শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৩৫ পূর্বাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান

আরও ১০ অর্থনৈতিক অঞ্চল পেল প্রাথমিক লাইসেন্স

  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ২১ আগস্ট, ২০২০
  • ২৫৪ বার পঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক: চীন থেকে প্রত্যাহার হওয়া বিনিয়োগের পাশাপাশি অন্য দেশ থেকে বিনিয়োগ আনার বিষয়ে কী করণীয়, তা নিয়ে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) সপ্তম গভর্নিং বোর্ডের সভায় বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। বিদেশি বিনিয়োগ টানতে বিশ্বের অন্যান্য দেশ কী কী প্রণোদনা ঘোষণা করেছে, বাংলাদেশ কী করতে পারে—এসব দিক বিচার-বিশ্লেষণ করতে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমেদ কায়কাউসকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই সভায় গভর্নিং বোর্ডের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় কমিটি গঠন ছাড়াও আরো কয়েকটি সিদ্ধান্ত হয়েছে। চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ইস্ট-ওয়েস্টসহ কয়েকটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল।

জানা গেছে, দেশের সরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে বিনিয়োগকারীদের জমি ইজারা দেওয়ার পর সরকার নতুন একটি এসআরও জারি করে বলছে, জমির ইজারা মূল্যের ওপর এখন থেকে ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট দিতে হবে ব্যবসায়ীদের। গতকালের গভর্নিং বোর্ডের সভায় সংসদ সদস্য সেলিমা আহমাদ ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি জানান। সভায় তিনি বলেন, এমনতিই দেশে বিনিয়োগ স্থবির হয়ে আছে। করোনা মহামারির কারণে বিনিয়োগ পরিস্থিতি আরো খারাপ। নতুন করে জমির ইজারা মূল্যের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট বসানো হলে ব্যবসায়ীদের খরচ বেড়ে যাবে। করোনার এই সময়ে ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি। এই ভ্যাট বসানোর যৌক্তিকতা এবং তা প্রত্যাহার করা যায় কি না এই বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমেদ কায়কাউসকে প্রধান করে গঠিত কমিটিতে আলোচনার সিদ্ধান্ত হয় বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে।

বৈঠক সূত্রে আরো জানা গেছে, করোনা মহামারি-পরবর্তী সময়ে বিনিয়োগকারীদের জন্য কী ধরনের প্রণোদনা দেওয়া যায়, তা নিয়ে বেজা থেকে একটি প্রণোদনা প্যাকেজের প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে। সেখানে দেখানো হয়েছে, বাংলাদেশে করপোরেট করের হার বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় বেশি। যেমন—ভারতে করোনার সময়ে করপোরেট করের হার ২২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৭ শতাংশ করা হয়েছে। চীনে এখন করপোরেট করের হার ২৫ শতাংশ। এ ছাড়া ভিয়েতনামে ২০ শতাংশ, থাইল্যান্ডে ২০, যুক্তরাজ্যে ১৯, সিঙ্গাপুরে ১৭, যুক্তরাষ্ট্রে ২১, জাপানে ২৩, মালয়েশিয়ায় ২৪ এবং দক্ষিণ কোরিয়ায় ২৫ শতাংশ। অথচ বাংলাদেশে করপোরেট করের হার ৩০ শতাংশ থেকে শুরু করে ৩৫ শতাংশ। করোনা-পরবর্তী সময়ে করপোরেট করের হার কমিয়ে আনা যায় কি না, কমালে কী হতে পারে, বাংলাদেশ কিভাবে লাভবান হবে—এসব বিষয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করে দ্রুত একটি প্রতিবেদন প্রধানমন্ত্রীর কাছে জমা দিতে বলা হয়েছে নবগঠিত কমিটিকে। অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ আনতে হলে করপোরেট করের হার কমানোর বিকল্প নেই বলে মনে করে বেজা।

বেজা থেকে জানানো হয়, বাংলাদেশের বর্তমান আমদানিনীতিতে পুরনো শিল্প-কারখানা স্থানান্তর করার সুযোগ নেই। করোনার এই সময়ে বিদ্যমান আমদানিনীতি সংশোধন করে পুরনো শিল্প-কারখানা স্থানান্তরের সুযোগ তৈরি করে দিতে হবে। সভায় বেজা থেকে আরো বলা হয়, অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিদেশি বিনিয়োগ টানতে হলে পুরো ১০ বছরই কর অবকাশ সুবিধা রাখতে হবে, যেটি এখন নেই।

সভায় মহেশখালী বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নাম পরিবর্তন করে ‘সোনাদিয়া ইকো-ট্যুরিজম পার্ক’ নামকরণের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চল, কিশোরগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চল, কর্ণফুলী ড্রাইডক বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, ইস্ট-ওয়েস্ট বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হোসেন্দী অর্থনৈতিক অঞ্চলকে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া আরো ১০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রাথমিক লাইসেন্স দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেগুলো হলো ঢাকার পাশে নবাবগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চল, টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর অর্থনৈতিক অঞ্চল, নওগাঁর সাপাহার অর্থনৈতিক অঞ্চল, দিনাজপুর অর্থনৈতিক অঞ্চল, নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চল, চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ অর্থনৈতিক অঞ্চল, সুনামগঞ্জের ছাতক অর্থনৈতিক অঞ্চল, পাবনার বেড়া অর্থনৈতিক অঞ্চল, বরিশালের চরমেঘা অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং মানিকগঞ্জের শিবালয় অর্থনৈতিক অঞ্চল।

অর্থনৈতিক অঞ্চলে দেশি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মতো বিদেশি শিল্পপ্রতিষ্ঠানও কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াকরণ ও রপ্তানিতে সমান নগদ সুবিধা পাবে বলে সভায় সিদ্ধান্ত হয়। আগে শুধু দেশীয় কম্পানি এই সুবিধা পেত।

সভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরকে মেরিন ড্রাইভের সঙ্গে সংযুক্ত করতে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com