দেশের ব্যাংক খাতে জমা অর্থের পরিমাণ প্রতিমাসে বেড়েই চলেছে। চলতি বছরের সেপ্টম্বের মাসে ব্যাংকগুলোতে ডিপোজিট বা অর্থ জমার পরিমাণ চিল ১২ লাখ ৩৭ হাজার ৬ কোটি টাকা। সেখানে পরের মাস অক্টোবরে ১৪ হাজার ৬৬৫ কোটি টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ লাখ ৫১ হাজার ৬৭১ কোটি টাকা। একই সময়ে ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে জমানো অর্থের পরিমাণ ছিল ১১ লাখ ৬ হাজার ৯৮৩ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সিআরআর ও এসএলআর বাবদ বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ব্যাংকগুলোর আছে প্রায় তিন লাখ ৭১ হাজার ৯৯০ কোটি টাকা। কিন্তু এ সময় পর্যন্ত রাখার প্রয়োজন ছিল দুই লাখ দুই হাজার ৩৩৯ কোটি টাকা। এর মানে অতিরিক্ত তারল্য আছে প্রায় এক লাখ ৬৯ হাজার ৬৫০ কোটি টাকা। এর মধ্যে একেবারে অলস অর্থের পরিমাণ রয়েছে ২৩ হাজার ৮৪৭ কোটি ৬২ লাখ টাকা।
করোনা প্রাদুর্ভাব শুরুর আগের মাস ফেব্রুয়ারিতে ব্যাংকিং খাতে অতিরিক্ত তারল্যের পরিমাণ ছিল এক লাখ তিন হাজার ৯৩৪ কোটি টাকা। ফলে করোনাকালের গত সাত মাসে ব্যাংকিং খাতে অতিরিক্ত তারল্য বেড়েছে ৬৫ হাজার ৭১৬ কোটি টাকা। ওই সময়ে ব্যাংকে অলস টাকার পরিমাণ ছিল মাত্র ছয় হাজার ৩৯৯ কোটি টাকা। এ হিসাবে গত সাত মাসে অলস টাকা তিন গুণেরও বেশি বেড়েছে।
এদিকে করোনাকালে বেসরকারি খাতে ঋণ যেটুকু বাড়ছে, তা মূলত প্রণোদনা নির্ভর। এর বাইরে নতুন ঋণ দেওয়ার ব্যাপারে এখন অনেক বেশি সতর্ক ব্যাংকগুলোও। একদিকে নতুন ঋণের চাহিদা কম, অন্যদিকে আমানতসহ তহবিল আসার উৎসগুলো স্বাভাবিক থাকায় ব্যাংকগুলোতে জমেছে অতিরিক্ত তারল্যের পাহাড়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মনিটরি পলিসি বিভাগের তথ্য মতে, ২০১৯ সালে সব খাত মিলিয়ে মোট ঋণ প্রদানের পরিমাণ ছিল ১১ লাখ ৯৯ হাজার ৪৬৩ কোটি ১০ লাখ টাকা।
তারই ধারাবাহিকতায় সেপ্টেম্বর মাসের তুলনায় অক্টোবর মাসে শুধু সরকারি খাতে ঋণ ছাড়ের পরিমাণ ২ লাখ ২১ হাজার ৬৬২ কোটি টাকা। এরমধ্যে সরকারের কাছে নীট ঋণ ১ লাখ ৯১ হাজার ৬০৭ কোটি টাকা ও অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠান নিয়েছে ৩০ হাজার ৫৫ কোটি টাকা।