নিজস্ব প্রতিবেদক,সিটিজেন নিউজ:ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র সাঈদ খোকন বলেছেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে নির্মাণাধীন যেসব ভবনে পানি জমে থাকছে সেসব ভবনের মালিক ও প্রতিষ্ঠানকে সতর্ক করা হচ্ছে। কিন্তু অনেকেই তা শুনছেন না।
তিনি বলেন, ডিএসসিসির স্বাস্থ্যবিভাগ কর্তৃক চিহ্নিত নির্মাণাধীন ওইসব ভবনে এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংসে আজ থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত শুরু হবে। এডিস মশার প্রজননস্থল ও লার্ভা পাওয়া গেলে ওইসব নির্মাণাধীন ভবন ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সোমবার দুপুরে রাজধানীর শ্যামলীতে ঢাকা শিশু হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের খোঁজ নিতে গিয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
মেয়র বলেন, ৬৮টি মেডিকেল টিম পাড়া-মহল্লায় কাজ করছে। তারা প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছে। যে সমস্ত পাড়া-মহল্লায় ডেঙ্গু রোগী পাওয়া যাচ্ছে তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তিসহ বিনামূল্যে ওষুধ সরবরাহ করছে। আমাদের ৫৭টি ওয়ার্ডে স্বাস্থ্যবিভাগের ইন্সপেকশন টিম যাচ্ছে। যেসব বাসায় এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যাচ্ছে সে সমস্ত বাসার এডিস মশার লার্ভা ধ্বংস করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে যাতে এডিস মশার লার্ভা না জমে সে জন্য প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমাদের টার্গেট রয়েছে, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ২৫ হাজার বাসা এডিস মশার লার্ভা মুক্ত করব। আমাদের নাগরিকদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল টিম ২৫ হাজারের বেশি রোগীকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ও বিনামূল্যে ওষুধ সরবরাহ করেছে।
মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে নির্মাণাধীন যেসব ভবন রয়েছে, সেসবের মধ্যে স্বাস্থ্যবিভাগ চিহ্নিত করেছে এমন নির্মাণাধীন ভবনে অন্যান্য এলাকা ও ভবনের তুলনায় এডিস মশার প্রজননস্থল অনেক বেশি। এ সমস্ত নির্মাণাধীন ভবনমালিককে বারবার সতর্ক করা হচ্ছে যাতে কোনোভাবে পানি জমে না থাকে। যেন এডিস মশার প্রজনন ক্ষেত্র না থাকে, লার্ভা না থাকে। কিন্তু অনেকেই তা শুনছেন না। আমরা ডিএসসিসির পক্ষ থেকে আমাদের মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করব। যদি ওই সব নির্মাণাধীন ভবনে এডিস মশা ও মশার লার্ভা পাওয়া যায় তাহলে আমাদের মোবাইল টিম আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
ডিএসসিসি মেয়র আরও বলেন, অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে আমি ভবনমালিক ও প্রতিষ্ঠানকে অনুরোধ করছি যত দ্রুত সম্ভব জমে থাকা পানি পরিষ্কার করুন, এডিস মশার প্রজননক্ষেত্র ধ্বংস করুন। এই শহরকে বাসযোগ্য নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে সহযোগিতা করুন।
মেয়র বলেন, আমাদের পাঁচটি আঞ্চলিক কর্মকর্তার ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার রয়েছে। এছাড়া নিজস্ব ম্যাজিস্ট্রেট রয়েছে। তারা অভিযান পরিচালনা করবে।
অনেক এলাকায় মোবাইলটিম যায়নি জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি বলছি না সব এলাকাতেই আমাদের মোবাইল মেডিকেল টিম পৌঁছে গেছে। আপনারা আমাদের জানান, আমরা সেখানে পাঠানোর উদ্যোগ গ্রহণ করব। আমাদের ৬৮টি মেডিকেল টিম ৫৭টি ওয়ার্ডে অবস্থান করছে। তাদের কাজ সাড়ে ৪০০ ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেয়া। এর সঙ্গে ক্র্যাশ প্রোগ্রামও চলছে।
স্বাস্থ্যবিভাগ, উত্তর ও দক্ষিণ সিটির মধ্যে সমন্বয়হীনতার অভিযোগ সম্পর্কে মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, আমাদের মধ্যে কোনো সমন্বয়হীনতা নেই। আজও উত্তরের মেয়রের সঙ্গে কথা হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে প্রতিনিয়ত কথা হচ্ছে। এলজিআরডি বিভাগের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মনে করে না পরিস্থিতি খুব উদ্বেগজনক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বাইরে যাওয়ার আগেই উত্তরণ সম্ভব। সেটা সবাইকে সঙ্গে নিয়েই করতে হবে।