স্বাস্থ্য ডেস্ক, সিটিজেন নিউজ: রোজা শরীরের জন্য উপকারী। রোজার সময় খাবারের সময়সূচির পরিবর্তন হয়, অনেকক্ষণ না খেয়ে থাকতে হয়। এই পরিবর্তনের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে গিয়ে সাময়িক কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর মধ্যে অজ্ঞান হওয়া অন্যতম একটি। তবে কিছু বিষয় মেনে চললে এ সমস্যা সহজেই প্রতিরোধ করা যায়। আসুন আজ আমরা জেনে নেই রোজায় অজ্ঞান হওয়ার কারণ ও প্রতিকার।
রোজায় অজ্ঞান হওয়ার কারণ :
১. সেহরিতে সুষম খাবার না খাওয়া।
২. সেহরিতে কম খাওয়া বা না খাওয়া।
৩. অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস অবস্থায় রোজা রাখা।
৪. বেশি গরম পরিবেশে দীর্ঘ সময় কাজ করা।
৫. রোজা রেখে ক্লান্ত শরীরে দীর্ঘক্ষণ ভিড় আছে এমন জায়গায় থাকা।
৬. রোজায় দীর্ঘক্ষণ পরিশ্রমের ব্যায়াম করলে।
৭. আবেগজনিত হতাশা ও দুশ্চিন্তা।
৮. পানিশূন্যতা হলে।
৯. রক্তচাপ কমে গেলে।
অজ্ঞান লক্ষণ :
১. মাথাব্যথা
২. বমি বমি ভাব
৩. গরম গরম অনুভূতির সঙ্গে ঘাম হওয়া
৪. চোখে ঝাপসা দেখা এবং অত্যন্ত ক্লান্ত অনুভব করা।
অজ্ঞান হলে যা করবেন :
১. অজ্ঞান ব্যক্তিকে লম্বা করে সমতল স্থানে শুইয়ে দিন।
২. মাথা পেছনের দিকে সামান্য হেলিয়ে দিন, যেন মুখ খোলা থাকে। এতে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে সহজ হয়।
৩. বেশি গরম থাকলে বাতাসের ব্যবস্থা করুন। চোখে-মুখে পানির ঝাঁপটা দিন। পাশাপাশি রোগীকে যত দ্রুত সম্ভব নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে আনুন।
৪. শ্বাসনালী বন্ধ কি না দেখুন। শ্বাস বন্ধ থাকলে কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাস দিতে হবে।
৫. পড়ে গিয়ে কোথাও কেটে রক্তক্ষরণ হলে তা চাপ দিয়ে বন্ধ করুন।
৬. সাধারণত অজ্ঞান হওয়ার অল্প সময়ের মধ্যেই মানুষ আবার জ্ঞান ফিরে পায়। তবে বেশি সময় ধরে কেউ অজ্ঞান থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
প্রতিরোধের উপায় :
১. রোজাদারকে সেহরি ও ইফতারে আদর্শ সুষম খাবার খেতে হবে।
২. বেশি করে তরল খাবার, পানি, দুধ ও বাসায় বানানো ফলের শরবত খেতে হবে।
৩. ডায়াবেটিস, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণসহ অন্যান্য রোগ নিয়ন্ত্রণে রেখে রোজা রাখতে হবে।
৪. রোজা রেখে বেশি গরম ও বেশি ভিড় এড়িয়ে চলুন।
৫. বিশ্রাম নিয়ে নিয়ে কাজ করুন।
৬. সেহরিতে কম খেয়ে বা না খেয়ে রোজা রাখা যাবে না।
৭. শেষ মুহূর্তে সেহরি খেতে হবে। এতে সারা দিন শরীরে শক্তি থাকবে।
টিপস:
১. রোজা রেখে ক্লান্ত শরীরে একদিনে দীর্ঘক্ষণ ঈদ শপিং না করে অল্প অল্প করে শপিং শেষ করুন।
২. ইফতার ও সেহরির মধ্যবর্তী সময়ে পর্যাপ্ত পানীয় জাতীয় খাবার বেশি করে খান।
৩. অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ ও অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস অবস্থায় রোজা রাখলেও অজ্ঞান হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
৪. রোজায় সুস্থতার জন্য স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করা অত্যন্ত জরুরি। সেটি না হলে রোজাতে আমাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়তে পারে।