শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫২ পূর্বাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান
সংবাদ শিরোনাম ::

উত্তরায় কেয়ারটেকার হত্যার রহস্য উদঘাটন : গ্রেফতার- ২

  • আপডেট টাইম : বুধবার, ১৪ জুলাই, ২০২১
  • ১৫৮ বার পঠিত

 

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকায় কেয়ারটেকার সুবল চন্দ্র পাল (৪৪) হত্যাকান্ডের ঘটনায় দুই দিনের মধ্যে খুনের আসল রহস্য উদঘাটন করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।

এ খুনের ঘটনায় মুলহোতা ও সাবেক গাড়ি চালকসহ দুই হত্যাকারীকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলো- মোঃ মাসুদ রানা ও মোঃ মিজানুর রহমান। এ সময় তাদের হেফাজত হতে ভিকটিমের পরিহিত জামার পুড়িয়ে দেওয়া অংশ বিশেষ ও রক্তমাখা জামা উদ্ধার করা হয়।

এছাড়াও গ্রেফতারকৃতদের স্বীকারোক্তি মতে ঘটনাস্থল থেকে একপিস ইয়াবা ট্যাবলেট ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত কাঁচিটি উদ্ধার করা হয়েছে।

সোমবার উত্তরা পশ্চিম থানার একটি দল সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে খুনের সাথে প্রত্যক্ষ জড়িত মাসুদ ও মিজানকে গ্রেফতার করে।

এবিষয়ে মঙ্গলবার দুপুর ১২ টায় রাজধানীর উওরা পূর্ব থানায় ডিএমপি পুলিশের পক্ষ থেকে এক প্রেস কনফারেন্সের আয়াজন করা হয়।

উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বিপিএম, পিপিএম আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেন, গত ১১ জুলাই, ২০২১ তারিখে উত্তরা পশ্চিম থানার ৩ নং সেক্টরের ১০ নং বাড়ির কেয়ারটেকার সুবল চন্দ্র পাল (৪৪) খুন হন। এ খুনের ঘটনায় থানা পুলিশের পাশা-পাশি সিআইডি, পিবিআইসহ একাধিক সংস্থা ছায়া তদন্ত শুরু করে। কিন্তু আমরা ঘটনার দুই দিনের মধ্যে বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে হত্যাকান্ডের মূল হোতাসহ রহস্য উদঘাটন করতে পেরেছি।

তিনি আরও জানান, সোমবার উত্তরা পশ্চিম থানার একটি দল সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে খুনের সাথে প্রত্যক্ষ জড়িত মাসুদ ও মিজানকে গ্রেফতার করে।

হত্যাকান্ডের মোটিভ সম্পর্কে পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, গ্রেফতারকৃত মাসুদ ঐ বাসায় ড্রাইভার হিসাবে কর্মরত ছিল। দেড় মাস পূর্বে সে চাকরি ছেড়ে সিরাজগঞ্জ চলে যায়। সেখানে একটি লুঙ্গি কারখানায় মাইক্রোবাসের চালক হিসেবে কাজ নেয়। গ্রেফতারকৃত মাসুদ ইতোপূর্বে প্রায়ই ভিকটিমের রুমে ইয়াবা সেবন করত ও নারী নিয়ে এসে ভিকটিমের বসবাসের কক্ষটি ব্যবহার করত।

ডিসি মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, প্রাথমিকভাবে তাদের পরিকল্পনা ছিল, গভীর রাতে দারোয়ানকে হাত-পা বেঁধে জিম্মি করে রাখবে। বাড়ির মালিক ফজরের নামাজ পড়তে মসজিদে যাবার সময়ে তারা বাসায় প্রবেশ করে বাড়ির সদস্যদের জিম্মি করে লুণ্ঠন কাজ সম্পন্ন করবে। সে মোতাবেক গ্রেফতারকৃত মাসুদ ভিকটিম সুবলের সাথে যোগাযোগ করে। পূর্ব পরিচয়ের সূত্রধরে গ্রেফতারকৃত মাসুদ ভিকটিমকে জানায় সে ও তার চাচাতো ভাই ঢাকায় এসে রাতে তার কক্ষে থাকবে। পরবর্তীতে সে মোতাবেক ১০ জুলাই দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় গ্রেফতারকৃতরা কেয়ারটেকারের রুমে প্রবেশ করে ও কেয়ারটেকারের কক্ষে অবস্থান নেয় এবং সেখানে ইয়াবা সেবন করে।

পুলিশের এ কর্মকর্তা আরো জানান, পরিকল্পনা মোতাবেক ঘটনার দিন দিবাগত রাত সাড়ে ৩ টায় ঘুমন্ত ভিকটিমের হাত-পা বাঁধার চেষ্টা করলে ভিকটিম জেগে উঠে। রুমে থাকা একটি ধারালো কেঁচি ভিকটিমের গলায় ধরে তাকে চুপ থাকতে বলে। গ্রেফতারকৃত মিজান ভিকটিমের গলায় নাইলনের রশি পেঁচিয়ে ধরলে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে মাসুদ রানা কেয়ারটেকারে গলায় ধারালো কেঁচিটি ঢুকিয়ে দেয়। এতে রক্তক্ষরণ শুরু হলে মিজান ও মাসুদ ভিকটিমের গলা চেপে ধরে মৃত্যু নিশ্চিত করে। মৃত্যু নিশ্চিত করার পর গ্রেফতারকৃতরা শক্তকরে ভিকটিমের হাত পা বাঁধে। রুমের বাহিরের পানির টেপে শরীরে থাকা রক্তের ছাপ ধুয়ে ফেলে এবং জামাকাপড়ে রক্তের ছাপ মুছে ফেলার চেষ্টা করে। পরিবর্তী সময়ে গ্রেফতারকৃতরা মালিকের বাসায় লুণ্ঠনের পরিকল্পনা বাদ দিয়ে উক্ত স্থান ত্যাগ করে। সেখান থেকে তারা বিভিন্ন যানবাহন ব্যবহার করে নিজ গ্রাম সিরাজগঞ্জ চলে যায়।

অপরদিকে, মিজানুর রহমান অটো রিকশা চালানোর অন্তরালে ডাকাতিকে তার প্রধান পেশা হিসাবে বেছে নেয়। ইতােপূর্বে ২০২০ সালের ১২ অক্টোবরে ডাকতির প্রস্তুতিকালে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানা তাকে অস্ত্রসহ হাতে নাতে গ্রেপ্তার হয়েছিল। মাসুদের পূর্ব পরিচিত ছিল মিজান।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিসি , সাইফুল ইসলাম জানান, তার নাম সিরাজগঞ্জ থানায় একটি ডাকাতি ও অস্ত্র আইনে মামলা আছে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে ডিসি জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত দুই আসামী ঘটনার কথা স্বীকার করেছে। মঙ্গলবার ৭ দিনের পুলিশ রিমান্ডে আবেদন জানিয়ে এই দুই আসামীকে আদালতে পাঠানো হয়।

প্রেস করফারেন্সে উওরা বিভাগের উপ পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো, সাইফুল ইসলাম, বিপিএম, পিপিএম, অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার (এডিসি) তাপস কুমার দাস, (পূর্ব জোন), ডা, মনজুর মোর্শেদ (পশ্চিম জোন),, সহকারী পুলিশ সুপার (এসি) মো সাইফুল ইসলাম সাইফ, সহকারী পুলিশ সুপার (এসি) এস, এম আশিকুর রহমান, উওরা পূর্ব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো, জহিরুল ইসলাম ও উওরা পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আক্তারুজ্জামান মোহাম্মদ ইলিয়াস সহ অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com