অনলাইন ডেস্ক,সিটিজেন নিউজ: অনেক মায়েদের প্রশ্ন থাকে যে গর্ভবতী অবস্থায় রোজা রাখা যাবে কিনা কিংবা রাখলে করণীয় কী হবে। প্রকৃতপক্ষে গর্ভবতী মায়েরা রোজা রাখতে পারবেন কিনা তা নির্ভর করবে তার এবং তার গর্ভস্থ সন্তানের সুস্থতার উপরে। ইসলামে সিয়াম সাধনার ক্ষেত্রে কিছু শিথিলতা রয়েছে, যেমন ভ্রমণকারী, অসুস্থ ব্যক্তি, গর্ভবতী মা, সন্তানকে দুগ্ধ পান করা অবস্থা ইত্যাদি। হাদীসে বর্ণিত রয়েছে-“যদি কোন গর্ভবতী মায়ের গর্ভবতী অবস্থায় রোজা রাখা গর্ভস্থ সন্তানের ক্ষতি হবার আশঙ্কা তৈরি করে, তবে সে রোজা থেকে বিরত থাকতে পারবে এবং পরবর্তীতে তার সুবিধাজনক সময়ে সে ওই রোজাগুলো কাজা আদায় করে নেবেন।” এখন যদি কোন মা মনে করেন তিনি রোজা রাখবেন, তবে তাকে প্রথমে একজন গাইনি বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হতে হবে। জেনে নিতে হবে গর্ভবতী অবস্থায় রোজা রাখা তার এবং গর্ভস্থ সন্তানের কোন ক্ষতির আশঙ্কা সৃষ্টি করছে কিনা।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে ৪-৭ মাস প্রেগনেন্সি পিরিয়ড রোজা রাখার জন্য বেশি নিরাপদ, কারণ প্রথম ৩ মাসে পর্যাপ্ত পুষ্টির অভাব হলে কম ওজনের শিশুর জন্ম হতে পারে এবং প্রেগনেন্সির শেষের দিকে পানি এবং খাদ্যের চাহিদা বেড়ে যায়। এছাড়া প্রেগনেন্সি পিরিয়ডে যদি অন্যান্য সমস্যা থেকে থাকে, যেমন ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন/উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি ডিজিজ, ঘন ঘন প্রস্রাবের ইনফেকশন ইত্যাদি থাকলে রোজা থেকে বিরত থাকাই উত্তম।
গর্ভবতী অবস্থায় রোজা রাখা ও করণীয়
১) সেহরি এবং ইফতারে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানীয় ও পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। বিভিন্ন ধরনের তাজা ফলের রস, ডাবের পানি শরীরে পানির চাহিদা দূর করবে।
২) ফলের মধ্যে খেজুর এবং কলায় প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম থাকে, যা দুর্বলতা দূর করতে সাহায্য করে।
গর্ভবতী অবস্থায় রোজা রাখলে খাবার কলা ও খেজুর – shajgoj.com
৩) প্রয়োজনীয় ওষুধগুলো সেহরি এবং ইফতারের সময় খেতে হবে।
৪) বেশিক্ষণ রোদে ঘোরাঘুরি করা উচিত হবে না।
৫) দুশ্চিন্তামুক্ত থাকতে হবে।
রোজাদার মায়েদের যে সমস্যাগুলো দেখা
দিলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে
১. বমি হলে।
২. অজ্ঞান হয়ে গেলে।
৩. বাচ্চার নড়াচড়া কম অনুভূত হলে, সাধারণত বলা হয় গর্ভের বাচ্চা ১২ ঘন্টায় ১০-১২ বার মুভমেন্ট করবে। এর থেকে কমে গেলে অবশ্যই ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।
রোজাদার মায়েদের সমস্যাগুলো একটি লেবার পেইন – shajgoj.com
৪. লেবার পেইন বা পেটে ব্যথা অনুভূত হলে, কারণ ডিহাইড্রেশন-এর কারণে অনেক সময় ইউটেরাস-এর কনস্ট্রাকশন শুরু হতে পারে।
৫. প্রস্রাবের পরিমাণ অস্বাভাবিকভাবে কমে গেলে ইত্যাদি।
এই ছিল গর্ভবতী অবস্থায় রোজা রাখা ও করনীয় সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্যাদি। সবাই সুস্থ থাকুন।