রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫২ পূর্বাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান

সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে রাজধানীর মৌচাকে ‘লিলি প্লাজা’ মার্কেট দখল, প্রশাসন নিরব!

  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ১৯ বার পঠিত

রাজধানীর মৌচাকে লিলি প্লাজা মার্কেটের জমির মালিক ও ডেভেলপারের বিরোধের জের ধরে লিলি প্লাজা মার্কেটে হামলা করে একদল সন্ত্রাসী বাহিনী।

গত ৫ সেপ্টেম্বর লিলি প্লাজায় অবস্থিত বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও দোকান মালিকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, লিলি প্লাজা ও জমির মালিক মির্জা মোসলেমা আক্তার গংদের জমিতে মার্কেট করার উদ্দেশ্যে ভিবো ডেভেলপারের সাথে একটি চুক্তিপত্র দলিল সম্পাদন করেছিলেন। বিনিময়ে ভিবো ডেভেলপার মোসলেমা আক্তারকে নগদ যথসামান্য কিছু অর্থ সহ দেড় কোটি টাকার কয়েকটি চেক প্রদান করেছিল। কিন্তু সবগুলো চেক ক্যাশ না হওয়ায় বিরোধের সূত্রপাত ঘটে।

বিরোধ মিমাংসার জন্য মার্কেট কমিটি ও গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ দুপক্ষের মধ্যে সমঝোতা করে দিয়ে এই মর্মে জানিয়ে ছিলো যে, দ্রুত সময়ের মধ্যে চেকগুলো ক্যাশ করাবে ভিবো বিল্ডার্স এবং এর পরে ভবন নির্মানে প্লান পাশ করাবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, সমঝোতার পরেও ভিবো ডেভেলপার পাওনা টাকা দিতে বার্থ্য হলে লিলি প্লাজার মালিক মির্জা মোসলেমা আক্তার বাধ্য হয়ে ভিবো ডেভেলপারের দেওয়া সবগুলো চেক ডিজঅনার করে আদালতে মামলা করেন, যার মিস মোকাদ্দমা মামলা নং- ১৫৩/২০২৩ ইং।

এর পরেও ভিবো ডেভেলপার আইনের কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে বারবার ভিবো ডেভেলপার কর্তৃপক্ষ জোর পূর্বক লিলি প্লাজা মার্কেটটি দখলে নিতে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ছাত্রলীগ, যুবলীগ সহ কিছু অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের নিয়ে দখলে নেওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় আদালতে এবং সংশ্লিষ্ট থানায় একাধিক অভিযোগ থাকার কারনে। এ দাবী মির্জা মোসলেমা আক্তার ও তার পরিবারের।

বারবার ভিবো বির্ল্ডাস জবর দখলের অপচেষ্টা সহ আইনের প্রতি তোয়াক্কা না করায় এবং লিলি প্লাজার অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধে আদালতের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা সহ কোট ভায়োলেশন ২৯/২০২৪ ইং মামলা করেছে।

আদালতে বর্তমানে চেক ডিজওনার ও চুক্তি বাতিল মামলা এবং অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা সহ কোট ভায়েলেশন মামলা চলমান রয়েছে। বিগত ফ্যাশিস্ট আওয়ামীলীগের দোষর সাবেক মন্ত্রী ফরিদপুরের আব্দুর রহমান এর ঘনিষ্ট সহচর যুবলীগ নেতা ভিবো বিল্ডার্সের মালিকেরা এখন আওয়ামীলীগ সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে ভিবো ডেভেলপার কোম্পানীটি রাতারাতি ভোল পাল্টিয়ে ছাত্র জনতা নামধারী সেজে ভিবো বিল্ডার্স ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে লিলি প্লাজায় অর্তকিত হামলা চালিয়েছে, আর এ হামলায় মদদ দিয়ে সরাসরি অংশ নিয়েছে লিলি প্লাজার জনৈক ভাড়াটিয়া জাহাঙ্গীর আলম ওরফে বোমা জাহাঙ্গীর ও ম্যানেজার নজরুল ইসলাম বাবলু এবং বিতর্কিত যুবদল নেতা মোস্তফা বাহিনীদের নিয়ে ভিবো বিল্ডার্স কর্তৃপক্ষ অস্ত্রের মুখে মার্কেটি দখল করে নিয়েছে মর্মে, দাবী করেছে মির্জা মোসলেমা আক্তার ও তার পরিবার।

