আন্তর্জাতিক ডেস্ক,সিটিজেন নিউজ:ঘড়িতে সময় যত এগিয়ে যাচ্ছে বাতাসের গতিবেগও ক্রমশ বাড়ছে। সমুদ্রের পানি আরও ফুলে ফেঁপে উঠছে। ‘অতি শক্তিশালী প্রবল ঘূর্ণিঝড়’ ফণী আছড়ে পড়ার জন্য দ্রুত গতিতে এগিয়ে আসছে ভারতের ওড়িশা উপকূলের দিকে।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ওড়িশা উপকূল থেকে ঘূর্ণিঝড়টি মাত্র ৪০০ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থান করছে। শক্তি বাড়িয়ে ঘণ্টায় পাঁচ কিলোমিটার করে এড়িয়ে যাচ্ছে এই অতি শক্তিশালী প্রবল ঘূর্ণিঝড়।
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ওড়িশার ১৯ জেলায় ফণীর প্রভাব পড়তে পারে। পশ্চিমবঙ্গ এবং অন্ধ্রপ্রদেশের তিন জেলায়ও ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে পারে। ১ মে থেকে ৫ মে মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করেছে আবহাওয়া দফতর।
ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে ইতোমধ্যে আজকের মধ্যে সব পর্যটককে হোটেল ছেড়ে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে ওড়িশা সরকার। বাঙালি পর্যটকদের জন্য পুরী-কলকাতা বিশেষ বাসের ব্যবস্থা করেছে কর্তৃপক্ষ। ১০৩টি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে।
পুরী, কেন্দ্রাপড়া, বালেশ্বর, ময়ূরভঞ্জ, গজপতি, কটক, জাজপুরের আট লাখেরও বেশি মানুষকে ওড়িশা উপকূলবর্তী অঞ্চল থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ৮৭৯-য়েরও বেশি সাইক্লোন সেন্টার তৈরি করা হয়েছে। উপকূলবর্তী অঞ্চলের মানুষদের এই সাইক্লোন সেন্টারেই আপাতত রাখা হয়েছে। নৌবাহিনী, উপকূলরক্ষা বাহিনী এবং বির্পযয় মোকাবিলা বাহিনীর ৭৮টি দল ইতিমধ্যে উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলোতে পাঠানো হয়েছে।
গত বছর তিতলি ঝড়ের মুখে পড়েছিল ওড়িশা। তিন লাখ মানুষকে ওড়িশা উপকূলবর্তী অঞ্চল থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। তিতলির গতিবেগ ছিল ১৫০ কিলোমিটার। সঙ্গে ছিল প্রচুর বৃষ্টিপাত। কিন্তু স্থলভূমিতে ফণী আছড়ে পড়ার সময় ঘণ্টায় সর্বাধিক ২শ কিলোমিটার বেগে ঝড় বইতে পারে।
শুক্রবার ওড়িশা উপকূলে ঘণ্টায় প্রায় ২০৫ কিলোমিটার গতিতে আছড়ে পড়বে ঘূর্ণিঝড় ফণী। এরপর ফণীর অভিমুখ হবে পশ্চিমবঙ্গের দিকে। শক্তিশালী এই ঘূর্ণিঝড়টি ওড়িশায় আছড়ে পড়ার পর এর গতিবেগ কিছুটা কমে যাবে। তবে শক্তি কমলেও এটি ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১১৫ কিলোমিটার বেগে পশ্চিমবঙ্গে আঘাত হানতে পারে।
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, উপকূলবর্তী জেলাগুলোতে আগামী ৩ এবং ৪ মে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সঙ্গে থাকবে ঝড়ে হাওয়া। ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার বেগে ঝড় শুরু হতে পারে ২ তারিখ থেকেই। ৪ তারিখে সেটা ১০০ থেকে ১১৫ কিলোমিটার গতিবেগ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।