ডেস্ক: সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার বক্তব্য সুপার এডিট করে ছড়ানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ফরিদপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন। এ কাজের জন্য তিনি তার শত্রুপক্ষকে অভিযুক্ত করেছেন।
আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে ফোনালাপের কথা তুলে ধরে এই জনপ্রিয় সংসদ সদস্য বলেন, ‘ওই ভয়েসটাই (কণ্ঠস্বর) আমার না। এটি সুপার এডিট করা হয়েছে। এমনকি এটা কেটে কেটে বিভিন্ন জায়গা থেকে এনে এডিট করা হয়েছে।’
নিক্সন চৌধুরী বলেন, ‘শত্রুপক্ষ আমার বক্তব্য সুপার এডিট করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেড়েছে।’
গত ১০ অক্টোবর চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাচনের সময় তার কয়েকজন কর্মীকে বিনা কারণে আটকের কথা উল্লেখ করে নিক্সন চৌধুরী বলেন, ‘আমি বিনা কারণে আমাদের নেতাকর্মীকে আটক করার বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলেছি। কিন্তু কোনো গালিগালাজ করিনি। কারণ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমার বোনের মতো।’
তিনি কোনো নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেননি বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন ভাঙ্গা-চরভদ্রাসন-সদরপুরের সাংসদ নিক্সন চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে মামলা হলে, ফরিদপুরের ডিসির বিরুদ্ধেও মামলা করা উচিত। কারণ আমি যদি নির্বাচন বিধি লঙ্ঘন করে থাকি তাহলে তিনিও লঙ্ঘন করেছেন।’
সাংসদ নিক্সন চৌধুরী বলেন, ‘নির্বাচনের পরদিন জেলা প্রশাসক আমার বাড়িতে ইউএনওকে পাঠিয়েছেন। আমি যাতে ভোটের দিনে তারা যে তাণ্ডব করেছেন সেই বিষয়ে কিছু না বলি। কম্প্রোমাইজ করার জন্য অনুরোধ করেছেন। আমার কাছে সেই প্রমাণ আছে। প্রয়োজন হলে আমি জায়গামতো এই প্রমাণ দাখিল করব।’ তবে আইনে বাধা থাকায় সংবাদ সম্মেলনে তা প্রকাশ করেননি বলে জানান তিনি।
গত শনিবার তার কয়েকজন কর্মীকে আটক করা নিয়ে ইউএনওর সঙ্গে কথোপকথনের বিষয়ে নিক্স চৌধুরী বলেন, ‘নির্বাচন চলার সময়ে মাঠে দাঁড়িয়ে ধূমপান করার কারণে বিজিবির সদস্যদের দিয়ে আমার এক কর্মীকে আটক করা হয়। এই বিষয়ে আমি প্রথমে এসিল্যান্ডকে (সহকারী কমিশনার, ভূমি) ফোন করেছিলাম। ‘আমি দেখতেছি’ বলে তিনি ফোনটা বন্ধ করে দেন।’
‘পরে আমি আপাকে (ইউএনও) ফোন করলাম যে, আপা আমার একটা লোক ধরা পড়ছে আপনি একটু দেখেন। সে কোনো অন্যায় করেনি, মাঠে দাঁড়িয়ে সিগারেট খাচ্ছিল। তাকে বিজিবি ধরে নিয়ে গেছে। আপনি একটু ব্যবস্থা নেন। এই কথাটুকুই আমি তাকে বলেছি। বাকি কোনো কথা আমার না। এটা আপনি টিএনও সাহেবকে জিজ্ঞেস করলেই পাবেন।’
নিক্সন চৌধুরী সংবাদ সম্মেলনে আরও বলেন, ‘আপনারা জিজ্ঞেস করেন, এই গালিগুলো আমি ইউএনওকে দিয়েছি কি না। সুনির্দিষ্টভাবে প্রমাণ করুন যে, এই ভয়েসটা আমার। এই ক্লিপগুলো একেক জায়গা থেকে কেটে নিয়ে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য করা হয়েছে।’
হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা আছে জানিয়ে নিক্সন চৌধুরী বলেন, আমার কাছেও কিছু তথ্য আছে। আমি চাইলেই সেগুলো প্রকাশ করতে পারতাম। কিন্তু আমি হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা এবং আইনের প্রতি সম্মান দেখিয়ে ব্যক্তিগত আলাপের রেকর্ড ফেসবুকে দেইনি। আমার ১০০ ভাগ বিশ্বাস তিনিও (ইউএনও) আইনের লোক হয়ে এই কাজ করবেন না।
নির্বাচনে নৌকা মার্কার প্রার্থীর বিপক্ষে গিয়ে বিএনপির স্বতন্ত্র প্রার্থীকে সহযোগিতার অভিযোগ এনে নিক্সন চৌধুরী বলেন, ‘আমি এতদিনে স্বতন্ত্র প্রার্থীকে সমর্থন দিতাম। তারাও জয়ী হয়েছেন। আমি এবার স্বতন্ত্র প্রার্থীকে সমর্থন না দিয়ে প্রথমবার নৌকা মার্কার প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছি। কিন্তু আমার ডিসি বিএনপির স্বতন্ত্র প্রার্থী যিনি এলাকায় বালু ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত, তাকে সমর্থন দিয়েছেন।’