কাতার বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ অতিরিক্ত সময় ছাড়া ১২০ মিনিটের দীর্ঘ খেলা হয়। ৩-৩ গোলে টানটান উত্তেজনাময় ম্যাচ। এরপর টাইব্রেকারে গিয়ে নীল-সাদার জয়। লিওনেল মেসির অধরা স্বপ্ন পূরণ, কোটি কোটি ফুটবলপ্রেমীর প্রাণে স্পন্দন ফিরে আসা। রবিবার (১৮ ডিসেম্বর) মধ্যরাত চিরস্মরণীয় হয়ে থাকলো ফিফা বিশ্বকাপ ২০২২-এ ফ্রান্সকে হারিয়ে আর্জেন্টিনার রুদ্ধশ্বাস জয়ে।
বহুল আকাঙ্ক্ষিত এই ম্যাচের আগেই দেশের সিনে তারকারা গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন তাদের প্রত্যাশার কথা। অনুমান করেছিলেন গোল ব্যবধান কত হতে পারে। সেই প্রেডিকশনের সঙ্গে ফলাফলের সমীকরণ মেলানো যাক চলুন-
পরীমনি
মনের ভেতর তীব্র প্রত্যাশা আর চাপ নিয়ে খেলা দেখেছেন পরীমণি। তার একটাই চাওয়া ছিলো, লিওনেল মেসির হাতে বিশ্বকাপ। গোল ব্যবধানের হিসাবে যাননি। ম্যাচ শেষে পরীর চাওয়া পূরণ হয়েছে।
আরিফিন শুভ
আর্জেন্টিনা নাকি ফ্রান্স, পছন্দের দলের কথা জানাননি এই নায়ক। শক্তিশালী দল নয়, তার বরং দুর্বল বা পরাজিত দলগুলোকে সমর্থন দিতেই ভাল লাগে। তাই ফাইনাল নিয়ে কিছু বলতে চাননি শুভ।
বিদ্যা সিনহা মিম
ব্রাজিলের সমর্থক হয়েও মিম বলেছিলেন, ‘মন বলছে শেষ হাসিটা মেসিই হাসবে’। এরপরও কিছুটা শঙ্কা ছিলো। কেননা প্রতিপক্ষ শক্তিশালী ফ্রান্স। সেই ফ্রান্সকে হারিয়েই বিশ্বকাপের স্বপ্ন বাস্তব করলেন মেসি-ডি মারিয়ারা।
সিয়াম আহমেদ
সিয়ামের পছন্দের দল স্পেন। সেটি বিদায় নিয়েছে অনেক আগেই। এরপর থেকে তার চাওয়া ছিলো, কিংবদন্তি লিওনেল মেসির হাতে যেন বিশ্বকাপ ওঠে। চরম উত্তেজনাময় ফাইনালে সেটাই ফলেছে।
নিরব
আর্জেন্টিনার সরব সমর্থক তিনি। গত তিন-চার বিশ্বকাপে তীরে গিয়ে তরী ডোবার আক্ষেপ ছিলো তার মনে। এবারের ফাইনাল নিয়ে নিরবের অনুমান ছিলো, আর্জেন্টিনা ২-১ গোলে জিতবে। তবে দুই ঘণ্টার খেলা শেষে টাইব্রেকারে গিয়ে ৪-২ গোলে জিতেছে মেসিবাহিনী। তাই নিরবের গোল প্রেডিকশন না মিললেও জয়ের স্বাদ ঠিকই পেলেন।
তমা মির্জা
আর্জেন্টিনার অন্ধ ভক্ত এ অভিনেত্রী। প্রত্যেকটি ম্যাচে ছিলেন পর্দার সামনে। তিনি বলেছেন, খেলায় নৈপুণ্যের পাশাপাশি ভাগ্যও বড় ফ্যাক্টর। তবে আর্জেন্টিনা কাপ নেবে, এ ব্যাপারে ছিলেন নিশ্চিত। ২-১ গোলে বিজয়ের প্রত্যাশা করেছিলেন। তবে ম্যাচ শেষে জয় এসেছে ঠিকই, শুধু গোল ব্যবধানের অনুমান মেলেনি।
সাইমন সাদিক
ব্রাজিলের নিরেট সমর্থক সাইমন। তাদের বিদায়ের পর আর খেলা দেখনি। তাই ফাইনাল নিয়েও তার কোনও উচ্ছ্বাস বা অনুমান ছিলো না। শুধু এটুকু বলেছিলেন, মেসি এই বিশ্বকাপ পাওয়ার যোগ্য। অবশেষে যোগ্য মানুষের হাতেই শোভা পেলো স্বর্ণের সেই ট্রফি।
জায়েদ খান
২-১ গোলে আর্জেন্টিনা জিতবে, মেসি কোলে করে কাপ বাড়িতে নিয়ে যাবেন, এমনটা বলেছিলেন তিনি। আংশিক সত্য হলো জায়েদ খানের কথা। টাইব্রেকারে ৪-২ গোলে মেসিদের জয়ে তাই আনন্দে ভাসছেন এ নায়ক।
ঐশী
ছোটবেলা থেকেই আর্জেন্টিনার সমর্থক ‘মিশন এক্সট্রিম’ নায়িকা। মেসিকে দেখেই নীল-সাদার দলে ভিড়েছেন, ভালোবেসেছেন। সেই মেসির হাতেই বিশ্বকাপ উঠুক, মন থেকে ছিলো এটাই চাওয়া। গোল প্রেডিকশন করতে পারলেন না চিন্তায়। বলেছেন, ‘ফাইনাল ম্যাচ নিয়ে কোনও প্রেডিকশন নেই; আপাতত আল্লাহ আল্লাহ করছি, যাতে ওরা বিশ্বকাপটা পায়।’ ঐশীর সেই ডাক যেন স্রষ্টা শুনেছেন। মেসির হাতেই পূর্ণতা পেয়েছে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের ট্রফি।
উল্লেখ্য, রবিবার (১৮ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় কাতারের লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপ ২০২২ ট্রফির ফাইনালে লড়েছিলো আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্স। ২-০ গোলে এগিয়ে প্রথমার্ধ শেষ করে আর্জেন্টিনা। দ্বিতীয়ার্ধে এমবাপ্পে তাণ্ডবে মুহূর্তেই সব হিসাব উল্টে যায়। ২ গোল দিয়ে সমতায় ফিরে আসে তারা। খেলা গড়ায় অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে। সেখানেও দুই দলের একটি করে গোল। সবশেষে টাইব্রেকারে গিয়ে ৪-২ গোলে আর্জেন্টিনা জয় পায়।