খুলনা প্রতিনিধি: খুলনা সদর থানাধীন রেল স্টেশন এলাকায় অভিযান চালিয়ে জঙ্গি সংগঠন ‘আল্লাহর দলের’ দুই সক্রিয় সদস্যকে আটক করেছে র্যাব-৬। শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে তাদের আটক করা হয়। এ নিয়ে গত আট মাসে দশ জনকে আটক করা হয়েছে। র্যাব-৬ এর পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ নুরুস সালেহীন ইউসুফ এ কথা জানান।
আটক দুজন হলো, যশোরের ঝিকরগাছার সন্তোষনগরের আলতব হোসেনের ছেলে মো. ফসিয়ার রহমান (৫২) ও চান্দালী মোড়লের ছেলে মো. জাহাঙ্গীর আলম মোড়ল (৪৭)।
র্যাবের পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ নুরুস সালেহীন ইউসুফ জানান, ‘র্যাব-৬ এর হাতে আটক দুজনের কাছ থেকে ২টি মোবাইল ফোন, ২টি সিম কার্ড ও নগদ ১, ৮৫০/ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা দীর্ঘদিন ধরে এই সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তারা দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে সদস্য সংগ্রহ করে। এছাড়াও বিভিন্ন উৎস থেকে অর্থ সংগ্রহ এবং কর্মীদের বায়াত গ্রহণ করানোর মাধ্যমে সংগঠনের শক্তি বৃদ্ধি করে। তারা এই সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে দলীয় মিটিং, উগ্রবাদী বই বিতরণ, অর্থ প্রদান ও আদায়সহ সংগঠনের বিভিন্ন কাজ করে আসছিল। তারা স্বতঃস্ফুর্তভাবেই এসব কাজ করছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে যশোর জেলার ঝিকরগাছা থানাসহ নায়েক মো. ফসিয়ার রহমান (৫২) জানান, সে ২০১৫ সালের ৭ মার্চ মুকুল নামে নিজ গ্রামের একজনের (সে গত ২৯ ডিসেম্বর র্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়েছে) দাওয়াতে মতিন মেহেদীর নেতৃত্বাধীন এ সংগঠনে যোগ দেয়। পরে মো. সিরাজুল ইসলাম ওরফে সেহেরুলের কাছে বায়াত গ্রহণ করে সংগঠনের সদস্য হয়। সদস্য হওয়ার ৬ মাস পর তাকে থানার সহ-নায়েক পদ দেওয়া হয়। পরে মুকুলের মাধ্যমে সে যশোরের রিপন ও ইয়াছিনসহ সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে পরিচিত হয়। সে আরও ২৫/৩০ জনকে এ সংগঠনের সদস্য বানিয়েছে। সে ডাক্তারি পেশার পাশাপাশি সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল।
অন্যদিকে মো. জাহাঙ্গীর আলম (৪৭) জানায়, সে গত ১৩/১১/২০০৫ সালে চাঁন্দা গ্রামের সেলিমে এক ব্যক্তির মাধ্যমে মতিন মেহেদীর কাছে বায়াত গ্রহণ করে এ সংগঠনের সদস্য হয়। সদস্য হওয়া তিন বৎসর পর তাকে গ্রামের নায়েক পদে দেওয়া হয়। সে কাঠ ব্যবসার পাশাপাশি বিভিন্ন জনকে দাওয়াত দেয়। সে বেশ কয়েক জনকে এ সংগঠনের সদস্যও বানিয়েছে। এছাড়াও সে বিভিন্ন সময় সংগঠনের জন্য চাঁদা তুলে সন্তোষনগরের মুকুলের কাছে দিয়ে আসতো।
উল্লেখ্য, র্যাব-৬ এর সদস্যরা গত ৩ মে খুলনা সদর থানাধীন পূর্ব বানিয়া খামার এলাকা থেকে ‘আল্লাহর দল’ এর ৩ সদস্যকে এবং ৩০ ডিসেম্বর মহানগরীর লবণচরার খোলাবাড়িয়া এলাকা থেকে ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারের পর তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সংগঠনের অন্য সদস্যদের গ্রেফতারে র্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রয়েছে।