নিজস্ব প্রতিবেদক:‘জ্ঞাত আয়ের সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ সম্পদ অর্জনের’ অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চিঠি পাওয়ার পর সোমবার (১১ নভেম্বর) রাজধানীর সেগুনবাগিচার দুদক প্রধান কার্যালয়ে উপস্থিত হয়েছিলেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী। এরপর দুদক কার্যালয় থেকে বের হয়ে সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তিনি। ওই সময়ে বিডিনিউজে থাকা তার শেয়ারের অংশ বিক্রি, পদ্মা ব্যাংক নিয়ে গুজব, সাংবাদিকতা এবং দুদকে তলবের বিষয়ে ব্যাখ্যা দেন বিডিনিউজের প্রধান সম্পাদক।
দুদক থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তৌফিক ইমরোজ খালিদী বলেন, আমি সময় চেয়ে আবেদন করেছিলাম, কিন্তু তারা আনুষ্ঠানিক কোনো উত্তর দেননি। আমি নিয়ম মানতে চেয়েছি। খবর পেয়েছি তদন্তকারী কর্মকর্তা এখনও এসে পৌঁছাননি। কিছুক্ষণ আগে তদন্তকারী কর্মকর্তার ঊর্ধ্বতন পরিচালক, তিনি জানিয়েছেন যে আজ বক্তব্য নেওয়া হবে না। আমি আইন-কানুন মেনে চলার চেষ্টা করি। যদি সময়সীমা না বাড়ানো হয় তাহলে কী হতো? আনুষ্ঠানিকভাবে যেহেতু জানানো হয়নি। কাজেই আমাকে আসতে হয়েছে।
তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পর্কে তৌফিক ইমরোজ খালিদী বলেন, ‘অভিযোগটা কী সেটাই আমি বুঝতে পারছি না। আমাকে বলা হয়েছে যে অবৈধ সম্পদ অর্জনের। যেটা হয়েছে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে একটি খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগ করেছে। এ বিনিয়োগের একটি অংশ হচ্ছে আমরা নতুন শেয়ার ইস্যু করে তাদের কাছে দিয়েছি। আরেকটি হচ্ছে আমার অল্প মালিকানা যতটুকু আছে সেখান থেকে বিক্রি করেছি। তাতে আমার একেবারে সম্পদহীন (নগদ) অবস্থা থেকে সম্পদ তৈরি হয়েছে। এতে অবৈধ সম্পদ অর্জন কী করে হলো? বাংলাদেশে নিবন্ধিত একটি কোম্পানি আমার শেয়ার কিনে নিয়েছে। এবং তারা মিউচুয়াল ফান্ড ম্যানেজ করে করেছে। আমাদের দিক থেকে সব আইন-কানুন মেনে এই বিনিয়োগ গ্রহণ করেছি। বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম কোনো গণমাধ্যম কোম্পানি, সংবাদ মাধ্যমে এই প্রথম এ ধরনের একটা বিনিয়োগ হয়েছে। আমার ধারণা কেউ কেউ এটা পছন্দ করেনি। আমার ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে যেটা বলা হয়েছে এটা অত্যন্ত বেদনার। যারা আমাকে চেনে, আমার সঙ্গে যারা কাজ করে, আমার সহকর্মী, আত্মীয়-স্বজন, আমার পরিবার আমার ধারণা তাদের সবার জন্য বেদনার।
তিনি বলেন, এ অভিযোগ ভিত্তিহীন মানে সীমাহীন ভিত্তিহীন। একেবারেই ভিত্তিহীন। আমার যেহেতু মালিকানা ছিল সেটার একটা অংশ বিক্রি করেছি। সেটা থেকে আমার অ্যাকাউন্টে কিছু টাকা এসেছে। ৩ অক্টোবর সব কাগজপত্র সই করা হয়েছে, ৬ অক্টোবর আমার অ্যাকাউন্টে টাকা এসেছে। সেই টাকার যে পরিমাণ আয়কর দিতে হবে তা আমি দেব। ২০১৯-২০ অর্থবছরের যে আয়কর হবে আমি সেটা দেব। আমাকে কেউ কোনো দিন বলতে পারবে না যে ঠিকমতো আয়কর দেইনি। একটা উদাহরণ দেখিয়ে কেউ বলতে পারবে না যে, আমি সারা জীবনে, যতদিন ধরে আমার আয়কর দেওয়ার সীমা এসেছে, কেউ বলতে পারবে না আমি আয়কর দেইনি। আমি জোর গলায় কথা বলছি, কারণ আমি নিয়ম-কানুন মেনে চলি। বাংলাদেশের যে আয়কর আইন আছে তা মেনে চলি। সব কিছু মেনে চলি। ৬ অক্টোবরের আগে আমার অ্যাকাউন্টে টাকা ছিল না। আমি আমার শেয়ার বিক্রি করেছি, এটা আমার অধিকার আছে। আমার নামে সম্পদ যা আছে সেটা বিক্রি করার অধিকার আমার আছে, সেটা আমি করেছি।
পদ্মা ব্যাংক প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘গুঞ্জন নিয়ে তো আমি কোনো কথা বলবো না। পদ্মা ব্যাংকের বিষয়ে একজনে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছে বলে আমি, শুনেছি। পদ্মা ব্যাংকের এমডিকে আমি চিনি না, তার নামও আমি জানি না। জানার চেষ্টাও করি না। খেয়াল করে দেখবেন ফেসবুকে যে পোস্ট দেওয়া হয়েছে সেই পোস্টের কোনো জবাবও দেইনি। জবাব দিতে আমার রুচিতে বেধেছে। কার সঙ্গে আমি ঝগড়া করবো, কোন টাইপের লোকের সঙ্গে আমি ঝগড়া করবো।’
এলআর গ্লোবাল আপনার প্রতিষ্ঠানে যে বিনিয়োগটা করেছে, কথা হচ্ছে এই প্রতিষ্ঠানটি বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে বিএসইসি কর্তৃক পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ, এরা বিনিয়োগ করতে পারে না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটা এসইসিকে জিজ্ঞেস করতে হবে। আমি জানি না এসইসি কর্তৃক নিষিদ্ধ কিনা। ওরা যখন আমার সাথে কন্ট্রাক্ট সাইন করতে আসে আমরা এক মাস ধরে আলোচনা করেছি। ওরা আমাদের প্রত্যেকটি হিসাব-নিকেশ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে দেখেছি।