কালিগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি:
দ্বাদশ জাতীয় সংসদীয় নির্বাচনের ১ মাস ৭ দিন অতিবাহিত হলেও সহিংসতা রেশ কাটেনি। গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার নাগরী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অলিউল ইসলাম অলির বাড়িতে স্বতন্ত্র প্রার্থী সদ্য বিজয়ী এমপি আখতার উজ্জামাননের নেতা কর্মীসহ একদল সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে বাড়ির গেট, ২০টি হোন্ডার ও ৬ টি প্রাইভেটকার ভাঙচুর করে প্রায় সোয়া ২ কোটি টাকার ক্ষয়-ক্ষতি করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে কালীগঞ্জ থানা পুলিশ।
ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে আটটার দিকে নাগরীর বড়কাউ(পূর্বাচল ২৬ নম্বর সেক্টর) এলাকায়।
মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাতাব উদ্দিন।
ঘটনায় জড়িত মো.হায়দার হোসেন, মনজুর হোসেন ও বাকির হোসেনকে রাতে আটক মঙ্গলবার বিকেলে তাদেরকে গাজীপুর আদালতে পাঠানো হয়েছে। পরে আদালতের বিচারক তাদেরকে
জেলহাজতে প্রেরণ করেন।
এ ঘটনায় চেয়ারম্যানের ছোট ভাই আলিউল ইসলাম বাদী হয়ে ৪৬ জনের নাম উল্লেখ সহ আরোও ৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
মামলা ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে আটটার দিকে পূর্ব পরিকল্পিত অনুযায়ী কতিপয় সন্ত্রাসীরা চেয়ারম্যানকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় তিনি বাড়ির ভেতরে অবস্থান করছিলেন। চেয়ারম্যান শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় তার বাড়িতে আত্মীয়স্বজন, শুভাকাঙ্খী ও দলীয় নেতাকর্মীরা তাকে দেখতে আসেন। চেয়ারম্যানকে দেখতে আসা আত্মীয়স্বজন, শুভাকাঙ্খী ও দলীয় নেতাকর্মীদের মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকার বাড়ির সামনে রাখা ছিল।
এই সময় হামলাকারীরা বাড়ির গেট, ২০টি দামী হোন্ডার ও ৬ টি প্রাইভেটকার ভাঙচুর করে। হামলাকারীরা বাড়ির প্রধান ফটক ভাঙচুর করে বাড়ির ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা চালায়।
এর আগে সন্ধ্যা সাতটার দিকে ইউপি চেয়ারম্যানের ছোট ভাই আলিউল ইসলামের উপর কতিপয় সন্ত্রাসীরা বাড়ির পাশে রাস্তায় প্রাইভেটকার গতিরোধ করে তার ওপর হামলা চালিয়ে তাকে গুরুতর আহত করে। পরে তিনি প্রাণ বাঁচাতে পাশ্বর্তী বাড়িতে আশ্রয় নেন।
ভুক্তভোগী নাগরী ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক অলিউল ইসলাম বলেন- আমি নৌকা প্রতীক নিয়ে দুইবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জন গনের সেবা করে আসছি।
এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমি নৌকা প্রতীকের পক্ষে নির্বাচন করায় স্বতন্ত্র প্রার্থী সদ্য বিজয়ী এমপি আখতার উজ্জানের নেতা কর্মীরা আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়। এর পর থেকে ওই নেতা কর্মীরা আমাকে প্রতিনিয়ত হুমকি- ধামকি দিয়ে যাচ্ছে।
এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার রাতে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার বাড়িতে হামলা চালায় ওই সন্ত্রাসীরা।
আমি শারীরিকভাবে খুবই অসুস্থ।
কিছুদিন আগে আমার হার্টে রিং পড়ানো হয়েছে। আমাকে দেখতে আত্মীয়স্বজন, শুভাকাঙ্খী ও দলীয় নেতাকর্মীরা তাদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকার নিয়ে বাড়িতে আসেন ওই হামলাকারীরা৷ তা ভাঙচুর করে লন্ডভন্ড করে ফেলে।
এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ থানার ওসি বলেন, বিষয়টি রাতে জানতে পেরে ঘটনাস্থলে পুলিশের টিম পাঠানো হয়েছে। পুলিশ আসার খবর পেয়ে হামলাকারীরা দ্রুত পালিয়ে যায়। পরে বড়কাউ এলাকা থেকে এজাহারভুক্ত তিন আসামীকে পুলিশ আটক করে থানায় নিয়ে আসে। বিষয়টি তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।