অনলাইন ডেস্ক: স্বাভাবিক সৌন্দর্য অথবা উজ্জ্বল ত্বক যে কাউকে সহজে আকৃষ্ট করতে পারে।সৌন্দর্য সকলের অধিকার। শারীরিক সৌন্দর্যের অনেকটাই প্রকাশ পায় ত্বকের মাধ্যমে। শুধু তাই নয় ত্বক সুস্থ থাকলে নিজের মনেও এক ধরনের স্বস্তিকর অনুভূতি ছড়িয়ে পড়ে, যা প্রাত্যহিক কাজে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে শ্রমের উৎপাদনশীলতা বাড়াতে পারে।
রূপচর্চার জন্য আপনি কতকিছুই না করেন, কত মেকআপ কিংবা প্রসাধন সামগ্রীই না ব্যবহার করেন। কিন্তু আপনার জন্য সতর্কবার্তা হচ্ছে, অতিরিক্ত মেকআপে ত্বকের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। রূপ লাবণ্য ধরে রাখতে অথবা ত্বকে উজ্জ্বলতা আনতে কিছু স্বাস্থ্যকর পরামর্শ জেনে নিন।
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ক্রিম ব্যবহার করুন: আপনার মুখমণ্ডলে প্রথমে সানব্লক বা সানস্ক্রিন প্রয়োগ করুন। এরপর ডাবল প্রোটেকশন পেতে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন। এ ক্রিম ত্বকের ড্যামেজ, শুষ্কতা ও বলিরেখা প্রতিরোধে সাহায্য করে। আপনার ত্বকের সুস্থতার জন্য ভিটামিন ই বা বিটা ক্যারোটিন রয়েছে এমন ক্রিমও ট্রাই করতে পারেন।
সঠিক ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন: প্রতি মৌসুম চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আপনার ময়েশ্চারাইজারও পাল্টে ফেলুন। আপনার ত্বকে গরমকালের চেয়ে শীতকালে বেশি আর্দ্রতা প্রয়োজন হয়, তাই আপনি যেদিন শীতের কাপড় কিনতে যাবেন সেদিন শীতের প্রসাধনী সামগ্রীর সঙ্গে একটি বেশি আর্দ্রতাসম্পন্ন ময়েশ্চারাইজার কিনতে ভুলবেন না। আর্দ্রতার অভাবে ত্বক রুক্ষ ও অনুজ্জ্বল হয়ে পড়ে।
হিউমিক্ট্যান্ট সমৃদ্ধ ময়েশ্চারাইজার বেছে নিন: হিউমিক্ট্যান্ট ত্বকে প্রয়োগ করলে এটি পানি ধরে রেখে হাইড্রেশন বৃদ্ধি করে ও ত্বকের মেরামতে ভূমিকা রাখে। কিছু ভালো হিউমিক্ট্যান্ট হচ্ছে: গ্লিসারিন, প্রপাইলিন গ্লাইকোল ও উরিয়া। আলফা-হাইড্রোক্সি অ্যাসিড রয়েছে এমন স্কিন প্রোডাক্টেরও খোঁজ করতে পারেন- এ উপাদানটি বলিরেখা, ত্বকের শুষ্কতা, ব্রণ ও বয়সজনিত দাগের চিকিৎসায় সহায়ক। আঙুর, আপেল, সাইট্রাস ও টক দুধে (যেমন- বাটারমিল্ক ও দই) আলফা-হাইড্রোক্সি অ্যাসিড পাবেন, যা ত্বকের পুরোনো কোষ অপসারণ করে দ্রুত উজ্জ্বলতা আনে।
