উত্তরা সংবাদ দাতা : রাজধানী উত্তরার ১৩ নং সেক্টর কল্যাণ সমিতির খেলার মাঠে বিএনপির চেয়ারপারসন দেশ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি কামনা করে দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ১লা ফেব্রুয়ারী ২০২৫ শনিবার বিকাল চারটায় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি যুগ্ম- আহ্বায়ক মুহাম্মদ আফাজ উদ্দিন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।
দেশ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি কামনা করে আয়োজিত দোয়া ও গরীব অসহায় মানুষের মাঝে উপহার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফকরুল ইসলাম আলমগীর।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফকরুল ইসলাম আলমগীর বলেন,খুনি হাসিনা পালানোর কারণে আমরা এখন দম ছেড়ে নিঃশ্বাস নিতে পারছি। কয়েকদিন আগে জনগণের রোসানলে পরে ফ্যাসিস হাসিনা পালিয়েছে। দিল্লিতে বসে সে এখনো বলছে সে যে কোন সময় টুপ করে চলে আসবে। খুনি হাসিনা এদেশের কতো মায়ের বুক খালি করেছে। কতো মানুষ মেরেছে এ নিয়ে তার কোন অনুশোচনা নেই। তার রূগ্ন অর্থনীতির কারণে বাজারে জিনিস পত্রের দাম বেড়েছে। এ সময় তিনি আরো বলেন, হাসিনা পালিয়ে গেলেও আমরা এখনো আমাদের গণতান্ত্রিক ভোটের অধিকার ফিরে পাইনি। মির্জা ফকরুল ইসলাম আলমগীর বলেন,৫ আগষ্টের পর আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সমর্থন দিয়ে বলেছি নুন্যতম সংস্কার করে আপনারা নির্বাচন দিয়ে ভোটের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা বুঝিয়ে দেন।
এটা নিয়েও এখন তালবাহানা চলছে।প্রশাসন দিয়ে
আমরা আর ইলিয়াছ আলীর ও মুন্নার মতো গুম খুন দেখতে চাই না, আমরা ভালোবাসার বাংলাদেশ দেখতে চাই। আমরা কোন দখলবাজী দেখতে চাই না। তিনি নেতা কর্মীদের উদ্দেশ্য বলেন, আমাদের সামনে কঠিন সময়, সামনের নির্বাচনে জনগণের ভোট পেতে মানুষের ভালোবাসা অর্জন করেন। আমাদের নেতা তারেক রহমানকে আল্লাহপাক যেন সুস্থ করে বাংলাদেশে ফিরে আনে আপনারা দোয়া করবেন। দেশ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে যেন আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সুস্থ করে তোলেন আপনারা দোয়া করবেন। আমরা চাই নিরপেক্ষ সরকারের অধিনে নির্বাচন হবে। সরকারে থেকে নির্বাচন করাকে এ দেশের জনগণ মেনে নিবে না।
এ সময় আফাজ উদ্দিনের প্রস্তাবিত দাবি দাওয়া বিষয়ে মির্জা ফকরুল ইসলাম বলেন,ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করে মানুষের ভালোবাসা অর্জন করেন। জনগণের ভোট নিয়ে নির্বাচিত হয়ে কাজ করার পরিবেশ সৃষ্টি করেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি যুগ্ম- আহ্বায়ক মুহাম্মদ আফাজ উদ্দিন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি আহ্বায়ক মোঃ আমিনুল হক।
এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি সদস্য সচিব হাজী মোস্তফা জামান।
উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন।
এ সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক এস এম জাহাঙ্গীর বলেন, ফ্যাসিস হাসিনার সরকারের আমলে দেশের ভাবমূর্তি যে ভাবে নষ্ট হয়েছে আমরা এর পুনরাবৃত্তি চাই না। দেশের কল্যাণে আমরা সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে চাই। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে খুনি হাসিনার অত্যাচারে আমরা কোন ধরনের মিছিল মিটিং করতে পারিনি। হাসিনার প্রেতাত্মাদের যেখানে পাবেন প্রতিহত করতে হবে।
তিনি বলেন,দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে আমরা বিগত জীবনে মানুষের জন্য কাজ করেছি এখনও করবো ইনশাআল্লাহ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা মহানগর উত্তর শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান। আরো উপস্থিত ছিলেন সাবেক যুবদল নেতা শিমুল আহমেদ।
এ সময় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সিনিয়র-যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন বলেন, আমাদের প্রিয় নেতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর ভাংগা সুটকেস ছাড়া আর কিছু পাওয়া যায় নি। তিনি আরো বলেন, বিএনপি ত্যাগের রাজনীতি করে ভোগের নয়।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব
মোস্তফা জামান বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার দিনের ভোট রাতে করার কারণে আল্লাহ তাকে ধ্বংস করেছে, সে সাথে শেখ হাসিনাকে দেশ থেকে তাড়িয়েছে। আমাদের নেতা কর্মীকে যারা মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি নেতা কর্মীদের উদ্দেশ্য বলেন, আপনারা কেউ আইন হাতে নিবেন না। নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপি ক্ষমতায় আসলে জনগণের সেবায় কাজ করবে। অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি
আমিনুল হক বলেন, বিএনপি হচ্ছে একটি মানবিক দল, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান গত ১৭ বছর যাবত আমাদের নেতা কর্মীদেরকে উৎসাহ উদ্দীপনা দিয়ে আন্দোলনে সক্রিয় রেখেছেন। ওনার নির্দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লক্ষে কাজ করতে গিয়ে
ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিরুদ্ধে লড়াই সংগ্রামে বিএনপির নেতা কর্মীরা জীবন উৎসর্গ করেছে।
এ সময় তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিকট আহ্বান করেন অনতিবিলম্বে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা। তিনি বলেন,
তারেক রহমানের নির্দেশে আমরা বাংলাদেশকে নতুন ভাবে ঢেলে সাজাতে চাই।

এ সময় অনুষ্ঠানের সভাপতি মুহাম্মদ আফাজ উদ্দিন বলেন, তারেক রহমানের প্রতিটি নির্দেশ সততার সাথে পালন করতে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি বদ্ধপরিকর। তিনি আর বলেন উত্তরায় রাজক কর্তৃক জমি অধিগ্রহণের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিক দের মধ্যে আট অবলিক নয় শত অ্যাওয়ার্ড মালিককে এখনো ক্ষতিগ্রস্ত প্লট বরাদ্দ দেয়নি। তাদের নামে অতি দ্রুত প্লট বরাদ্দ দেওয়ার জন্য প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানান।
এছাড়াও তিনি উত্তরাতে একটি সরকারী
হাসপাতাল ও সরকারী বিশ্ব বিদ্যালয় স্থাপনের দাবি জানান। আফাজ উদ্দিন আরো বলেন, উত্তরার ১৮টি সেক্টর কল্যাণ সমিতির নামে স্থায়ী জমি বরাদ্দ করা খুবই জরুরি।
অনুষ্ঠান শেষে দরিদ্রদের মাঝে শীতবস্ত্র, শাড়ি ও লুঙ্গি নিজ হাতে বিতরণ করেন মির্জা ফকরুল ইসলাম আলমগীর।