আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেপ্তারের সময় কৃষ্ণাঙ্গ ড্যানিয়েল প্রুডকে সংযত রাখতে স্পিট হুড পরানোর পর তার মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় বিক্ষোভে উত্তাল নিউইয়র্কের একটি পুলিশ শাখার প্রধান পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। এ খবর দিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সিটি কাউন্সিলের বৈঠকে মঙ্গলবার (৮ সেপ্টেম্বর) রচেস্টারের মেয়র লাভলি ওয়ারেন তার শহরের পুলিশ প্রধান ও উপ প্রধানের পদত্যাগের কথা জানান। গত মার্চে প্রুডের মৃত্যুতে অভিযোগ গ্রহণ করা হবে কি না তা নির্ধারণে সহায়তা করবে একটি গ্র্যান্ড জুরি। ওই গ্রেপ্তারের ঘটনায় সাত পুলিশ কর্মকর্তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
রচেস্টার পুলিশের প্রধান লা’রোন সিঙ্গলেটারি মঙ্গলবার তার বিবৃতিতে জানান, ‘একজন নিষ্ঠাবান ব্যক্তি হিসেবে আমি এভাবে বসে থাকতে পারি না, যখন বাইরে আমার চরিত্র নিয়ে কলঙ্ক লেপন করা হচ্ছে। প্রুডের মৃত্যুর পর আমি যেসব পদক্ষেপ নিয়েছি তা ভিন্নভাবে তুলে ধরা হচ্ছে এবং রাজনীতিকরণ করা হচ্ছে।’
প্রুডের মৃত্যুর পর তা জনসাধারণের দৃষ্টির বাইরে রাখতে চেষ্টা করেছিলেন, এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন রচেস্টারের পুলিশ প্রধান। এদিকে উপ প্রধান জোসেফ মোরাবিতো বলেছেন, ৩৪ বছর ধরে পুলিশ বাহিনীতে কাজ করার পর তিনি অবসর নিতে যাচ্ছেন।
মেয়র ওয়ারেন বার্তা সংস্থা এপিকে জানান, আরও কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কমান্ডাররা অবসর নিতে পারে। এর আগে প্রুডের মৃত্যুর জন্য পদ্ধতিগত বর্ণবাদকে দায়ী করেছিলেন তিনি। তবে সিঙ্গলেটারির পদত্যাগে তার কোনও হাত নেই বলে জানিয়েছেন। তবে সেপ্টেম্বরের শেষ দিন পর্যন্ত সিঙ্গলেটারিকে পুলিশ বিভাগের দায়িত্বে থাকতে বলেছেন ওয়ারেন।
গত মার্চে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার সময় ৪১ বছর বয়সী প্রুড মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন বলে জানা গেছে। রাস্তায় তাকে নগ্ন হয়ে দৌড়াতে দেখেন কর্মকর্তারা। প্রুড ওইসময় জানান, তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। এরপর তার মুখের লালা থেকে নিজেদের বাঁচাতে ‘স্পিট হুড’ দিয়ে তার মাথা ও মুখ ঢেলে ফেলে পুলিশ। কিছুক্ষণ পর তার নড়াচড়া বন্ধ হয়ে গেলে অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে পাঠানো হয় তাকে। এক সপ্তাহ পর ৩০ মার্চ তার লাইফ সাপোর্ট খুলে দেওয়ার অনুমতি দেয় পরিবারের সদস্যরা।
মিনেসোটায় পুলিশের নিপীড়নে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুতে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বর্ণবাদবিরোধী বিক্ষোভের তিন মাস পর প্রুডের মারা যাওয়ার খবর প্রকাশ্যে আসে। প্রুডের মৃত্যুর কয়েক মাস পর তথ্য অধিকার বলে পুলিশের কাছ থেকে বডিক্যামেরায় তাকে গ্রেপ্তারের মুহূর্তের ভিডিও হাতে পায় পরিবার। ২ সেপ্টেম্বর তা প্রকাশ করলে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে রচেস্টার।