দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে আহত বিতর্কিত লেখক সালমান রুশদি আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের একটি হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে আছেন তিনি।
এক প্রতিবেদনে সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, এরইমধ্যে সালমানের শরীরে অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়েছে।
শুক্রবার (১২ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রে ছুরি হামলার শিকার হন সালমান রুশদি। নিউইয়র্কের শিটোকোয়া ইনস্টিটিউটে এক অনুষ্ঠানমঞ্চে কথা বলছিলেন তিনি। এ সময় তার ঘাড়ে এক হামলাকারী ছুরিকাঘাত করেন। পরে হেলিকপ্টারে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে।
এই ঘটনার পর স্থানীয় পুলিশ হাদি মাতার (২৪) নামে সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে আটক করেছে। পুলিশ বলছে, হামলাকারী মঞ্চে উঠে রুশদি ও তার সাক্ষাৎকার গ্রহণকারীর ওপর হামলা চালান। রুশদির ঘাড়ে ছুরি দিয়ে বেশ কয়েকটি আঘাত করা হয়েছে। পরে হামলাকারীকে ধরে নিজেদের হেফাজতে নেয় পুলিশ।
সালমানের বইয়ের এজেন্ট অ্যান্ড্রু ওয়াইলি বলেন, ‘সালমান সম্ভবত একটি চোখ হারাতে পারেন। তার বাহুর স্নায়ু বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে এবং তার পাকস্থলী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, হামলাকারীর মুখে কালো মাস্ক ছিল। তিনি দর্শকদের মধ্য থেকে বেরিয়ে মঞ্চে উঠে পড়েন ও রুশদির ওপর হামলা চালান।
ভারতীয় বংশোদ্ভূত বুকার পুরস্কারজয়ী ৭৫ বছর বয়সী লেখক রুশদি ১৯৮১ সালে তার লেখা বই ‘মিডনাইটস চিলড্রেন’ দিয়ে খ্যাতি অর্জন করেন। কিন্তু ১৯৮৮ সালে তার চতুর্থ বই ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’-এর জন্য তাকে ৯ বছর লুকিয়ে থাকতে হয়েছিল।
‘স্যাটানিক ভার্সেস’ উপন্যাসে ইসলাম ধর্মকে অবমাননা করা হয়েছে বলে মনে করেন মুসলিমরা। এটি প্রকাশের পর থেকে রুশদি হত্যার হুমকি পেয়ে আসছিলেন। বইটি প্রকাশের এক বছর পর ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি রুশদির মৃত্যুদণ্ডের ফতোয়া জারি করেন। সেই সঙ্গে তার মাথার দাম হিসেবে ৩ মিলিয়ন (৩০ লাখ) ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেন।
রুশদির ওপর হামলার ঘটনায় যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনসহ দেশটির রাজনীতিবিদেরা নিন্দা জানিয়েছেন।