সিটিজেন প্রতিবেদক: বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী আবদুল্লাহ আল নোমানের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রমহান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ মঙ্গলবার সকালে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তারা শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন।
শোকবার্তায় তারেক রহমান বলেন, মরহুম আবদুল্লাহ আল নোমান একজন দেশপ্রেমিক রাজনীতিবিদ হিসেবে দেশের সকল ক্রান্তিকালে জনগণের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেন। তিনি একজন জাতীয় রাজনীতিবিদ হিসেবে দেশবাসীর নিকট অত্যন্ত সমাদৃত ছিলেন। সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান বীরউত্তমের নীতি ও আদর্শে গভীরভাবে আস্থাশীল এবং বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদী দর্শনে বিশ্বাসী মরহুম আবদুল্লাহ আল নোমান বিএনপির প্রতিষ্ঠাকাল থেকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে একজন আপসহীন যোদ্ধা হিসেবে নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন।
তিনি বলেন, জনসেবার মহান লক্ষ্য সামনে নিয়ে রাজনীতি করতেন বলেই সরকারের মন্ত্রী হয়ে নিজ এলাকাসহ সারাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে ব্যাপক অবদান রাখেন। ‘৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের একজন অনন্য সংগঠক হিসেবে তাঁর অবদান জাতির নিকট চিরঅম্লান হয়ে থাকবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, তিনি ছিলেন একাধারে প্রাজ্ঞ ও জনঘনিষ্ঠ রাজনীতিবিদ এবং সজ্জন ও বিনয়ী মানুষ হিসেবেও সর্বমহলে তাঁর ছিল অকৃত্রিম গ্রহণযোগ্যতা। বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ ও বহুদলীয় গণতান্ত্রিক চেতনাকে দৃঢ়ভাবে বুকে ধারণ করে মানুষের বাক-ব্যক্তি ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার স্বপক্ষে তাঁর লড়াই ছিল অবিস্মরণীয়। বর্তমান সময়ে তাঁর মতো আদর্শনিষ্ঠ রাজনীতিবিদের মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে ব্যথিত হয়েছি।
আবদুল্লাহ আল নোমানের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা এবং শোকার্ত পরিবারবর্গ, গুণগ্রাহী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান তারেক রহমান।
এ ছাড়া নোমানের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।
তিনি বলেন, আবদুল্লাহ আল নোমান ছিলেন একজন ত্যাগী রাজনীতিবিদ। রাজনৈতিক অঙ্গনে তিনি ব্যক্তিত্বসম্পন্ন একজন নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তার মৃত্যু দেশের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।
এর আগে, মঙ্গলবার ভোর ৬টায় রাজধানীর একটি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। তিনি বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছিলেন।
নোমানের ব্যক্তিগত সহকারী নুরুল আজিম হিরু বলেন, আবদুল্লাহ আল নোমান অসুস্থতা বোধ করলে মঙ্গলবার ভোরে স্কয়ার হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
১৯৯১ সালে চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থেকে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আবদুল্লাহ আল নোমান। তিনি তিন বারের সংসদ সদস্য ছিলেন।
বিএনপির এই নেতা মৎস্য ও খাদ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
উল্লেখ্য, আবদুল্লাহ আল নোমান ষাটের দশকে ছাত্র ইউনিয়নে যোন দেন। পরে মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর হাত ধরে যোগ দেন শ্রমিক রাজনীতিতে। ১৯৭০ সালে তিনি ন্যাপের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হোন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। যুদ্ধ শেষে আবারও ন্যাপের রাজনীতিতে সক্রিয় হন। জিয়াউর রহমান বিএনপি গঠনের পর ১৯৮১ সালে দলটিতে যোগ দেন।