মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ০২:১৬ অপরাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান

গঙ্গা-যমুনা উৎসবে মঞ্চস্থ ‘ট্রায়াল অব সূর্যসেন’

  • আপডেট টাইম : সোমবার, ৯ অক্টোবর, ২০২৩
  • ৪২ বার পঠিত

নাট্যপ্রেমীদের জন্য বইছে সুসময়। এক আয়োজনে দেখা মিলছে বিবিধ বিষয়ের দর্শকনন্দিত নাটকসমূহ। বাংলাদেশ ও ভারতের ৪৫টি নাট্যদলের বৈচিত্র্যময় প্রয়োজনায় সেজেছে গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব। ১২ দিনব্যাপী এ উৎসবের তৃতীয় দিন ছিল রবিবার। এদিন সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে মঞ্চস্থ হয় ‘ট্রায়াল অব সূর্যসেন’। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের বীর যোদ্ধা মাস্টারদা সূর্য সেনের বিরুদ্ধে প্রহসনের বিচারকে উপজীব্য করে নির্মিত হয়েছে নাটকটি। ইতিহাসনির্ভর নাটকটিতে সূর্য সেন, প্রীতিলতা, কল্পনা দত্ত, অম্বিকা চক্রবর্তী, লোকনাথ বল, নির্মল সেনসহ প্রায় ৪০টি ঐতিহাসিক চরিত্র উঠে এসেছে। ঢাকা পদাতিক প্রযোজিত প্রযোজনাটি রচনার পাশপাশি নির্দেশনায়ও ছিলেন মাসুম আজিজ। পরবর্তীতে নাটকটির নব-নির্দেশনা দিয়েছেন নাদের চৌধুরী।

নাটকের ঘটনাপ্রবাহে উঠে আসে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের প্রেক্ষাপট। আর ব্রিটিশ বেনিয়াদের বিরুদ্ধে ভারতবর্ষের সেই স্বাধীনতা সংগ্রামের অনিবার্য এক চরিত্র মাস্টারদা সূর্য সেন। ১৯৩৩ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি পুলিশের হাতে ধরা পড়েন বিপ্লবী সূর্য সেন। মাস্টারদাকে আটকের অনতিকাল পরে গ্রেপ্তার হন আরও দুই বিপ্লবী তারকেশ্বর দস্তিদার ও কল্পনা দত্ত। ১৯৩০ সালের ২৪ জুলাই দায়েরকৃত চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন মামলায় তিনজনের বিশেষ আদালতে বিচার হয়। তড়িঘড়ি বিচারকাজ শেষ করে ১৯৩৩ সালের ৪ আগস্ট সূর্যসেন ও তারকেশ্বর দস্তিদারকে ফাঁসির দন্ডাদেশ দেওয়া হয়। অন্যদিকে কল্পনা দত্তকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেওয়া হয়।

১৯৩৪ সালের ১২ জানুয়ারি চট্টগ্রাম কারাগারে সূর্য সেন ও তারকেশ্বরের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। সে ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের বাস্তবতায় ট্রায়াল অব সূর্যসেন নাটকে ওই বিচার প্রক্রিয়াকে পুনর্নিরীক্ষণ করা হয়। চরিত্র চিত্রন এবং বর্ণনাধর্মী জিজ্ঞাসার মধ্য দিয়ে মঞ্চে এই সত্য উন্মোচিত হয় যে, ‘ন্যায়’ ভূলুণ্ঠিত হয়েছিল ওই বিচার প্রক্রিয়ায়। পুরো প্রক্রিয়াটি পরিচালিত হয়েছিল সূর্য সেন হত্যার অন্যায়কে বৈধতা দানের উদ্দেশে। প্রহসনমূলক এই বিচার কার্যক্রমের অসারতা তুলে আনার পাশাপাশি নাটকে প্রতিষ্ঠিত হয় ব্রিটিশ দখলদারিত্বের অন্যায্যতার বিপরীতে স্বাধীনতাকামী বিপ্লবের মহান চেতনা। সেই অগ্নিঝরা চেতনায় পূর্ববঙ্গে জন্ম নেওয়া সূর্য সেনের স্বাধীনতা-আকাক্সক্ষার যে বীজ বপন করেছিলেন তা পল্লবে-পুষ্পে পরিপুষ্ট হয়েছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে; বাংলাদেশ-রাষ্ট্রের জন্মে।

নাটকে সূর্য সেন চরিত্রে রূপ দিয়েছেন নাদের চৌধুরী। কল্পনা দত্ত চরিত্রে অভিনয় করেছেন মাহবুবা হক কুমকুম ও কাজী শিলা। প্রীতিলতার চরিত্রে অভিনয় করেছেন হাসনা হেনা শিল্পী। অন্যান্য চরিত্রে রূপ দিয়েছেন মন্জুরুল ইসলাম নান্ট, শ্যামল হাসান, সাবিহা জামান, মনির উজ্জামান তালুকদার, আখতার হোসেন, আল আমিন স্বপন, সুমন ঘোষ, রবিউল মিল্টন, খন্দকার আতিক মীর ফারজানা নিপা ও শাহনাজ জয়া।

রবিবার তৃতীয় দিনের উৎসবে মঞ্চস্থ হয়েছে আরও তিনটি নাটক। শিল্পকলা একাডেমির নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হয়েছে পুলিশ থিয়েটার প্রযোজনা ‘অচলায়তনে অপ্সরী’। নাট্যশালার স্টুডিও থিয়েটার হলে মঞ্চস্থ হয় মৈত্রী থিয়েটার প্রযোজনা ‘মেহেরজান’। মহিলা সমিতি মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হয় এথিক প্রযোজনা ‘নেতা যে রাতে নিহত হলেন’। এদিন বিকেলে একাডেরি মুক্ত মঞ্চে দলীয় আবৃত্তি পরিবেশন শিশু সংগঠন চিত্রন আবৃত্তি অঙ্গন। দলীয় সংগীত পরিবেশন করে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী ও পদ্মশ্রী সংগীত নিকেতন। দলীয় আবৃত্তি পরিবেশন করে চারুবৃক্ষ ও স্বরাঙ্গন বাচিক চর্চা কেন্দ্র। দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে পুষ্পাঞ্জলি নৃত্যকলা কেন্দ্র। পথনাটক পরিবেশন করে নাট্যযোদ্ধা।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com