অনলাইন ডেস্ক,সিটিজেন নিউজ: দেশের ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন আইএসপিএবির নির্বাচন আর কয়েকদিন পরই। সে কারণে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। ভোটারদের কাছে নানা প্রতিশ্রুতি নিয়ে হাজির হচ্ছেন তারা। সংগঠনটির এবারের নির্বাচন একটু ব্যতিক্রম। কারণ এর আগের নির্বাচনগুলোতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্যানেল ছিল না। কিন্তু এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছে দুটি প্যানেল।
১৩ সদস্যের নির্বাহী কমিটির নির্বাচনের জন্য প্যানেল ‘টিম ইউনাইটেড’র নেতৃত্ব দিচ্ছেন আম্বার আইটির প্রধান নির্বাহী ও সংগঠনের বর্তমান সভাপতি আমিনুল হাকিম। অন্য প্যানেল ‘টিম ক্যাটালিস্ট’র নেতৃত্ব দিচ্ছেন
আইসিসি কমিউনিকেশনের প্রধান সাইফুল ইসলাম সিদ্দিকী।
নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৬ জুলাই। নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্বে আছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
প্রতিদ্বন্দ্বী দুটি প্যানেল এরই মধ্যে তাদের ইশতেহার প্রকাশ করেছে। যারা কখনো এ সংগঠনের নেতৃত্ব দেননি তাদের নিয়ে তৈরি করা হয়েছে ‘টিম ক্যাটালিস্ট’ প্যানেল। অন্যদিকে ‘টিম ইউনাইটেড’ গঠিত হয়েছে অভিজ্ঞ পুরনো আর নতুনদের সংমিশ্রণে, যারা দীর্ঘদিন এ সংগঠনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
টিম ক্যাটালিস্টের ইশতেহারে বলা হয়েছে, তারা নির্বাচিত হলে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি, উৎকর্ষ সাধন এবং গ্রাহক সেবার মান বাড়াবেন। তারা যেহেতু কখনো নেতৃত্বে ছিলেন না, তাই তারা কোনো সফলতার কথা তুলে ধরতে পারছেন না।
এ প্যানেলের প্রধান সাইফুল ইসলাম সিদ্দিকী মনে করেন, আইএসপিএবিতে দীর্ঘদিন একই নেতৃত্ব চলছে। ফলে সংগঠনের কার্যক্রমে স্থবিরতা এসেছে।
তিনি বলেন, ‘আইএসপি প্রতিষ্ঠানগুলো গুরুত্ব ও মর্যাদার দিক থেকে পিছিয়ে আছে। আমরা আইএসপি প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রাপ্য মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে চাই। ব্যবসায়িক অধিকার অর্জন এবং গ্রাহকদের কাছে মানসম্পন্ন সেবা পৌঁছে দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য।’
অন্যদিকে টিম ইউনাইটেড প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি বিগত দিনে তাদের সফলতার কথাও তুলে ধরছে। এ টিমের সফলতার তালিকায় বলা হচ্ছে- সব অপারেটরের জন্য ৫ শতাংশ ভ্যাট নিশ্চিত করা হয়েছে, নতুন এনটিটিএন লাইসেন্সের জন্য আবেদন করা হয়েছে যা সরকারের বিবেচনায় আছে, আইএসপি প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য আইপিটিভি সার্ভিস প্রদানের অনুমতি নেওয়া হয়েছে, মোবাইল ডায়ালারের অনুমতি নেওয়া হয়েছে, ইনফো সরকার-৩ এর ই-পুলিশ প্রজেক্ট আইএসপিদের কাছে নিয়ে আসা হয়েছে। এছাড়া বিগত বছরগুলোতে আন্তর্জাতিক সম্মেলন ও সংগঠনের সদস্যদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করাসহ অন্য যে কোন সময়ের চেয়ে সংগঠনকে কার্যকর ও গতিশীল করা হয়েছে।
টিম ইউনাইটেডের ইশতেহারে আইএসপি প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য করপোরেট ট্যাক্স কমানো, নতুন এনটিটিএন লাইসেন্সের ব্যবস্থা করা, আইএসপি ব্যবসাকে অবৈধ দখলদারমুক্ত করা, আইএসপি ও আইজিডব্লিউ প্রতিষ্ঠানকে একতাবদ্ধ করাসহ নানা প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
এ প্যানেলের প্রধান আমিনুল ইসলাম হাকিম বলেন, ‘টিম ইউনাইটেড গঠিত হয়েছে সংগঠনের অভিজ্ঞ এবং নতুন সদস্যদের সংমিশ্রণে। প্রত্যেক প্রার্থীই সংগঠনের কর্মকাণ্ড এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। আমাদের প্যানেল বিজয়ী হলে সহজেই অসমাপ্ত কাজ দ্রুত সমাপ্ত করা যাবে। একইসঙ্গে যেহেতু আমরা দীর্ঘদিন নেতৃত্বে আছি, তাই প্রতিশ্রুতিগুলো পূরণেও আমরা দ্রুত কাজ করতে পারব।’
টেলিযোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতে আইএসপিএবির গুরুত্ব বেড়েছে। দেশের সবখানে দ্রুত ব্রডব্যান্ড সেবা সম্প্রসারিত হচ্ছে। ২০১৫ সালে আইএসপিগুলোর গ্রাহক সংখ্যা ছিল প্রায় ১২ লাখ। বর্তমানে এ সংখ্যা প্রায় ৫৭ লাখ। ক্রমবর্ধমান এ ব্যবসার নেতৃত্ব নিয়ে তাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা জোরালো হচ্ছে। দুটি পূর্ণ প্যানেলের পাশাপাশি এবার স্বতন্ত্র সদস্যরাও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।