মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ১০:২২ পূর্বাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান

বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে করা গোয়েন্দা রিপোর্ট ১৪ খণ্ডে প্রকাশ হচ্ছে

  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯
  • ২৮৬ বার পঠিত

অনলাইন ডেস্ক, সিটিজেন নিউজ: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে পাকিস্তান সরকার যে গোয়েন্দা রিপোর্ট করেছিল তা ১৪ খণ্ডে প্রকাশ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে এর দুই খণ্ড প্রকাশিত হয়েছে। বাকিগুলো পর্যায়ক্রমে প্রকাশ করা হবে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের মধ্যেই সবগুলো খণ্ড প্রকাশিত হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই গোয়েন্দা রিপোর্ট পুস্তকাকারে প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছেন।

বুধবার জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নুর সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ তথ্য জানান। ১৪ খণ্ডের এ গোয়েন্দা রিপোর্ট ছাড়া বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনীমূলক বই ‘স্মৃতি কথা’ ও চীন ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নিয়ে বঙ্গবন্ধুর লেখা বই প্রকাশের উদ্যোগের কথা জানান।
পুলিশের বর্তমান আইজিপি যখন এসবির ডিজি ছিলেন তাকে দায়িত্ব দিলাম। তার সঙ্গে আরো ২২ জনের মতো কর্মকর্তা সহযোগিতা করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার বিরুদ্ধে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা যেসব রিপোর্ট পাঠাতো সেটা আমরা জানতাম। সেজন্য ১৯৯৬ সালে সরকারে আসার পর খুঁজে দেখি কোনো তথ্য পাই কি না। দেখলাম ৪৬টি ফাইলের ৪৮ খণ্ড। প্রায় ৪০ হাজারের মতো পাতা। সেগুলো সব নিয়ে ফটোকপি করিয়ে রাখি। এই ফাইলগুলো নিয়ে দিনের পর দিন কাজ করতে থাকি। মরহুম ড. এনায়েতুর রহীম সাহেবও এটা নিয়ে কাজ করেন। দ্বিতীয়বার (২০০৯) যখন ক্ষমতায় আসি ঠিক করলাম এগুলো প্রকাশ করবো। এগুলো টাইপ ও এডিট করার ৪০ হাজার পাতা কমিয়ে ৯ থেকে ১০ হাজার পাতার মতো হয়েছে।

তিনি জানান, এখন এটা সম্পূর্ণ তৈরি। হাক্বানি পাবলিশার্স এটা পাবলিশ করতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় খণ্ড বের হয়েছে। তৃতীয় খণ্ডও ছাপাখানায় চলে গেছে। চতুর্থ খণ্ডের ডামি আমার কাছে আছে। আমি এটা দেখছি। সম্পাদন করে আবার পাঠাবো। সেটাও হবে। এভাবে ১৪ খণ্ড করকে হবে। এক বছরের মধ্যে ১৪ খণ্ড বের করা সম্ভব হবে কী না- চেষ্টা করে যাচ্ছি। তবে আশা করছি যতদূর সম্ভব শতবর্ষ উদযাপনের মধ্যেই ১৪ খণ্ড যাতে বের করা যায়।

দেশের ইতিহাসের জন্য এ গোয়েন্দা রিপোর্ট গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গোয়েন্দা রিপোর্ট সব থেকে উল্লেখযোগ্য এই কারণেই যে, ইতিহাস থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে সম্পূর্ণ মুছে ফেলেছিল সেই ইতিহাস ১৯৪৮ থেকে ১৯৭১ সালে তার বিরুদ্ধে গোয়েন্দা রিপোর্ট। যে তথ্যটা বের করছি এটা ছিল কিন্তু বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে তার পক্ষে নয়। তার বিরুদ্ধে গোয়েন্দা রিপোর্ট। গোয়েন্দারা তার বিরুদ্ধে কী কী অপপ্রচার করবে এখানে এমনও রয়েছে।

