শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৩:৫৬ অপরাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান

ইচ্ছে করলেই কি যে কাউকে কাফের-মুনাফেক বলা যাবে?

  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ৭ জুন, ২০১৯
  • ২৮৫ বার পঠিত

ধর্ম ডেস্ক,সিটিজেন নিউজ: ঈমান মানুষের অমূল্য সম্পদ। কথা ও কাজে কোনো ব্যক্তিকে যদি কাফের বা অবিশ্বাসী হিসেবে সাব্যস্ত করা না যায় তবে ওই ব্যক্তিকে কোনোভাবেই কাফের বা অবিশ্বাসী বলা যাবে না। বরং তাকে ঈমানদার মনে করে অন্তর থেকে ভালোবাসতে হবে। এটাই ঈমানের একান্ত দাবি।

বর্তমান সময়ে মানুষ একে অপরকে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে কাফের, মুনাফেক কিংবা অনেক খারাপ বিশেষণে বিশেষায়িত করে থাকে। এমনটি করা কোনোভাবেই উচিত নয়। কারণ কথা ও কাজে ঈমানবিধ্বংসী বক্তব্য না থাকলে তাকে তা বলা যাবে না।
মনে রাখতে হবে, কোনো ব্যক্তিকে ঈমানদার হিসেবে বিশ্বাস করা ও তার ঈমানদার হওয়ার ব্যাপারে সাক্ষ্য দিতে বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ছোট্ট হাদিসটিই যথেষ্ট। আর তাহলো-

হজরত আবু সাঈদ খুদরি রাদিয়াল্লাহ আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যদি এমন কোনো ব্যক্তিকে দেখতে পাও যে, সে নিয়মতি মসজিদে আসা-যাওয়া করে এবং তার (মসজিদের) তত্ত্বাবধান ও খেদমত করে তখন তোমরা ওই ব্যক্তির ঈমান আছে বলে সাক্ষ্য দেবে। কারণ আল্লাহ তাআলা বলেন- নিশ্চয়ই তারাই মসজিদসমূহের আবাদ রাখে; যারা আল্লাহ ও কেয়ামতের দিনের ওপর বিশ্বাস রাখে।’ (মিশকাত, তিরমিজি, ইবনে মাজাহ, দারেমি)
ইসলামও ঈমানদার মানুষকে ভালোবাসা ফরজ বা আবশ্যক করে দিয়েছেন। তাই নিজের স্বার্থসিদ্ধি-আধিপত্য ও খেয়াল-খুশি মোতাবেক কাউকে যেমন কাফের বলা যাবে না তেমনি কারো কোনো দোষের কারণে তাকে ঘৃণাও করা যাবে না।

যদি কোনো ঈমানদারের মাঝে মন্দ কাজ পাওয়া যায় কিংবা দেখা যায় তবে সে ঈমানদারকে তার মন্দ কাজ থেকে ফেরাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া যাবে কিন্তু তাকে ঘৃণা করা যাবে না বরং তাকে ভালোবাসতে হবে। এমনটি করাও ঈমানের আবশ্যক দাবি।

উপরোল্লেখিত হাদিসের আলোকে বুঝা যায় যে-

ঈমানদারের অন্যতম গুণ হলো মসজিদের তত্ত্বাবধানে নিজেকে নিয়োজিত রাখা কিংবা সব সময় মসজিদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা। মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায় করা, জিকির-আজকার ও তাসবিহ-তাহলিল পড়াসহ কুরআন তেলাওয়াত করার মাধ্যমেই মানুষ মসজিদকে আবাদ রাখে।

মানুষের উচিত ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে মসজিদকে আবাদ রাখার মতো পবিত্র দায়িত্ব পালন করে যাওয়া। তবেই মানুষের মনে আল্লাহ, তাঁর রাসুল ও কেয়ামতের দিনের প্রতিও পরিপূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাসের বীজ তৈরি হবে। আল্লাহ তাআলা বলেন-

‘তারাইতো আল্লাহর মসজিদ রক্ষণাবেক্ষণ করবে; যারা আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস করে এবং যথাযথভাবে নামাজ পড়ে; জাকাত আদায় করে এবং আল্লাহ ব্যতিত অন্য কাউকে ভয়ও করে না; ওদের সম্পর্কে আশা যে, ওরা সৎপথ প্রাপ্ত হবে।’ (সুরা তাওবা : আয়াত ১৮)

যারা বেশি বেশি মসজিদে আসা-যাওয়া করে, মসজিদের খেদমত করে, মসজিদে বসে নফল ইবাদত ও নামাজ আদায় করে কুরআন-হাদিসের ভাষায় তারাই সুপথ প্রাপ্ত ঈমানদার।

একটি বিষয়ে সতর্ক থাকা জরুরি

দুনিয়ায় কোনো মানুষকেই নিজেদের মতের সঙ্গে মিল না থাকলে ইসলাম বিদ্বেষী বা অবিশ্বাসী কাফের, মুনাফেক ইত্যাদি বিশেষণে আখ্যায়িত করা যাবে না। যতক্ষণ না ওই ব্যক্তির মাঝে প্রকাশ্য কুফর প্রকাশ না হয়। বরং অবিশ্বাসী সাব্যস্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত মসজিদে যাতায়াতকারী, নামাজ-রোজাসহ ইবাদত-বন্দেগি করা ব্যক্তিকে মুমিন-মুসলমান হিসেবে ভালোবাসাও ঈমানের একান্ত দাবি।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ঈমানের বিষয়ে একে অপরকে ভালোবাসার তাওফিক দান করুন। অযথা হিংসাবশতঃ একজন ঈমানদারকে কাফের, মুনাফেক কিংবা খারাপ বিশেষনে আখ্যায়িত করে নিজের ঈমান নষ্ট করা থেকে বেঁচে থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com