হাফসা  :
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমান এর নির্দেশনায়— রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় অগ্নিদগ্ধে আহত তাছরুবা মাহাবিন, আশরাফুল ইসলাম, নুরে জান্নাত ইউশা, সুমাইয়া রহমান ল্যারিন-এর পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ একটি প্রতিনিধি দল।
এ সময় তিনি বলেন, রাজনীতি করার পাশাপাশি মানুষের পাশে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।
আজ ২০ আগষ্ট বুধবার, বিকেল ৪.০০ ঘটিকায় এই মানবিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন— বিএনপি’র যুগ্ম-মহাসচিব ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর উপদেষ্টা শহীদউদ্দীন চৌধুরী এ্যানি।
আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির কয়েকজন উপদেষ্টা ও সদস্য সচিবসহ অন্যান্য সদস্য।
এছাড়াও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব হাজী মোস্তফা জামান, যুগ্ম-আহ্বায়ক এসএম জাহাঙ্গীর, কফিল উদ্দিন, আফাজ উদ্দিন ও স্থানীয় অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
আহত পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানিয়ে তাদের হাতে তারেক রহমানের পক্ষ থেকে আর্থিক অনুদান তুলে দেন বিএনপি নেতা শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি।
এ সময় তিনি বলেন, আমরা একটি টিম বিশেষভাবে কাজ করছি মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজের ২১ তারিখের মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনার ঘটনাটি নিয়ে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সংবাদ পাওয়া মাত্রই আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন। আমরাও আমাদের দায়িত্ব থেকে এই স্কুল এন্ড কলেজের সামনে এসেছি। আমাদের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব এডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদসহ পুরো টিম উপস্থিত ছিল।
তিনি বলেন,
আমাদের একটি মেডিকেল টিমও তাৎক্ষণিকভাবে উপস্থিত হয়েছিল। ছাত্রদলের নেতৃত্বে এবং আমিনুল হকসহ আমরা সবাই মিলে যারা নিহত হয়েছেন এবং যারা গুরুতর আহত হয়েছেন তাদের পাশে দাঁড়িয়েছি। আমরা দীর্ঘক্ষণ মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজে অবস্থান করেছি এবং সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছি। আহতদের উত্তরা মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

সবচেয়ে হৃদয়বিদারক ঘটনা হলো—এই দুর্ঘটনায় কেজি স্কুলের ক্লাস থ্রি, ফোর, ফাইভ, সিক্সের ছেলে-মেয়ে এবং শিক্ষিকারা নিহত হয়েছে ও অনেকে এখনো মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। আমরা মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করছি, তিনি যেন আহতদের সুস্থ করে তোলেন।
এ্যানি চৌধুরী বলেন,
দুর্ঘটনা তো বলে কয়ে আসে না, তবে আমাদের সজাগ ও সতর্ক থাকতে হয়। একটি জনবহুল এলাকায় এভাবে প্রশিক্ষণ বিমান উড়বে বা ট্রেনিং চলবে—এটা সাধারণত দেখা যায় না। সাধারণত কক্সবাজার বা যশোরে এ ধরনের প্রশিক্ষণ বিমান পরিচালনা হয়। তাহলে কেন এই দুর্ঘটনা ঘটল? এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি আমরা সঙ্গে সঙ্গেই জানিয়েছিলাম। প্রায় এক মাস অতিক্রান্ত হলেও এখনো তদন্তের কোনো ফলাফল প্রকাশিত হয়নি।

আমাদের দাবি, নিহত ও আহত পরিবার গুলোর পাশে সরকারকে দাঁড়াতে হবে। এখন পর্যন্ত আমরা দেখছি সরকার প্রায় কিছুই করেনি। এই পরিবারগুলোর যেন কোথাও হাত পাততে না হয়—সেই দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে।

আমরা, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), নিহতদের বাড়িতে গিয়েছি, তাদের পরিবারের সঙ্গে দোয়ায় অংশ নিয়েছি, সান্ত্বনা দিয়েছি। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নিচ্ছেন। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ থাকলেও নিয়মিত খোঁজখবর নিয়েছেন। এটি আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা ও মনোবল বাড়ানোর একটি বড় উৎস।

রাজনীতি করার পাশাপাশি মানুষের পাশে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। আমরা শুধু দেখানোর জন্য নয়, বরং দায়িত্ববোধ থেকে কাজগুলো করেছি এবং করছি।
তিনি বলেন,
উত্তরা অতীতে আন্দোলন-সংগ্রামে ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞের সাক্ষী ছিল। হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালানো হয়েছে, পুলিশ বাহিনীর বন্দুক থেকে গুলি ছোড়া হয়েছে, সন্ত্রাসী বাহিনী শেখ হাসিনার নির্দেশে উত্তরাকে মৃত্যুর নগরীতে পরিণত করেছিল। আজ সেই ভয়ংকর শাসন নেই—হাসিনা পালিয়ে গিয়েছে।

তবে ২১ তারিখে আমরা যখন এখানে এসেছিলাম, ২২ তারিখে কিছু ষড়যন্ত্রকারীরা সাধারণ মানুষের সাথে মিশে পরিবেশকে উত্তপ্ত করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু আমাদের সতর্কতা এবং সাধারণ মানুষের সচেতনতার কারণে সেই ষড়যন্ত্র সফল হয়নি।

আজকে আমাদের দায়িত্ব হলো—শহীদ ও আহত পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়ানো। বিএনপি পরিবার এরই মধ্যে একটি ফাউন্ডেশন গঠন করেছে, যাতে শুধু এই দুর্ঘটনায় নয়, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে শহীদ, আহত, পঙ্গুত্ব বরণকারী সকল মানুষের পাশে দাঁড়ানো যায়।
এ্যানি চৌধুরী আরো বলেন,
আমরা শুধু ঢাকাতেই নয়, গ্রামাঞ্চলেও গিয়েছি, আর্থিকভাবে সহযোগিতা করেছি, মনোবল জুগিয়েছি। এর সবচেয়ে বড় দিক হলো তারেক রহমান নিজে খোঁজখবর নিয়েছেন। বিএনপি শুধু আন্দোলন-সংগ্রামেই সীমাবদ্ধ নয়—আমরা দেশের সেবায়, মানুষের সেবায় সর্বদা কাজ করে যাচ্ছি এবং ইনশাআল্লাহ করব।

আজকের দিনে নির্বাচন নিয়ে নতুন ষড়যন্ত্র চলছে, গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার চেষ্টা হচ্ছে। এজন্য আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে, ইস্পাতকঠিন মনোবল নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।

আমাদের টার্গেট একটাই—গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা, দেশকে রক্ষা করা। এজন্য আপনাদের সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।