শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫১ পূর্বাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান

দিল্লি নিয়ে চুপ, কলকাতায় ভোট চাইলেন অমিত শাহ

  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২ মার্চ, ২০২০
  • ২২০ বার পঠিত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কথা ছিল সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) ব্যাখ্যা দেওয়ার। গতকাল রবিবার কলকাতার সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সেই প্রসঙ্গ তুললেন, তবে অনেক পরে। পরিবর্তে ‘আর নয় অন্যায়’ শীর্ষক স্লোগান সামনে রেখে বাংলায় বিধানসভা ভোটের প্রচারের দামামা বাজিয়ে দিয়ে গেলেন তিনি। দিল্লির সাম্প্রতিক হিংসা বা পশ্চিমবঙ্গের আসন্ন পুরভোট নিয়ে খরচ করলেন না একটি শব্দও।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তৃতায় দিল্লির হিংসার প্রসঙ্গ না থাকায় তার সমালোচনায় সরব হয়েছে তৃণমূল, সিপিএম এবং কংগ্রেস। টুইট বার্তায় যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘দিল্লিতে আপনার নাকের ডগায় ৫০ জন নিরীহ মানুষের প্রাণ গেল। এখানে এসে জ্ঞান না দিয়ে তার জন্য ক্ষমা চাওয়া উচিত ছিল আপনার। বিজেপির ঘৃণার রাজনীতি ছাড়া ভাল আছে পশ্চিমবঙ্গ।’

সিপিএম নেতা মুহাম্মদ সেলিম বলেন, ‘দিল্লিতে এখনও পর্যন্ত ৪২ জনের দেহ পাওয়া গেছে। ২ জন পুলিশেরও মৃত্যু হয়েছে। দিল্লির হিংসা নিয়ে কোনো কথা নেই। মৃত্যুর জন্য দূঃখপ্রকাশ নেই।’

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র বলেন, ‘দিল্লিতে যা হল তার দায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর। তা নিয়ে কোনো কথা নেই।’

এদিনের সভায় বক্তৃতার শুরু থেকেই নির্বাচনী প্রচারের সুর ছিল বিজেপির সাবেক সভাপতির গলায়। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতার পরিবর্তনের দাবি করে তিনি বলেন, ‘আগামী বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে দুই তৃতীয়াংশ আসন পেয়ে ক্ষমতায় আসবে বিজেপি।’

ক্ষমতার এই হাতবদলের লক্ষ্যে এদিন রাজ্য বিজেপির ‘আর নয় অন্যায়’ স্লোগানের সূচনা করেন তিনি। সেই সঙ্গে একটি ফোন নম্বর দিয়ে সেখানে ‘মিসড কল’ দিয়েই বিজেপির পক্ষে সমর্থন জানানোর জন্য আহ্বান জানিয়েছেন বিজেপি সভাপতি।

যে সিএএ নিয়ে ব্যাখ্যাই ছিল শহিদ মিনার ময়দানে এদিনের সভার কেন্দ্রবিন্দু, তা নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তৃতায় নতুন কিছু ছিলও না। তিনি বলেন, ‘সংখ্যালঘুদের ভয় দেখানো হচ্ছে। বোঝানো হচ্ছে, এটা হবে, ওটা হবে। সব অধিকার চলে যাবে। পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যালঘু ভাইবোনেদের আশ্বস্ত করছি, কারও নাগরিকত্ব যাবে না। এটা নাগরিকত্ব দেওয়ার আইন।’

বিজেপি এই আইন কার্যকর করবেই, এ কথা জানিয়ে অমিত শাহ বলেন, ‘কাউকে কোথাও যেতে হবে না। হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, পার্সি, জৈন— বিজেপি সবাইকে নাগরিকত্ব দেবে।’

তৃণমূলের নেতা ফিরহাদ হাকিম পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, ‘আসামে কী হয়েছিল? ১২ লক্ষ হিন্দুর নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে। সে সম্পর্কে কিছু বলছেন না ওরা। বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে আন্দোলন চলছে। এখানে সিএএ-এনআরসি করতে দেওয়া হবে না।’ শাহ জানিয়ে দেন, বিজেপি সিএএ কার্যকর করবেই।

সিএএ এর বিরোধিতা করায় তৃণমূল, বাম ও কংগ্রেসকে আক্রমণ করেন তিনি। মমতাকে নিশানা করে শাহ বলেন, ‘সংসদে পাশ হওয়া আইনের বিরোধিতা করছেন মমতাদি। বাংলায় দাঙ্গা করিয়েছেন। ট্রেন, বাস জ্বালানো হয়েছে।’

এই বিরোধিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে অমিত শাহ বলেন, ‘মতুয়া আর নমশুদ্রদের নাগরিকত্ব দেওয়ার বিরোধিতা করেন করছেন? আপনি শুধু অনুপ্রবেশকারীদের পক্ষে?’ মমতাদি সংসদে অনুপ্রবেশের প্রসঙ্গ তুলেছিলেন। আজ যখন আইন পাশ হয়েছে তখন তিনিই ভোটব্যাঙ্কের জন্য তার বিরোধিতা করছেন। তিনি রবীন্দ্রনাথের ভাবনা, গান্ধীর আদর্শ, অম্বেডকরের সংবিধান আর বড়মা’র ( বীণাপানি দেবী ) ত্যাগের বিরোধিতা করছেন।’

তৃণমূলের ‘অন্যায়’ এর ব্যাখ্যা দিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলায় আইনশৃঙ্খলা বলতে কিছু নেই। সিন্ডিকেট আর তোলাবাজি চলছে। বোমা বিস্ফোরণ, লুঠ চলছে। ক্ষমতায় এলে দুর্নীতিগ্রস্তদের বেছে বেছে জেলে পাঠাব।’ সূত্র: আনন্দবাজার

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com