রাজশাহীর পুঠিয়ায় বিসিএস পরীক্ষা দেওয়ার পরদিন বুলবুল আহমেদ নামে এক যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শনিবার সকালে গ্রামের মসজিদ থেকে তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। ঘটনাটি ঘটেছে পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর ইউনিয়নের পূর্ব নয়াপাড়া গ্রামে। মৃত বুলবুল আহমেদ পূর্ব নয়াপাড়া গ্রামের রাজমিস্ত্রি সাহেব আলীর একমাত্র ছেলে। শনিবার বিকেলে পারিবারিক কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হয়।
পুঠিয়া থানার ওসি ফারুক হোসেন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ। ওই তরুণ আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে মনে হয়েছে। পরিবারের অনুরোধে ময়নাতদন্ত ছাড়া লাশ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
কাঁদতে কাঁদতে বুলবুল আহমেদের মা সানোয়ারা বেগম বলেন, বুলবুলের বাবা দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। সংসারের খরচ জোগাতে তিনি অসুস্থ শরীর নিয়েই কাজ করেন। বুলবুল ওর বাবাকে প্রায়ই বলত, আর কিছুদিনের মধ্যে বড় কর্মকর্তা হবো। এরপর আর বাবাকে কাজ করতে হবে না। গতকাল বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি আসে সে। রাতে সবাই একসঙ্গে খেয়েছি। সকালে সে ঘুম থেকে উঠে বাড়ির পাশের মসজিদে (পূর্ব নয়াপাড়া জামে মসজিদ) ফজরের নামাজ পড়ে। এর মধ্যে আমি সকালে তার জন্য নাশতা বানাই। পরে তাকে খুঁজতে গিয়ে দেখি, মসজিদের চালের আড়ার সঙ্গে গলায় রশি পেঁচানো অবস্থায় ঝুলছে বুলবুলের লাশ।
বুলবুলের বাবা সাহেব আলী বলেন, আমার একটি মেয়ে, একটি ছেলে। অনেক কষ্টে মেয়ের বিয়ে দিয়েছি। আর একমাত্র ভরসা ছিল ছেলে বুলবুল। সে-ও আমাদের ছেড়ে চলে গেছে। আমার ছেলের সঙ্গে কারো কোনো শত্রুতা নেই। গ্রামের সবাই তাকে অনেক ভালোবাসে। কী কারণে এমন হলো কিছুই বলতে পারছি না।
বুলবুল দুই বছর ধরে বিসিএসের প্রস্তুতি নিয়েছেন জানিয়ে তাদের প্রতিবেশী ওলিউল্লাহ বলেন, বুলবুলের বাবার জমিজমা তেমন নেই। রাজমিস্ত্রির কাজ করে অনেক কষ্টে সংসার চালান। বুলবুল ছোটবেলা থেকেই অনেক মেধাবী। তার স্বপ্ন ছিল বিসিএস কর্মকর্তা হয়ে সংসারের হাল ধরবে। গতকাল ৪৫তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা দিয়ে বাড়িতে আসেন তিনি। শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে স্থানীয় মসজিদের ভেতর থেকে ফাঁস দেওয়া ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়।