বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪০ অপরাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান

স্তন ক্যান্সার হয়েছে কি না, অন্ধরা পথ দেখাচ্ছেন

  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ১১ অক্টোবর, ২০১৯
  • ২৫৬ বার পঠিত

অনলাইন ডেস্ক: সারা বিশ্বে স্তন ক্যান্সারে নারীদের মৃত্যুর হার বাড়ছে। সাধারণত ৫০ বছরের ওপরে যাদের বয়স তাদের মধ্যে এই ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। স্তন ক্যান্সার থেকে জীবন রক্ষার একটি উপায় হলো, যতো দ্রুত সম্ভব এটিকে শনাক্ত করা। আর কলম্ববিয়াতে এই কাজে লাগানো হয়েছে অন্ধ ব্যক্তিদের।

কোনো নারীর স্তন ক্যান্সার হয়েছে কি-না, কলম্বিয়াতে সেটা অন্ধ ও দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা পরীক্ষা করে দেখছেন। এই প্রকল্পটির নাম দেয়া হয়েছে ‘যে হাত জীবন বাঁচাতে পারে’।

গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অন্ধ ব্যক্তির হাতের স্পর্শ অত্যন্ত সংবেদনশীল হওয়ায় স্তন ক্যান্সার শনাক্ত করার কাজে তাদেরকে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।

লিইডি গার্সিয়া একজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। স্তন ক্যান্সারের উপসর্গ শনাক্ত করার কাজে তাকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। তিনি বলছেন, ‘আমার কাছে হাতই হলো চোখ। হাত দুটো দিয়েই আমি সারা বিশ্বকে অনুভব করতে পারি। বর্তমানে আমি যা কিছু করছি, এই হাত দুটো ছাড়া সেসব করা অসম্ভব ছিল।’

গার্সিয়া বলেন, ‘আমার আঙুল ও আঙুলের মাথা দিয়ে স্পর্শের যে অনুভূতি, সেটা দিয়ে আমি অন্য নারীদের সাহায্য করতে পারছি। স্তনের টিস্যুতে কোনা ধরনের পরিবর্তন বা অস্বাভাবিক কিছু থাকলে সেটা আমি আমার স্পর্শ দিয়ে চিহ্নিত করতে পারি। বুঝতে পারি স্তনে অস্বাভাবিক কোনো লাম্প বা মাংসপিণ্ড আছে কিনা।’

অন্ধদের দিয়ে স্তন পরীক্ষার এই উপায়টি উদ্ভাবন করেছেন জার্মান গাইনোকোলজিস্ট ড. ফ্রাঙ্ক হোফম্যান। তাদের স্পর্শ অত্যন্ত সংবেদনশীল হওয়ায় স্তন ক্যান্সার শনাক্ত করার ব্যাপারে তাদেরকে প্রশিক্ষণ দিয়ে এই কাজে লাগানো হয়েছে।

ড. হোফম্যান জানান, ‘স্তন পরীক্ষা করতে গিয়ে আমরা নতুন একটি পদ্ধতি ব্যবহার করছি। এটি জার্মানিতে উদ্ভাবন করা হয়েছে। এই পদ্ধতিতে স্তনের পুরো এলাকায় আঠাযুক্ত টেপ লাগিয়ে প্রত্যেক ইঞ্চি পরীক্ষা করে দেখা হয়। এর মাধ্যমে স্তনের সামান্য কোনো অংশ যাতে পরীক্ষা থেকে বাদ পড়ে না যায়, সেটা নিশ্চিত করা হয়। যদি অস্বাভাবিক কিছু পাওয়া যায় তাহলে তাকে ডাক্তারের কাছে পাঠানো হয়। এর পর তাকে কী ধরনের চিকিৎসা দেয়া হবে, ওই চিকিৎসকই তা ঠিক করেন।’

সারা বিশ্বেই নারীরা স্তন ক্যান্সারে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। এতে মৃত্যুর সংখ্যাও কম নয়। তাই এটিকে যতো আগে সম্ভব শনাক্ত করা জরুরি।

ডা. লুইস আলবার্তো ওলাভ বলছেন, ‘একজন প্রশিক্ষিত চিকিৎসক স্তনের লাম্প এক সেন্টিমিটারের চেয়ে বড় হলে সেটা ধরতে পারেন। কিন্তু আমরা দেখেছি যে একজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তি এর চেয়ে ছোট আকারের মাংসের দলাও শনাক্ত করতে পারেন। এরকম ক্ষুদ্রাকৃতির লাম্প ধরতে পারাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এতেই বেশি সময় লেগে যায়।’

আরেকজন পরীক্ষক বলছেন, ‘এই কাজে নারীদের অংশগ্রহণও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত, নারীরাও চান আরেকজন নারী তার স্তন পরীক্ষা করুক। এটাও জরুরি। কারণ তারা ওই নারীর শরীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ও খোলামেলাভাবে পরীক্ষা করে দেখতে পারেন। এতে তারা অনেক বেশি স্বস্তি বোধ করেন এবং কোনো ধরনের দ্বিধা ছাড়াই পরীক্ষকের কাছে সবকিছু তুলে ধরতে পারেন।’

নিজেদের হাতের সংবেদনশীলতা জীবন রক্ষাকারী এ রকম একটি কাজে ব্যবহার করতে পারায় এই নারী পরীক্ষকরা বেশ খুশি। খুবই মূল্যবান একটা কাজ করছেন বলে মনে করছেন তারা। এছাড়া যেসব নারী অন্ধ ও দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের কাছে স্তন পরীক্ষা করাতে আসছেন, এই উদ্যোগে এখন আগের চাইতে ভালো ফল পাচ্ছেন তারা।

সূত্র : বিবিসি বাংলা

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com