আন্তর্জাতিক ডেস্ক: জেন-জি বিক্ষোভের মুখে এবার নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি পদত্যাগ করেছেন। মঙ্গলবার ( ৯ সেপ্টেম্বর ) বিকালে তার সচিবালয় সূত্রে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়। গত দুই দিন ধরে জেনারেশন জেড (জেন-জি) নেতৃত্বাধীন ব্যাপক গণআন্দোলন দেশজুড়ে তীব্র আকার ধারণ করে। সোমবার ফেডারেল পার্লামেন্ট ভবনের সামনে ও কাঠমান্ডুর বিভিন্ন এলাকায় আন্দোলনকারীদের সাথে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে অন্তত ১৯ জন নিহত ও ৫০০ জনের বেশি আহত হন।
গত কয়েকদিন ধরে রাজধানী কাঠমান্ডুসহ বিভিন্ন শহরে তীব্র বিক্ষোভ চলছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ ও দুর্নীতির প্রতিবাদে এই বিক্ষোভে এ পর্যন্ত অন্তত ১৯ জন নিহত হয়েছেন এবং বহু মানুষ আহত হয়েছেন।
নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি তার পদত্যাগপত্রে লিখেছেন, ‘নেপালের সংবিধানের ৭৬(২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় রাজনৈতিক সমাধানের পথ খোঁজা জরুরি হয়ে পড়েছে। তাই সংবিধানের ৭৭(১)(ক) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আমি প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করছি।’
এদিকে আজ পদত্যাগ ঘোষণার দিনও উত্তাল ছিল নেপাল। কারফিউ উপেক্ষা করে হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এবং পার্লামেন্ট ভবনে আগুন ধরিয়ে দেয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কর্তৃপক্ষ দেশজুড়ে বিমান চলাচল স্থগিত করে। সেনাবাহিনী হেলিকপ্টার ব্যবহার করে মন্ত্রীদের নিরাপদে সরিয়ে নেয়।
বিক্ষোভের সূত্রপাত হয় ৪ সেপ্টেম্বর। সে দিন সরকার ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম ও ইউটিউবসহ ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম বন্ধ করে দেয়।
শুরুতে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ দ্রুত সহিংসতায় রূপ নেয়। তরুণ প্রজন্ম আন্দোলনের নাম দিয়েছে— ‘জেন-জি রেভল্যুশন’।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হওয়ায় কয়েকজন মন্ত্রী আগেই পদত্যাগ করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত জনরোষের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়তে বাধ্য হলেন কে পি শর্মা অলি।