তিনি বলেন, এই প্রকাশনার মাধ্যমে ভাষা, স্বাধীনতা আন্দোলনে প্রতিটি ক্ষেত্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর অবদান। তিনি কিন্তু অগ্রণী ভূমিকায় ছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলো তার নামটা সম্পূর্ণভাবে মুছে ফেলা হয়েছিল। স্বাধীনতা আন্দোলন থেকেও তাকে মুছে দিয়ে কেন কখন ড্রামের ওপর দাঁড়িয়ে ঘোষণা দিল আর দেশ স্বাধীন হয়ে গেল সেই কথাগুলো বলা হলো। জানি না পৃথিবীতে কোনো নেতার বিরুদ্ধে লেখা রিপোর্ট কোনো দেশে প্রকাশিত হয়েছে কী না, জানি না বোধহয় হয়নি। আমি এই উদ্যোগটা নিয়েছি। এর ভেতর থেকে বাঙালি হিসেবে ইতিহাসের সত্য ঘটনাটা উদ্ভাসিত হবে।

বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিকথা বই প্রকাশের উদ্যোগ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী ও কারাগারের রোজনামচা‘র বাইরে আরো কিছু লেখা আছে সেটা হচ্ছে তিনি (বঙ্গবন্ধু) নিজেই নাম লিখেছিলেন ‘স্মৃতিকথা‘। সেটা অনেকটাই অসমাপ্ত আত্মজীবনীর মতো তবে আরো বেশি সমৃদ্ধ। সেটা ইতোমধ্যে তৈরি করেছি আমরা ছাপাবো। এর বাংলাটার কাজ হয়ে গেছে। ইংরেজির অনুবাদও হয়ে গেছে। প্রতিটি লাইনের সাথে আমি নিজেই ইংরেজি অনুবাদ মিলিয়ে দেখছি। এছাড়া ‘নিজের জীবনী কথা’ যা গাফ্ফার চৌধুরী ও মাহবুব তালুকদারসহ কয়েকজন…জওয়াদুল করিম সাহেবও ছিলেন। তারা উনার (বঙ্গবন্ধুর) কথা রেকর্ড করতেন। গণভবনে কী কী আছে তা খোঁজ করতে করতে আমি ৪টি টেপ রেকর্ড পাই। আমি আর বেবী (মরহুম বেবী মওদুদ) বসে তার স্ক্রিপ্ট তৈরি করি, লিখি। দেখি এখানে ওনার স্মৃতি কথার সাথে অনেক কথা মিলে যায়। এজন্য স্মৃতি কথার সাথে যেখানে যেখানে সংযুক্ত হয় সেটা করি। স্মৃতি কথাও তৈরি করে রেখেছি। আরো কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এটা ছাপাতে দেবো। গোয়েন্দা রিপোর্টের মধ্যে দুইখানা লেখা খাতা ছিল। সেটা তারা বাজেয়াপ্ত করে দিয়েছিল। খোঁজ করতে করতে আমরা একখানা খাতা পেয়েছি। আরেক খানা খাতায় ওনার হাতের লেখা পেয়েছি অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী একজন বাঙালির কাছে। পরে তার মূল খাতাটাও পেয়ে যাই। স্মৃতি কথার সাথে এটা প্রকাশ করবো সেভাবেই তা তৈরি করা হয়েছে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ১৯৫২ সালে চীন ভ্রমণে গিয়েছিলেন। সেখানে একটি আন্তর্জাতিক শান্তি সম্মেলন হয়েছিল।তদানিন্তন পাকিস্তান থেকে যে প্রতিনিধি যায় তার সাথে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবও গিয়েছিলেন। তার ওই ভ্রমণের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে তিনি লিখেছিলেন। সেই বইটাও মোটামুটি তৈরি হয়ে গেছে। ইতোমধ্যে প্রকাশনার জন্য দিয়ে দেয়া হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com