অনলাইন ডেস্ক: গাম্বিয়ার আইনমন্ত্রী এবং অ্যাটর্নি জেনারেল আবু বকর মারি তামবাদু মিয়ানমারে রোহিঙ্গা গণহত্যার ন্যায়বিচার নিশ্চিতে গাম্বিয়াকে সহায়তা ও সমর্থন প্রদানে বিভিন্ন দেশের সরকার এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানানো হয়েছে। গাম্বিয়ার আইনমন্ত্রী আবু বকর তামবাদু এবং মিয়ানমার বিষয়ে কানাডার প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত বব রের সম্মানে দি হেগে আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানানো হয়।
সংবর্ধনায় গাম্বিয়ার আইনমন্ত্রী এবং অ্যাটর্নি জেনারেল আবু বকর মারি তামবাদু, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মো. শহিদুল হক, মিয়ানমার বিষয়ে কানাডার প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত বব রে, ওআইসির পরিচালক ড. হাসান আহমেদ আবেদীন, নেদারল্যান্ডসে নিযুক্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত ড. হিসা আব্দুল্লাহ আলোতায়েবা, সৌদি দূতাবাসের চার্জ দ্য এফেয়ার্স নাসের এ আলগানম এবং মালয়েশিয়া দূতাবাসের চার্জ দ্য এফেয়ার্স ড.মো হাম্মদ নুরহিসাম ইউসুফ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
দি হেগস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস, সৌদি দূতাবাস, সংযুক্ত আরব আমিরাত দূতাবাস এবং মালয়েশিয়া দূতাবাস যৌথভাবে এ সংবর্ধনার আয়োজন করে। এতে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রেসিডেন্ট, রাসায়নিক অস্ত্রনিরোধ সংস্থার (ওপিসিডব্লিউ) মহাপরিচালক, গাম্বিয়ার আইনি সহায়তাদল, ডাচ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত এবং প্রতিনিধি, দি হেগস্থ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি, ওআইসি প্রতিনিধি, আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন স্তরের অতিথিরা অংশগ্রহণ করেন।
পররাষ্ট্র সচিব তার বক্তব্যে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে পরিচালিত পরিকল্পিত নিধনযজ্ঞের প্রেক্ষিতে কীভাবে বাংলাদেশ যুগ যুগ ধরে তার দায় বহন করে চলেছে তার ইতিবৃত্তান্ত তুলে ধরেন। তিনি রোহিঙ্গা বিষয়ে বাংলাদেশের পাশে থাকার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ধন্যবাদ জ্ঞাপনের পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধের ন্যায়বিচার নিশ্চিতের লক্ষ্যে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
১৯৪৮’র গণহত্যা কনভেনশনের অধীনে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপনের জন্য তিনি গাম্বিয়ার প্রশংসা করেন এবং এর পেছনে সহায়তা প্রদানের জন্য ওআইসিকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
মিয়ানমার বিষয়ে কানাডার প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত বব রে
গাম্বিয়ার আইনমন্ত্রী আবুবকর তামবাদু তার বক্তব্যে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় প্রদান এবং সবরকম সহায়তা প্রদানের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন। আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আনীত মামলায় গাম্বিয়াকে সমর্থন এবং সহমত পোষণের জন্য তিনি ওআইসির প্রতি গভীর সন্তোষ প্রকাশ করেন।
তিনি মন্তব্য করেন যে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গাম্বিয়ার এই যুদ্ধ কেবলমাত্র দুটি দেশের একে-অপরের বিরুদ্ধে নয়, এটা মানবতার পক্ষে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের যুদ্ধ। রোহিঙ্গা গণহত্যার ন্যায়বিচারের স্বার্থে রাজনৈতিক, কূটনৈতিক এবং নৈতিক সমর্থন অব্যাহত রাখার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান তিনি জানান।
মিয়ানমারে কানাডার প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত বব রে গাম্বিয়াকে সম্ভাব্য সকল ধরনের সহায়তা প্রদানের বিষয়ে গত ৯ ডিসেম্বর কানাডা এবং নেদারল্যান্ডস সরকারের যৌথ বিবৃতির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বিভিন্ন দেশের সরকারকে গাম্বিয়ার সমর্থনে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
সংবর্ধনায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত, সৌদি এবং মালয়েশিয়া দূতাবাসের চার্জ দ্য এফেয়ারস এবং ওআইসি প্রতিনিধি রোহিঙ্গাদের আশ্রয় প্রদান এবং সবরকম সহায়তা প্রদানের জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করার পাশাপাশি গাম্বিয়ার প্রতি সমর্থনের নিশ্চয়তা প্রদান করেন।