দয়াল কুমার বড়ুয়া
বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব মাঘী পূর্ণিমা আজ (মঙ্গলবার)। দিনটি উপলক্ষ্যে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
বৌদ্ধ ভিক্ষুদের মতে, এই পূর্ণিমা তিথিতে তথাগত বুদ্ধ তাঁর ভিক্ষু সংঘের কাছে নিজের মহাপরিনির্বাণ দিবস ঘোষণা করেন। অর্থাৎ তিনি মাঘী পূর্ণিমা দিবসে ঘোষণা করেছিলেন, ওই দিন থেকে তিন মাস পর শুভ বৈশাখী পূর্ণিমা তিথিতে স্বীয় দেহত্যাগ করবেন। আর সেটাই হয়েছিল। এ কারণে এদিন সব বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী বুদ্ধের কথিত অনিত্য ভাবনা করে, ইহকাল ও পরকালের সুন্দর জীবন প্রতিষ্ঠার জন্য ধ্যান সমাধি করে এবং জীবনকে শীলময়, ভাবনাময় ও বিশুদ্ধিপূর্ণ করার জন্য কঠোর সংকল্পে ব্রতী হয়।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, আজ ১১ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার) সন্ধ্যা ৭টা ২৫ মিনিটে এই তিথি শুরু হবে, আর শেষ হবে ১২ ফেব্রুয়ারি বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ৫২ মিনিটে।
বুদ্ধের শিক্ষায় আমাদের জীবনকে সুন্দর ও ঋদ্ধ করতে পারি। মানুষ হিসেবে আমাদের বাড়তি কিছু সুযোগ-সুবিধা রয়েছে, শুধু আত্মস্বার্থ চরিতার্থ করাই নয়, অর্পিত দায়িত্ব সম্পাদনের প্রতি সবিশেষ মনোযোগ, সৎ ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালনীয়। সর্বজীবের প্রতি মানবিক কর্তব্য পালনের জন্য কারো নির্দেশের অপেক্ষায় থাকাটাও অনেক সময় অমানবিক। আমরা মানুষ হিসেবে মানুষের গরজে মঙ্গলকর কর্তব্য পালন করব এটা মা, মাটি মানুষের ধর্ম, এটা জগৎ ও জীবের প্রকৃতির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ ধর্ম। আমরা স্মরণ করতে পারি, এ বিষয়ে তথাগত বলেছেন, ‘মা’ যেভাবে সব আপদ-বিপদ থেকে নিজের সন্তানকে অপার মৈত্রীবন্ধনে বুকে জড়িয়ে রাখেন, রক্ষা করেন, তোমরাও সেইরূপ মৈত্রীভাবে সব জীবের প্রতি পোষণ করিও। এটি বুদ্ধের শিক্ষার অন্যতম মৈত্রী চর্চা।
লেখক: কলামিস্ট, সভাপতি চবি অ্যালামনাই বসুন্ধরা ও ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব গ্লোবাল স্টাডিজ (এনআইজিএস)