নিজস্ব প্রতিবেদক : নোয়াখালীর সুধারাম উপজেলার গোপীনাথপুর গ্রামের নয় বছরের শিশু আরাফাত হোসেনকে কুপিয়ে হত্যার দায়ে একমাত্র আসামি মো. জাহাঙ্গীরের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ছয় সদস্যের বিচারপতির ভার্চুয়াল বেঞ্চ এই রায় দেন। আদালতে আজ আসামিপক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট এ বি এম বায়েজীদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ।
দেশের সর্বোচ্চ আদালতে মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকায় এখন নিয়ম অনুযায়ী এই রায় প্রকাশের পর মো. জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে দণ্ড কার্যকরের জন্য মৃত্যু পরোয়ানা জারি করা হবে। এরপর রিভিউ আবেদন করার সুযোগ পাবেন আসামি। ওই রিভিউ আবেদন খারিজ হলে তার রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাওয়ারও সুযোগ থাকবে। রিভিউ আবেদন না করলেও রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা আবেদন করার সুযোগ থাকবে। রাষ্ট্রপতি আবেদন খারিজ করলে কারা কর্তৃপক্ষ আসামির মৃত্যুদণ্ডের রায়ে ফাঁসি কার্যকর করতে পারবে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০০৭ সালের ১৩ মার্চ সন্ধ্যার পর সুধারাম উপজেলার গোপীনাথপুর গ্রামের শিশু আরাফাত হোসেনকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে কুপিয়ে হত্যার পর পাশের কবরস্থানে ফেলে রাখে আসামি মো. জাহাঙ্গীর। আরাফাত একই জেলার মাইজদী নুরানি হাফেজিয়া মাদরাসার শিক্ষার্থী ছিল। এই হত্যার ঘটনায় নিহতের পিতা বাবুল খান বাদী হয়ে একই বছরের ১৫ মার্চ মামলা করেন। ১৮ মার্চ জাহাঙ্গীর হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
তিনি জবানবন্দিতে জানান, নিহত আরাফাতের পিতার কাছে তারা (জাহাঙ্গীর) জমি বিক্রি করে। এই জমির টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে আরাফাতকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন তিনি। এ মামলায় বিচার শেষে নোয়াখালীর আদালত ২০০৮ সালের ২৮ জুলাই মো. জাহাঙ্গীরকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় দেয়। এরপর মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য নিম্ন আদালত থেকে হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স পাঠানো হয়। একই সঙ্গে কারাবন্দি আসামি আপিল করে।
পরে উভয় আবেদনের ওপর শুনানি শেষে ২০১৩ সালের ১৮ নভেম্বর জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে দেয়া বিচারিক আদালতের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে হাইকোর্ট রায় ঘোষণা করেন। এরপর আসামি কারাগারে থেকে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল আবেদন করেন। আজ এই আবেদনের ওপর আপিল বিভাগে শুনানি হয়। আসামিপক্ষ থেকে নিজস্ব কোনো আইনজীবী না থাকায় রাষ্ট্রপক্ষ থেকে স্টেট ডিফেন্স হিসেবে (রাষ্ট্রীয় খরচে) আইনজীবী অ্যাডভোকেট এবিএম বায়েজীদকে আইনজীবী নিয়োগ দেয়া হয়।