বিষয়টি নিয়ে ইতিপূর্বে বিভিন্ন মিডিয়াতে মাকের্টের হামলা ঘটনা নিয়ে সংবাদ ছাপা হয়েছে এবং থানাও সেনা ক্যাম্পে অভিযোগ দিয়েছিল ভুক্তভোগী লিলি প্লাজার মালিক মির্জা মোসলেমা আক্তার ও তার পরিবার।

সম্প্রতি ভিবো বিল্ডার্সের মালিক জুয়েল মুন্সি ও আব্বাস উদ্দিন আহম্মেদ এদের পক্ষ হয়ে ৫০/৬০ জনের সন্ত্রাসী গ্রুপ বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাসের কথিত এপিএস সোহেলের মদদপুষ্ট হয়ে তারই ঘনিষ্ঠ সহচর যুবদলের সাময়ীক বহিষ্কৃত নেতা মোস্তফার নের্তৃত্বে লিলি প্লাজা মার্কেটে প্রবেশ করে অতর্কিত হামলা চালিয়ে লিলি প্লাজা মার্কেটটি দখলে নেয়। এ সময় সন্ত্রাসীদের হামলা ও মারধরের শিকার হয়ে বিউটি কর্ণারের মালিক ইকবাল হোসেন ও বিভিন্ন দোকানের কর্মচারী রুবায়েত, জুবায়ের, রুবেলসহ প্রায় ৫ জন আহত হয়েছেন।

এলাকাবাসী আহতদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল সহ বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠালে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ ব্যাপারে আব্দুর রহমান ওবায়দুল বাদী হয়ে রমনা মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগরে ব্যাপারে রমনা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ গোলাম ফারুকের সাথে কথা বললে তিনি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে জানালেও অদ্যবদি কোনো সুরাহা হয়নি! বরং থানা পুলিশ ও ভিবো বিল্ডাস মিলে মার্কেটের মালিক মির্জা মোসলেমা আক্তারকে মামলা প্রত্যাহার করে ভিবো বিল্ডার্সের সাথে মিমাংশার জন্য চাপ প্রয়োগ করছে, বলে অভিযোগ এনেছে লিলি প্লাজা মালিক পক্ষ।

২৮ সেপ্টেম্বর শনিবার বিকাল আনুমানিক ৫ ঘটিকার সময় লিলি প্লাজা মাকেটের সভাপতি সাচ্চু শেখ ওরফে ফাইটকে লিলি প্লাজার সামনে দিয়ে মালিবাগের দিকে আসার সময় ভিবো বিল্ডাস এর সন্ত্রাসী বাহিনী তার উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে তার সাথে থাকা নগদ ১১ হজার টাকা, হাত ঘড়ি, স্যামস্যাং এর একটি মোবাইল ফোন ও ২ ভরি স্বর্ণের একটি চেইন ছিনতাই করে নিয়ে যায়। এ সময়ে ভিবো বিল্ডাস এর সন্ত্রাসীরা সাচ্চুকে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে বলেন- “লিলি প্লাজার দিকে কখনো যেন না দেখি, পরবর্তীতে দেখলে আর প্রাণ নিয়ে ফিরে যেতে পারবি না”!

এ রিপোর্ট লেখাকালীন (২৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬ ঘটিকায় সভাপতি সাচ্চু রমনা থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গিয়েছে মর্মে প্রতিবেদককে জানায় তার পরিবার, তবে থানায় গিয়ে দেখা যায় বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাসের কথিত এপিএস সোহেলের ঘনিষ্ঠ সহযোগী যুবদল নেতা মোস্তফার দাপটে রমনা থানা অনেকটাই জিম্মি হয়ে আছে! যার প্রমাণ মেলে রমনা থানায় সাচ্চু অভিযোগ করতে গেলে অভিযোগ গ্রহন না করে বরং তার থেকে উল্টো মুচলেখা নিয়েছে সোহেলের দলবল ও ভিবো বিল্ডাস কর্তৃপক্ষ! বিষয়টি নিশ্চিত করছে সাচ্চুর ঘনিষ্ঠজনরা।

ঘটনাটি জানতে রমনা থানায় সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে থানার ওসির রুমে প্রবেশ করতে গেলে বাধা প্রদান করে যুবদল নেতা মোস্তফা ও কথিত এপিএস বাহিনী।

বর্ণিত বিষয়টি নিয়ে একজন পুলিশ কর্মকর্তা তার নিজের পরিচয় গোপন রাখার শর্তে জানায়, বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাসের কথিত এপিএস সোহেল সাহেবের গোপন ইশারায় রমনা, মতিঝিল, খিলগাঁও, শাহজাহানপুর ও তেজগাঁও সহ ঢাকা শহরের অনেক থানাই এখন তার ইঙ্গিতে চলে!

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com