রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:১৯ অপরাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান

শ্বাসরুদ্ধকর জয়ে সিরিজ বাংলাদেশের

  • আপডেট টাইম : বুধবার, ৪ মার্চ, ২০২০
  • ২০৮ বার পঠিত

ক্রীড়া ডেস্ক: বাংলাদেশের জয় যখন সময়ের ব্যাপার মনে হচ্ছিল, ঠিক তখনই সিলেটে ঝড় তুললেন ডোনাল্ড তিরিপানো। চার-ছক্কার ফুলঝুড়িতে উল্টো জয়ের স্বপ্ন দেখান তিনি জিম্বাবুয়েকে। শেষ বল পর্যন্ত জমে থাকা উত্তেজনাকর ম্যাচে অঘটনের জন্ম হয়নি। শেষ হাসি হেসেছে বাংলাদেশই। শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচ ৪ রানে জিতে স্বাগতিকরা সিরিজ জিতেছে এক ম্যাচ আগেই।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম উত্তেজনায় ঠাসা এক ম্যাচ উপভোগ করলো। ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ৩২২ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করিয়েও জয় পেতে রীতিমতো ঘাম ঝরাতে হয়েছে বাংলাদেশকে। তামিম ইকবালের ক্যারিয়ার সর্বোচ্চ ১৫৮ রানের ইনিংস প্রায় মাটিই হয়ে যাচ্ছিল তিরিপানো ঝড়ে। শেষ দিকে তার ২৮ বলে ৫৫ রানের ঝড়ো ইনিংসে জিম্বাবুয়ের ইনিংস শেষ হয় ৮ উইকেটে ৩১৮ রানে।

টানা দ্বিতীয় জয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ বাংলাদেশ ২-০ ব্যবধানে জিতে নিলেও কাঠগড়ায় উঠবে বাংলাদেশের বোলিং। জিম্বাবুয়ের মতো অপেক্ষাকৃত দুর্বল দলের বিপক্ষে ঘরের মাঠে ৩২২ রান করেও হারের শঙ্কা জন্মানো মোটেও ভালো খবর নয় বাংলাদেশের জন্য। আল-আমিন হোসেনের শেষ দুই বলে তিরিপানো সুবিধা করতে না পারায় বড় লজ্জার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে মাশরাফিরা।

শেষ ওভারে জয়ের জন্য ২০ রান দরকার ছিল জিম্বাবুয়ের। কঠিন হলেও তিরিপানো যে মেজাজে ব্যাট করছিলেন, তাতে অসম্ভব ছিল না। প্রথম দুই বলে আল-আমিন একটি উইকেট নিয়ে ভালো কিছুরই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। কিন্তু তার তৃতীয় ও চতুর্থ বলে তিরিপানো ছক্কা হাঁকালে ম্যাচের দৃশ্যপট যায় পাল্টে। শেষ দুই বলে আরেকটি ছক্কা হলেই জিতে যাবে জিম্বাবুয়ে। যদিও তিরিপানো পারেননি। তাতে বাংলাদেশের হয়েছে মুখরক্ষা।

তিরিপানো ও টিনোটেন্ডা মুটোমবোজির (২১ বলে ৩৪) ঝড়ো ব্যাটিংয়ের আগে ম্যাচ ছিল বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণে। শুরুতেই বাংলাদেশকে উইকেট এনে দেন শফিউল ইসলাম। এই পেসারের বলে ফিরে যান রেগিস চাকাভা (২)। এরপর অবিশ্বাস্য ফিল্ডিংয়ে মেহেদী হাসান মিরাজ এনে দেন দ্বিতীয় উইকেট। দুর্দান্ত থ্রোতে তিনি রান আউট করে ফেরান ব্রেন্ডন টেলরকে।

