নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহ-সভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুরসহ ৩ জন মোটামুটি সুস্থ আছেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে তাদের ছাড়পত্র দেয়ার কথা ছিল। সকালে এমনটিই জানিয়েছিলেন ঢামেক পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. এ কে এম নাসির উদ্দিন। তবে সন্ধ্যা পর্যন্ত হাসপাতাল ছাড়েননি তারা।
ঢামেক সূত্র জানায়, আহত ভিপি নুর, ফারুক খান ও নাজমুলকে ছাড়পত্র দেয়ার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছিল। তবে তাদের কেউই আপাতত হাসপাতাল ছাড়তে চাননি।
সূত্র আরও জানায়, নুর মোটামুটি সুস্থ। তবে সকালে চিকিৎসকদের কাছে কনুইয়ে ব্যথা অনুভব করার কথা বলেন তিনি। পরে তার ডান হাতের এক্স-রে করা হয়। এক্স-রেতে তেমন কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। তবে তারা চিকিৎসকদের কাছে আরও ২-১ দিন হাসপাতালে থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে ঢামেক পরিচালক এ কে এম নাসির উদ্দিন জানান, বোর্ডের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ৩ জনকে আপাতত ছাড়পত্র দেয়া হচ্ছে না। তাদের বিষয়ে আগামী শনিবার চিকিৎসকদের বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এর আগে সকালে ডাকসু কার্যালয়ের হামলায় আহতদের শারীরিক অবস্থা নিয়ে ব্রিফ করেন ঢামেক পরিচালক। তিনি বলেন, ‘মিস্টার নুর ভালো আছেন। আজ হঠাৎ তিনি বললেন যে তার কনুইয়ে ব্যথা। আমরা তার এক্স-রে করেছি। রিপোর্ট ভালো আসলে আমরা তাকে আজই হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেব। এ ছাড়া আরও ২-৩ জনকে আজ ছেড়ে দেয়া হবে।’
এদিকে ভিপি নুরসহ কোটা আন্দোলনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলার পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢামেকে আসেন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘ঢামেক পরিচালক বোর্ডের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা না বলেই ৩ জনকে রিলিজ দেয়ার কথা বলেছেন। আমরা এই সংবাদ শুনে ঢামেকে এসে পরিচালকের সঙ্গে দেখা করি। পরবর্তীতে পরিচালক সরেজমিনে তাদের শারীরিক অবস্থা দেখেন।’
বৃহস্পতিবার তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার বিষয়ে রাশেদ বলেন, ‘আমাদের ওপর যে নির্যাতন করা হয়েছে তা সবাই দেখেছে। সেই হামলায় এখনও হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে ৮ জন। অথচ আমাদের ওপর মামলা দিয়েছে। এটি একটি মিথ্যা মামলা, ষড়যন্ত্রমূলক মামলা। এটি ছাত্রলীগের ষড়যন্ত্রমূলক মামলা। আমাদের দমন করার জন্য এবং আমাদের মামলাকে দুর্বল করার জন্যই এই মামলা করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পক্ষে পুলিশ একটি মামলা করেছিল। এরপর আমরা একটি অভিযোগ দিয়েছিলাম থানায়। গতকালও অভিযোগটি মামলা হিসেবে নেয়ার জন্য পুলিশকে অনুরোধ করেছি। কিন্তু তারা এখনও সেটি গ্রহণ করেনি।’
গত ২২ ডিসেম্বর দুপুরে ডাকসু সহ-সভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুর ও তার সহযোগীদের ওপর হামলা চালায় মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের একাংশের নেতাকর্মীরা। হামলায় অন্তত ৩৪ জন আহত হন।