নিজস্ব প্রতিবেদক: সাংবাদিক মনসুর আলীর স্মরণে শোক সভা করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন। শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর রুনি মিলনায়তনে এ শোকসভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনায় স্মৃতিচারণ করে বক্তারা বলেন, সাংবাদিকতার টানে মনসুর আলী ঢাকায় এসেছিল। আমরা আমাদের বন্ধু হারিয়েছি, পরিবারের সদস্য হারিয়েছি। আমরা আজ স্বজন হারানোর বেদনায় কষ্ট নিয়ে দিনযাপন করছি। যতদিন প্রাণ থাকে এই বেদনা আমাদের বয়ে বেড়াতে হবে।
সভার শুরুতে মনসুর আলীর স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে সংবাদ ও সাংবাদিকতা নিয়ে কাজ করা সংগঠন আর্টিক্যাল নাইনটিনের পক্ষ থেকে মনসুরের পরিবারকে সহায়তা হিসেবে এক লাখ ২০ হাজার টাকার চেক হস্তান্তর করা হয়। অ্যালামনাইর পক্ষ থেকে একটি ফান্ড করে মনসুরের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর কথা বলেন সদস্যরা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। এ ছাড়া অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য, সহকর্মীসহ সাংবাদিক মনসুর আলীর দুই ভাই উপস্থিত ছিলেন।
সভায় আরেফিন সিদ্দিক বলেন, আমরা অকাল প্রয়াত সাংবাদিক মনসুর আলীকে স্মরণ করতে আজ সমবেত হয়েছি। তার পরিবার প্রতিনিয়ত আহাজারি করছে। আমাদের আলোচনায় বারবার মনসুরের নাম আসবে। তবে মনসুর তো আর ফিরে আসবে না। আমরা তো আর তাকে ফিরে পাব না। ভবিষ্যতে মনসুর আলীর মতো এরকম মৃত্যুর সম্মুখীন অন্য কারও যেন হতে না হয়।
চবির যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি জসিম উদ্দিন খানের সভাপতিত্বে শোকসভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. আবদুর রাজ্জাক, চবি যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, আর্টিকেল নাইনটিনের বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ফারুখ ফয়সল প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, মনসুর আলীর বাড়ি সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জের কোটালপাড়ায়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে তিনি ঢাকায় এসে সরাসরি সাংবাদিকতায় যুক্ত হোন।
গত ১৬ নভেম্বর (শনিবার) সন্ধ্যায় মনসুর আলীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। রাজধানীর দক্ষিণ বনশ্রীর একটি বাসা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি ওই বাসায় ভাড়া থাকতেন।
তার মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) ফরেনসিক বিভাগের প্রভাষক প্রদীপ বিশ্বাস বলেন, ‘মনসুর আলীর শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন নেই। ভিসেরা পরীক্ষার জন্য তার ফুসফুস, হার্ট ও রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। মনসুর আলী হার্ট অ্যাটাকের কারণে মারা যেতে পারেন। তবে তার মৃত্যুর অন্য কোনো কারণ রয়েছে কি না, তা পরীক্ষার পর জানা যাবে।