সঠিক স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট কিনুন: আপনি প্রচুর পরিমাণে বিভিন্ন ধরনের স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করলে কিছু প্রোডাক্টে একই উপাদান থাকার উচ্চ সম্ভাবনা রয়েছে, যার ফলে এসব উপাদানের অতি ব্যবহার হবে- যা আপনার ত্বককে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ায় ভোগাতে পারে, বলেন ম্যানহাটনের অ্যাস্থেটিশিয়ান কারা ডিসেনসো। এছাড়া আপনার ত্বক কিছু প্রোডাক্ট সহ্য নাও করতে পারে, যদিও প্রোডাক্ট ব্যবহার না করা পর্যন্ত এ বিষয়ে জানার উপায় নেই। আপনি সেসব প্রোডাক্ট ব্যবহার করতে পারেন যেগুলো একসঙ্গে কাজ করার জন্য তৈরি করা হয়েছে- এক্ষেত্রে বেশি অর্থ খরচ হলেও আপনার ত্বক পূর্বের তুলনায় উজ্জ্বল হবে।
সাধারণ সৌন্দর্য সামগ্রী ব্যবহার করুন: আপনার ত্বক বেশি সেনসিটিভ হলে সেসব বিউটি প্রোডাক্ট এড়িয়ে চলুন যেখানে রঙ, সুগন্ধি ও ফেনার উপাদান রয়েছে এবং লেবেলের ওপর অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল লেখা রয়েছে এমন প্রোডাক্টও ব্যবহার না করা ভালো, বলেন ফ্লোরিডার ডার্মাটোলজিস্ট আন্দ্রে লিন ক্যামবিও। এসবকিছু ত্বককে উক্ত্যক্ত করতে পারে।
টোনার ব্যবহারে কৌশলী হোন: আপনার টোনারে এক চা-চামচ গ্রেপসিড অয়েল যোগ করুন। এ অয়েল হচ্ছে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট (ভিটামিন সি, ভিটামিন ই) ও ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের উৎস, বলেন ডা. ব্রাউয়ার। তিনি আরো জানান, ‘গ্রেপসিড অয়েলের উপকারিতা নিয়ে খুব বেশি গবেষণা না হলেও আমরা জানি যে এসব ভিটামিন ও ফ্যাটি অ্যাসিড ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করতে পারে।’
সেজ, পিপারমিন্ট ও উইচ হ্যাজেলের কম্বিনেশন ব্যবহার করুন: সেজ ত্বকের তেল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, পিপারমিন্ট শীতল শিহরণ বা অনুভূতি দিতে পারে ও উইচ হ্যাজেল ত্বকের প্রতিরক্ষা স্তর পুনরুদ্ধারে সহায়তা করে। ত্বকে প্রয়োগের এক থেকে তিন দিন পূর্বে ৪ আউন্স উইচ হ্যাজেলের সঙ্গে ১ চা-চামচ সেজ ও ১ চা-চামচ পিপারমিন্ট মিশিয়ে স্টিপ করুন।
স্বাস্থ্যকর উপায়ে গোসল করুন: দীর্ঘসময় ধরে উষ্ণ পানিতে গোসল করলে অথবা বাষ্পায়িত স্নান নিলে ত্বকের আর্দ্রতা ও প্রতিরক্ষা তেল দূর হয়ে যায়, বলেন ডা. ক্যামবিও। এর পরিবর্তে সাধারণ ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল সেরে নেয়াই ভালো, কিন্তু গোসল করতে ১০ মিনিটের বেশি সময় নেবেন না।
ডিওডোরেন্ট সোপের পরিবর্তে অ্যাডেড ফ্যাট সোপ ব্যবহার করুন: আপনার ত্বকের জন্য ডার্মাটোলজিস্ট রিকমেন্ডেড কিছু সাবান হচ্ছে: ডাব সোপ, অয়েলাটাম সোপ ও নিউট্রোজেনা সোপ। ডিওডোরেন্ট সোপ ত্বককে শুষ্ক করতে পারে, অন্যদিকে অ্যাডেড ফ্যাট সোপ ত্বকের ওপর একটি উপকারী তৈলাক্ত আবরণ তৈরি করে।