জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাবিত ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটকে আপদকালীন বাজেট ধরে ছয় মাসের মধ্যে পর্যালোচনার দাবি জানিয়ে বাজেটে স্বাস্থ্যখাতকে ঢেলে সাজানোসহ ১৩ দফা প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) দলটির ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি তুলে ধরেন পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন।
সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশার সঞ্চালনায় সম্মেলনে যুক্ত হন দলের পলিটব্যুরোর সদস্য আনিসুর রহমান মল্লিক, ড. সুশান্ত দাস, মাহমুদুল হাসান মানিক, নুর আহমেদ বকুল, হাজেরা সুলতানা, কামরূল আহসান, আমিনুল ইসলাম গোলাপ, অ্যাডভোকেট মুস্তফা লুৎফুল্লাহ, জ্যোতি শংকর ঝন্টু, বশিরুল আলম, এনামুল হক এমরান, নজরুল ইসলাম হাক্কানী, নজরুল হক নীলু প্রমুখ।
ওয়ার্কার্স পার্টির দেওয়া ১৩ দফা প্রস্তাব হলো: কোভিড-১৯ মোকাবিলায় ১০ হাজার কোটি টাকা থোক বরাদ্দ বাড়িয়ে সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যখাতের সুনির্দিষ্ট ব্যয়ের জন্য রাখা। চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী ও লকডাউন এলাকায় আইন-শৃঙ্খলায় নিয়োজিতসহ জনগণকে সহায়তা দেওয়ার জন্য আলাদা বরাদ্দ দেওয়া।
সার্বজনীন স্বাস্থ্যখাতে ক্ষমতাসীন দলের নির্বাচনী ইশতেহারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী স্বাস্থ্যখাতকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করা ও তার বাস্তবায়ন।
করোনাকালে বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সবার জন্য চিকিৎসা সহজলভ্য করা।
গার্মেন্টসসহ শিল্পখাতে শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ, ব্যাংক কর্মচারীসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বেতন ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা কর্তন নিষিদ্ধ করা, করোনা ঝুঁকিতে থাকা শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও চিকিৎসার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা মালিক ও শ্রমিকদের বহন করা এবং শ্রমিক এলাকায় পরীক্ষা যন্ত্র স্থাপন করা।
শিল্পক্ষেত্রে বরাদ্দ বৃদ্ধি করা এবং জুট ও টেক্সটাইল শিল্পে শ্রমিকদের পেনশন, গ্রাচ্যুইটিসহ সব বকেয়া পরিশোধের বরাদ্দ বাজেটে রাখতে হবে।
কৃষি উদ্বৃত্ত ফসল সরকার কিনে নেওয়া এবং তা গুদামজাত ও সংরক্ষণের জন্য পূর্ব প্রতিশ্রুত প্যাডি সাইলো নির্মাণ করা ও সমবায়ের ভিত্তিতে তার পরিচালনা করা, কৃষি যন্ত্রপাতি সমবায়ের ভিত্তিতে দেওয়া।
আগামী ছয় মাসের জন্য অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের পরিবার প্রতি বিনামূল্যে ১০ কেজি করে চালসহ খাদ্য সামগ্রী সরবরাহ ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকা করে সহায়তা দেওয়া।
সামাজিক নিরাপত্তাবলয় বৃদ্ধি করতে হবে।
ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও নৌ-সড়ক পরিবহন কর্মী এবং সাংবাদিক ও সংবাদকর্মীদের ঝুঁকিভাতা দেওয়া।
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য বিশেষ ঋণ তহবিল ঘোষণা।
শিক্ষাখাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি করা ও শিক্ষার্থীদের অনলাইন ক্লাসের জন্য ল্যাপটপ ও স্মার্টফোনের জন্য বিশেষ ঋণ তহবিল ঘোষণা করা, মোবাইল সারচার্জ ও ইন্টারনেট সারচার্জ প্রত্যাহার করা।
রাজস্ব আয়ের জন্য সম্পদ কর, অর্থ পাচারকারীদের মানিলন্ডারিং আইনে পাচারকৃত অর্থ বাজেয়াপ্ত ও তা ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা।
পূর্ব প্রতিশ্রুত ব্যাংক সংস্কার কমিশন গঠন ও ইউনিভার্সাল পেনশন স্কিম চালু করা।
সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, করোনাভাইরাসের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অভিঘাত কেবল এ বছরই নয়, আগামী দু’এক বছর বহাল থাকবে। জীবনকে রক্ষা করে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধিতে এগিয়ে নিতে সেই ধরনের পরিকল্পনা নিতে হবে।