের পর তাঁর উপস্থিতিতে ১৯৫২ এবং ১৯৫৬ সালেও অলিম্পিকে সোনা জেতে ভারত। তিনি ছিলেন হকির রাজকুমার।
ভারতের হকির নক্ষত্র বলবীর সিং সিনিয়র। ফরোয়ার্ড দাঁড়িয়ে প্রতিপক্ষের দুর্গ চূর্ণবিচূর্ণ করে দিতেন। সেই নক্ষত্রপতন হলো সোমবার সকালে। নিঃশব্দে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন বলবীর সিং। গত দুই সপ্তাহ ধরে বয়স জনিত নানা সমস্যায় ভুগছিলেন। ৮ মে তাকে মোহালির হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। ছিলেন ভেন্টিলেশনে। দীর্ঘ রোগভোগের পর শেষ পর্যন্ত জীবন যুদ্ধে হার মানতে হল হকির কিংবদন্তির। মৃত্যুর সময়ে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর। এর আগে ২০১৯ সালে তাকে একবার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল।প্রায় ১০৮ দিন হাসপাতালে কাটানোর পর ছুটি পান তিনি।
১৯৪৭ সালে বলবীর সিং ভারতীয় দলে যোগ দেন। পরের বছরই সুযোগ পান অলিম্পিকে। ফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে অলিম্পিক জেতে ভারত। ওই ম্যাচে এক গোলও করেছিলেন বলবীর সিং। ১৯৫২ সালে তিনি ছিলেন ভারতীয় দলের সহ-অধিনায়ক। চার বছর পর ১৯৫৬ সালে তিনি অধিনায়ক। দুবারই অলিম্পিক জেতে ভারত। ’৫৬ ফাইনালে তাঁর করা ৫টি গোল এখনও অলিম্পিক ফাইনালে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড হয়ে রয়েছে। সাফল্যমণ্ডিত ক্যারিয়ারে ভারতের হয়ে ৬১ ম্যাচ খেলেছেন বলবীর সিং। এ সময়ে গোল করেছিলেন ২৪৬টি।
খেলোয়াড়ি জীবন ছাড়ার পর ভারতীয় হকি দলের কোচও হয়েছিলেন বলবীর সিং। ১৯৭৫ সালে ভারতীয় দল শেষবার হকিতে অলিম্পিক জেতে। সেই দলের কোচিংয়ের দায়িত্বে ছিলেন এ কিংবদন্তি। ১৯৫৭ সালে তাকে দেওয়া হয় পদ্মশ্রী পদক। আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি ২০১২ সালে তাকে বেছে নেয় ‘আইকনিক অলিম্পিয়ান’ হিসেবে। একমাত্র ভারতীয় ও এশিয়ার একমাত্র পুরুষ হিসেবে এই সম্মান পেয়েছিলেন তিনি।
তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কুবিন্দ ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শোকের ছায়া নেমে এসেছে ক্রীড়াঙ্গনে।