সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৫:০৭ অপরাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান

নিজের মে’য়ের মতো করেই দিলেন গৃহকর্মীর বিয়ে

  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২ আগস্ট, ২০২০
  • ১৯০ বার পঠিত

নিউজ ডেস্ক: রাজধানী রামপুরার বাসিন্দা রুমানা মহসীন দিনা নিজের মেয়ের মতো করে জাঁকজমক পরিবেশে গৃহকর্মীর বিয়ে দিয়ে এক ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। করো’না’ভাই’রাস মহা’মা’রীর মধ্যেই ধুমধাম করে ১০ জুলাই গৃহকর্মী শারমিন আক্তারের বিয়ে দিয়েছেন তিনি।

বাসা ও ছাদ রঙিন বাতি দিয়ে সাজানো হয়। মেঝে-সিঁড়িতেও আল্পনা আঁকা হয়। পার্লার থেকে কনে সাজিয়ে আনা হয়। আগের দিন বাড়ির ছাদে শারমিনের গায়েহলুদের অনুষ্ঠান হয়। গান-বাজনা আর হাসি-উল্লাসে বাড়ির লোকজন ও আগতরা আনন্দে মাতেন।

গ্রামীণফোন কোম্পানির কর্মক’র্তা দিনার বাসায় প্রায় ১২ বছর আগে শারমিন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করে। এক সবজি বিক্রেতা তাকে দিনার বাসায় দিয়ে যান। দিনার দুই মেয়ে। বড় মেয়ে লাজিনা ও ছোট আমিরা। শারমিন যখন বাসায় আসে তখন আমিরা ছিল খুবই ছোট।

আপু (শারমিন) চলে যাচ্ছে তাই লাজিনা ও আমিরার মন খা’রাপ। কিছুতেই তারা আপুকে হারাতে চায় না। তাদের চোখে জল। আবেগ আপ্লুত দিনা বলেন, তার দুটি নয়, তিনটি মেয়ে। তার দুই মেয়ে শারমিনকে আপু ডাকে। একইসঙ্গে তারা খাবার খাওয়া, টিভি দেখা ও আনন্দ সবই করত।

দিনা জানান, ১৮ বছর বয়স হওয়ার পর থেকেই শারমিনের জন্য ভালো পাত্রের সন্ধান করে আসছি। স্বর্ণালঙ্কারসহ বিয়ের যাবতীয় জিনিস কিনে শারমিনকে ভোলায় তার মায়ের কাছে পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেখানে বিয়ে না করে শারমিন ঢাকায় চলে আসে। ঢাকার মায়ের (দিনা) পছন্দেই সে বিয়ে করবে। দু’বার পাঠানো হলে দু’বারই সে ঢাকায় চলে আসে।

অবশেষে আমা’র পছন্দেই শারমিনের বিয়ে দিলাম। বর মোহাম্ম’দ মন্জুর রংপুরের ছে’লে। তিনি বলেন, বড় মেয়ের বিয়ে দিলাম আমি। উন্নতমানের বিয়ের শাড়ি থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় সবই তিনি নিজ হাতে কিনেছেন। বিয়েতে ৪০ ইঞ্চি রঙিন টিভিসহ অনেক উপহার নিজ হাতে কিনেছেন দিনার স্বামী আজহারুল আকরাম।

শারমিনকে বরের হাতে তুলে দিয়ে দিনা, তার স্বামী ও মেয়েরা কেঁদেছেন, অন্যদেরও কাঁদিয়েছেন। অ’তিথিরাও আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন। শারমিনকে বিদায় দিয়ে দিনা বলেন, ঢাকা থেকে অনেক দূরে যাচ্ছে আমা’র মেয়ে…। কথাগুলো বলেই তিনি কাঁদতে থাকেন। পাশে থাকা তার (দিনা) শাশুড়ি মাহমুদা খাতুন ও মা মালেকা বেগমের চোখেও জল। কারণ শারমিনকে তারাও নিজের নাতনির মতোই দেখেন।

দিনা বলেন, যখন ভাবি শারমিন আমাদের পরিবারে নেই, তখন অনেক ক’ষ্ট হয়। তার অনুপস্থিতি আমাদের ক’ষ্ট দেয়। দুই মেয়ে বারবার খোঁজ নিচ্ছে তাদের আপুকে (শারমিন)।

তিনি বলেন, গৃহকর্মীকে যেন কেউ অ’ত্যা’চার-নি’র্যাত’ন না করেন। কারণ যারা গৃহকর্মীকে নি’র্যা’তন করে সেই পরিবারের সন্তানরা কখনও আদর্শ মানুষ হতে পারে না। গৃহকর্মীর ওপর নির্যা’ত’নের খবর যখন শুনি-তখন ভাবি মানুষ এত নি’ষ্ঠুর কেন?

সূত্র: ইন্ডিপেন্ডটনিউজবিডি ডটকম

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com