আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আমেরিকার রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মোতায়েনকৃত ন্যাশনাল গার্ড সৈন্যদের টহল বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে হাজার হাজার মানুষ। বিক্ষোভে যোগ দেন স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সমর্থকরাও।
স্থানীয় সময় শনিবার ‘উই আর অল ডিসি’ শিরোনামের এ মিছিলে অংশ নেন অনিবন্ধিত অভিবাসী ও ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সমর্থকেরাও। তারা হাতে ব্যানার নিয়ে স্লোগান দেন— “ট্রাম্পকে এখনই যেতে হবে”, “ডিসিকে মুক্ত করো”, “স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ো”।
বিক্ষোভে অংশ নিয়ে অ্যালেক্স লফার নামে একজন বলেন, “আমরা কর্তৃত্ববাদী শাসনের বিরোধিতা করছি। আমাদের রাস্তায় ফেডারেল পুলিশ ও ন্যাশনাল গার্ডের কোনও জায়গা নেই।”
ট্রাম্প গত মাসে শহরে অপরাধ দমনের কথা বলে সেনা মোতায়েন করেছিলেন। তার দাবি ছিল, ‘আইনশৃঙ্খলা ও জননিরাপত্তা পুনঃপ্রতিষ্ঠা’ করতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তবে বিচার বিভাগের তথ্য বলছে, ২০২৪ সালে ওয়াশিংটন ডিসিতে সহিংস অপরাধ গত ৩০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে। বর্তমানে ছয়টি রিপাবলিকান অঙ্গরাজ্য থেকে আসা দুই হাজারের বেশি সেনা শহরে টহল দিচ্ছে। সেনাদের দায়িত্ব কবে শেষ হবে তা স্পষ্ট নয়, তবে ডিসির ন্যাশনাল গার্ডের কার্যাদেশ আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
এর আগে ওয়াশিংটন ডিসিতে ‘অপরাধ বৃদ্ধির কারণে জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ন্যাশনাল গার্ড সৈন্য মোতায়েনের ঘটনায় ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে গত ৪ সেপ্টেম্বর মামলা করেছে ওয়াশিংটন ডিসি।
মামলায় বলা হয়েছে, এই সন্য মোতায়েন অসাংবিধানিক এবং একাধিক ফেডারেল আইন লঙ্ঘন করেছে। আদালতের কাছে সৈন্য মোতায়েন বন্ধে আদেশ জারির আবেদন জানানো হয়।
ওয়াশিংটন ডিসির অ্যাটর্নি জেনারেল ব্রায়ান শোয়ালব এই পদক্ষেপকে ‘নজিরবিহীন, অপ্রয়োজনীয় এবং অবৈধ’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেছেন, “ওয়াশিংটন ডিসিতে কোনও ‘অপরাধ বৃদ্ধির কারণে জরুরি অবস্থা’ নেই। বাস্তবে ডিসিতে সহিংস অপরাধের হার সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ব্যাপকভাবে কমেছে। ২০২৩ থেকে ২০২৪ সালে ৩৫ শতাংশ কমে গেছে এবং চলতি বছর আরো ২৬ শতাংশ কমেছে।”
শনিবার বিক্ষোভ চলাকালে ট্রাম্প শহরে না থেকে নিজস্ব গলফ মাঠে সময় কাটান। তবে তিনি শিকাগোতেও সেনা পাঠানোর ঘোষণা দেন। ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, ‘আমার সকালে নির্বাসনের গন্ধ ভালো লাগে’— যা ১৯৭৯ সালের যুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্রের একটি সংলাপের ব্যঙ্গাত্মক রূপ। আরেক পোস্টে তিনি লিখেছেন, শিকাগো শিগগিরই বুঝতে পারবে কেন একে ডিপার্টমেন্ট অব ওয়ার বলা হয়।
সূত্র: রয়টার্স