শফিউল ইসলামের বল মিড-অনে ঠেলে দিলে সিঙ্গেলস নিতে চেয়েছিলেন টেলর। কিন্তু মিরাজ প্রথমে ঝাঁপিয়ে বাঁ হাত দিয়ে বল ঠেকিয়ে ডান হাতের থ্রোতে ভেঙে দেন স্টাম্প। মিরাজের দুরূহ কোণ থেকে রান আউট করার দৃশ্য জন্টি রোডসের কথাই যেন মনে করিয়ে দিলো। প্যাভিলিয়নে ফেরার আগে টেলর ২১ বলে করেন ১১ রান।

দুর্দান্ত থ্রোতে রান আউট করার পর বল হাতে উইকেট উদযাপন করেন মিরাজ। জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক শন উইলিয়ামসকে প্যাভিলিয়নে ফেরান তিনি এলবিডাব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলে। সতীর্থদের ব্যর্থতায় একপ্রান্ত আগলে রেখেছিলেন ওপেনার টিনাশে কুমুনুকামওয়ে। যদিও তাকে ফেরান তাইজুল ইসলাম। উইকেট উদযাপন করতে মাত্র ৪ বল অপেক্ষা করতে হয় তাকে। নিজের প্রথম ওভারেই তিনি বোল্ড করে ফিরিয়েছেন কুমুনুকামওয়ে।

নাজমুল হোসেন শান্তর সৌজন্যে একবার জীবন পেয়েছিলেন জিম্বাবুয়ে ওপেনার। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম হাফসেঞ্চুরিও পূরণ করেন তিনি। যদিও ফিফটি করে বেশিদূর যেতে পারেননি। ৭০ বলে ৫ বাউন্ডারি ও ২ ছক্কায় ৫১ রানে বোল্ড হয়েছেন তাইজুলের বলে।

১০২ রানে ৪ উইকেট হারানো জিম্বাবুয়েকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন ওয়েসলি মাদেভেরে ও সিকান্দার রাজা। তাদের পঞ্চম উইকেট জুটিতে অস্বস্তি বাড়ছিল বাংলাদেশের। অবশেষে তাদের প্রতিরোধ ভাঙেন তাইজুল। এই স্পিনারের দ্বিতীয় শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন মাদেভেরে। আউট হওয়ার আগে ৫৭ বলে ৫ বাউন্ডারিতে করেন ৫২ রান।

তাইজুলের উইকেট উদযাপন থামেনি। বোলিংয়ে এসেই উইকেট উদযাপন করা বাঁহাতি স্পিনারের তৃতীয় শিকার রিচমন্ড মুটুমবামি। তাইজুলের পর দ্বিতীয় ওয়ানডেতে প্রথমবার উইকেট পান মাশরাফি। বাংলাদেশ অধিনায়কের শিকার সিকান্দার রাজা। দারুণ ব্যাট করতে থাকা সিকান্দারকে থার্ডম্যানে মাহমুদউল্লাহর ক্যাচ বানান বাংলাদেশ অধিনায়ক। আউট হওয়ার আগে সিকান্দার খেলে যান ৬৬ রানের ইনিংস। ৫৭ বলের ইনিংসটি তিনি সাজান ৫ চার ও ২ ছক্কায়।

এরপরই তিরিপানো-মুটোমবোজির অষ্টম উইকেটে ৮০ রানের ভয় ছড়ানো জুটি। মুটোমবোজি আউট হলেও ঝড়ো হাফসেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের ক্রিকেটভক্তদের মনে ভয় ছড়িয়ে দেন তিরিপানো।

সফরকারী ব্যাটসম্যানদের সামনে সবচেয়ে সফল তাইজুল। বাঁহাতি স্পিনার ১০ ওভারে ৫২ রান দিয়ে পেয়েছেন ৩ উইকেট। মাশরাফি ও মিরাজ নিয়েছেন ১ উইকেট। তাদের মতো একটি করে উইকেট পেলেও মুক্তহস্তে রান দিয়েছেন আল-আমিন (১/৮৫) ও শফিউল (১/৭৬)।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com