নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনা পজেটিভ হওয়ার পরও গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করা ডাক বিভাগের মহাপরিচালক সুধাংশু শেখর (এস এস) ভদ্রকে চাকরি থেকে বরখাস্ত এবং এ বিষয়ে কমিটি গঠন করে তদন্তের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্টদের প্রতি আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী।
নোটিশ পাওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বিবাদীদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে কোনো পদক্ষেপ না নিলে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে বলেও নোটিশে বলা হয়।
শনিবার (২২ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব, জনপ্রশাসন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালক এবং আইইডিসিআরের পরিচালককে ই-মেইলে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব এবং ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাউছার এ নোটিশ পাঠান। নোটিশের বিষয়টি গন্যমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির পল্লব।
এর আগে গত ১৪ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর ৪৫তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ স্মারক ডাকটিকিট, ডাটা কার্ড উন্মোচনের উদ্বোধনী কাজে গণভবনে যান সুধাংশু শেখর ভদ্র। সেখানে তিনি প্রধানমন্ত্রীর অনেক কাছাকাছি অবস্থান করেন। কিন্তু সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন ২০১৮ এর ২৬ ধারা অনুযায়ী তার কর্মকাণ্ড একটি অপরাধ এবং উক্ত আইন অনুযায়ী তিনি তার তথ্য গোপন করেছেন যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী ১১ আগস্ট আইইডিসিআর করোনা পরীক্ষার জন্য এস এস ভদ্রের নমুনা সংগ্রহ এবং ১৩ আগস্ট সন্ধ্যায় উক্ত রিপোর্ট তাকে দেয়া হয়। রিপোর্ট অনুযায়ী তিনি করোনা পজিটিভ ছিলেন। কিন্তু উক্ত রিপোর্টের তথ্য গোপন করে তিনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রবেশ এবং প্রধানমন্ত্রীর খুব কাছাকাছি দাঁড়িয়েছেন যাহা বেআইনিই শুধু নয় প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্যের জন্য চরম ঝুঁকি বহন করে। যেহেতু আগস্ট একটি শোকের মাস। এ মাসে দেশের ইতিহাসে বিভিন্ন বর্বরতম হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।
বাংলাদেশকে নেতৃত্ব শূন্য করার জন্য বারবার স্বাধীনতাবিরোধী চক্র আগস্টকে বেছে নিয়ে থাকেন। এমন পরিস্থিতিতে একজন করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রীর কাছাকাছি যাওয়ার উদ্দেশ্য সম্পর্কে দেশবাসীর মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। কেন এবং কোন উদ্দেশ্যে তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলেন সে বিষয়টি পরিষ্কার হওয়া জাতীয় স্বার্থেই প্রয়োজন।
একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ব্যবস্থা কতটা কার্যকরী সেটা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এ কারণেই বিষয়টি তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। এসব বিষয় উল্লেখ করে কমিটি গঠনের মাধ্যমে তদন্ত এবং এস এস ভদ্রকে ২০১৮ সালের আইন অনুযায়ী বিচারের আওতায় এনে যথাযথ শাস্তি নিশ্চিতের অনুরোধ করা হয়েছে।
তদন্ত চলাকালীন সময়ে তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্তের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার বিষয়ে কোন কোন জায়গায় ঘাটতি রয়েছে সেগুলো চিহ্নিত করে সংস্কারের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।