বাংলাদেশের স্বর্ণালংকার মান বিবেচনায় দুবাইকে ছুঁয়েছে। দরকার শুধু ব্র্যান্ডিং, তাহলেই এই শিল্পের আড়াইশ বিলিয়ন ডলারের বিশ্ববাজার ধরতে পারবে বাংলাদেশ।
শনিবার বাজুস মেলার শেষ দিনের আলোচনায় এমন সম্ভাবনা তুলে ধরেন অর্থনীতিবিদরা।
আলোচনা সভায় অর্থনীতিবিদরা বলেন, এগিয়ে যেতে হলে দেশের জুয়েলারি শিল্পের তথ্যের অস্পষ্টতা কাটাতে হবে। সেই সঙ্গে সব শ্রেণির ক্রেতার চাহিদা বিবেচনায় কাজ করতে হবে।
ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে অর্থনীতিবিদ খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, নিজেরাই হয়তো কোনো কোনো জিনিস তৈরি করছেন কিন্তু বলছেন যে এটি দুবাইয়ের। কেননা, উন্নতমানের দিক দিয়ে এটি দুবাইয়ের পর্যায়ে চলে গেছে। কিন্তু ব্র্যান্ডিংয়ের ক্ষেত্রে আমরা বাংলাদেশকে এখনো সেই জায়গায় নিতে পারিনি।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, আমরা রফতানি বাস্কেট বাড়ানোর চেষ্টা করছি। রফতানি বাস্কেট বাড়াতে হলে তো আমাদের এ ধরনের পণ্য নিয়েই কাজ করতে হবে। যদি তৈরি পোশাক খাতকে এত সুযোগ-সুবিধা দিয়ে এ পর্যায়ে নিয়ে আসা যায়, তাহলে আমার মনে হয় জুয়েলারি শিল্পের ভ্যালু এডিশন আরো বেশি হবে। রফতানিতে যদি সত্যিই ব্যবসায়ীরা উদ্যোগ নেন, তাহলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের এখনি আপনাদের বন্ড সুবিধা দিয়ে দেওয়া উচিত।
এদিকে বাজুস মেলার স্টল প্যাভিলিয়নে জুয়েলারি শিল্পীদের নিপুণ হাতে গড়া নজরকাড়া সব স্বর্ণালংকার মেলে ধরা হয়েছে। বাজার মূল্যের চেয়ে কম দামে কেনার সুযোগ পেয়ে খুশি ক্রেতা-দর্শনার্থীরা। মেলার আয়োজক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) বলছে, মেলার প্রাপ্তি প্রত্যাশা ছাড়িয়ে গেছে।
বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন অ্যান্ড সোস্যাল অ্যাফেয়ার্সের চেয়ারম্যান দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহীন বলেন, প্রচুর দর্শনার্থী এসেছেন ও কেনাকাটা করেছেন। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে, আমরা আমাদের স্বর্ণ শিল্পকে এ মেলার মাধ্যমে দেশে ও বিদেশের কাছে উপস্থাপন করতে পেরেছি।
বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ট্রেড অ্যান্ড ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের চেয়ারম্যান উত্তম বণিক বলেন, গত বছর প্রথমবার হিসেবে আমাদের বেচাবিক্রি অনেক ভালো হয়েছে। এবার অপ্রত্যাশিত ব্যবসা হয়েছে। মানুষ আগামী এক বছর অধীর অপেক্ষা করবে যে- কবে আবার এ ফেয়ার হবে।
বাজুসের তথ্যমতে, ২০২০ সালে দেশের বাজারে ২৮৫ কোটি ৪০ লাখ ডলারের গোল্ডবার ও স্বর্ণালংকার বিক্রি হয়েছিল। যার আকার ২০৩০ সালে ২ হাজার ১০৯ কোটি ৬০ লাখ ডলারে দাঁড়াবে।