উত্তরা সংবাদ দাতা : মাহবুবুর রহমান নামে এক আদম বেপারী নাটোর জেলার নাজিরপুর গ্রামের দুই জন হতদরিদ্র লোককে সৌদি আরব পাঠানোর কথা বলে ৯লাখ ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে দুই বছর যাবত রাস্তায় রাস্তায় ঘুরানোর অভিযোগ উঠেছে।
কোন ধরনের বৈধ লাইসেন্স ছাড়া প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে কি ভাবে তারা উত্তরা এলাকায় অফিস খুলে আদম পাচার করে এ বিষয়ে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, এ চক্রের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে তাদের নামে থানায় মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করে আসছে। জানা যায়,
গত ৩/১২/২০২৪ইং সমবার শাকিল নামে এক যুবদল কর্মী তার আত্মীয়ের পাওনা টাকা চাইতে গেলে মাহবুবুর রহমান তার নামে উত্তরা পশ্চিম থানায় মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ করে। আদম বেপারী মাহবুবুর রহমানের এহেন মিথ্যা, বানোয়াট ও সাজানো অভিযোগের কারণে উত্তরার রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে আরো জানা যায়,আদম বেপারি মাহবুবুর রহমান ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের মতাদর্শের লোক হওয়ায় বিএনপি ও যুবদলের বদনাম করতে এমন হীন কাজ করছে। মাহবুবুর রহমান
বিদেশি পাঠানোর কথা বলে টাকা হাতিয়ে নিয়ে গ্রামের অসহায় নিরীহ মানুষকে ভয়ভীতি দেখানোর ঘটনায় ভুক্তভোগীর পক্ষে মোঃ সালাম মিয়া উত্তরা পশ্চিম থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, আদম বেপারী মাহবুবুর রহমান গত ১৭/০৬/২০২৩ইং তারিখ থেকে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে বাদী সালাম মিয়ার কাছ থেকে সৌদি আরবে পাঠানোর কথা বলে নগদ/চেকের মাধ্যমে সর্বমোট ৯,৫০০০০/- নিয়ে যায়। পরবর্তীতে মাহবুব তাকে দুটি ভিসা এবং২টি টিকেট হাতে ধরিয়ে দিয়ে ১০ দিন পর তাদের ফ্লাইট হবে বলে গ্রামে চলে যেতে বলে। তারা মাহবুবুর রহমানের কথা সরল মনে বিশ্বাস করে গ্রামে চলে যায়। টিকেটি গায়ে লেখা তারিখে তারা ঢাকা তার অফিসে আসলে মাহবুবুর রহমান তাদেরকে বলে টিকেট কেনসেল হয়ে গেছে। তোমরা মালামাল রেখে গ্রামে চলে যাও। নিরুপায় হয়ে তারা গ্রামে চলে যায়। পরবর্তী সময় মাহবুবুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করলে সে তার কাছে আরো ২ লাখ টাকা দাবি করে। উক্ত টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে তারা তাদের টাকা ফেরত চায়।
মাহবুবুর তাকে নগদ টাকা না দিয়ে চালাকি করে তার পার্টনার মান্নানের ডাচ বাংলা ব্যাংকের ৫,২০০০০/-পাঁচ লক্ষ বিশ হাজার টাকার একটি চেক দেয়। যাহা নগদায়ন তারিখ ছিলো গত ২৫/৪/২০২৪ ইং।
চেকের টাকা উঠাতে তারা বার বার ব্যাংকে গিয়ে ফেরত আসে। টাকা চাইলে মাহবুবুর রহমান আজ দিবে, কাল দিবে বলে তাল বাহানা করে। অভিযোগ ও বাদী সুত্রে
জানা যায়, মাহবুবুর রহমান গত ৩/১২/২০২৪ ইং তারিখ সালাম মিয়া ও যাত্রীর লোকজনকে টাকা দেওয়ার কথা বলে উত্তরা এইচ এম প্লাজা( লিফটের ১০) এম এইচ এয়ার ইন্টার ন্যাশনাল টুরস এন্ড ট্রাভেলস লিঃ অফিসে ডেকে এনে ভয় ভীতি দেখিয়ে তার দেওয়া ৫,২০০০০/- টাকার চেক জোর পূর্বক কেঁড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।
এ সময় তারা বিবাদী আদম বেপারী মাহবুবুর রহমানের অফিস থেকে জীবন রক্ষার্থে
দৌড়ে পালেয়ে যায়। তারা সেখান থেকে পালিয়ে গিয়ে তাদের পরিচিত শাকিলকে জানায়।শাকিল বিষয়টি জানতে মাহবুবুর রহমানের এইচ এম প্লাজা অফিসে আসে। এ সময় শাকিল মাহবুবুর রহমানকে শান্তি পূর্ণ ভাবে বিষয়টি সমাধানের প্রস্তাব করেন। প্রস্তাব পেয়ে মাহবুবুর রহমান তার পার্টনারের সাথে ফোনে কথা বলেন এবং টাকা ফেরতের সময় চান।
শাকিল তার পাওনাদার আত্মীয়ের সাথে কথা বলে নিশ্চিত হয়ে সময় নিয়ে বিষয়টি সমাধানে সম্মতি দেন। এ সময় মাহবুবুর রহমান তাদের পাওনা টাকা ৪৫ দিনে ৩টি কিস্তিতে পরিশোধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ৩ টি চেক হস্তান্তর করেন। এ বিষয়টি শান্তি পূর্ণ ভাবে বিবাদ শেষ করে শাকিল তার লোকজন নিয়ে চলে যায়।
জানা যায়, চতূর ও ধূর্ত ধোঁকাবাজ আদম বেপারি মাহবুবুর রহমান গ্রামের অসহায় লোকজনের টাকা মেরে খাওয়ার জন্য মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে শাকিলের নামে থানায় অভিযোগ দেয়। সে সাথে বিভিন্ন আন্ডার গ্রাউন্ড পত্রিকায় টাকা দিয়ে মন গড়া সংবাদ প্রকাশ করে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাহবুবুর রহমানের অফিসে প্রতিদিন এমন অনেক ভুক্তভোগী টাকার জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা বসে বসে কান্নাকাটি করে।
এ সময় তারা বলেন, মাহবুবুর আমাদের কাছ থেকে টাকা পয়সা নিয়ে আমাদেরকে সর্ব শান্ত করে ফেলেছে। আমাদের এখন মরা ছাড়া আর কোন গতি নেই ।
ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে জানা যায়, আদম বেপারী মাহবুবুর রহমান বনানী সৈনিক ক্লাব এলাকা থেকে গ্রামের অসহায় নিরীহ মানুষের কাছ থেকে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে উত্তরা এসে গাঁ ডাকা দিয়েছে। তারা আরো বলেন, যে কোন সময় সে অফিস ছেড়ে পালিয়ে যেতে পারে। তার বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীদেরকে ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করার অভিযোগ উঠেছে। মাহবুবুর রহমান সম্পর্কে এইচ এম প্লাজার অন্যান্য ব্যবসায়ীরা বলেন,তার কোন লাইসেন্স নেই, সে একজন প্রতারক, ব্যবসায়ী নয়। মানুষকে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এ পর্যন্ত কোন লোককে সে বিদেশ পাঠাতে পারেনি। এ ছাড়াও বিদেশে লোক পাঠানোর বৈধ কোন লাইসেন্স নেই তার।
এ বিষয়ে তারা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।