ধর্ম ডেস্ক : মর্যাদার মাস জিলহজের গুরুত্বপূর্ণ ৭টি আমল রয়েছে। অন্যান্য মাসের তুলনায় এ মাসের মর্যাদা যেমন বেশি, তেমনি এ মাসে বিশেষ কিছু ইবাদত বেশি বেশি করার গুরুত্বও বেশি। কেননা এ মাসকে লাইলাতুল কদরের সমতুল্য। হাদিসে এসেছে-
জিলহজ মাসের প্রথম দশকের ফজিলত সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, এমন কোনো দিন নেই যে দিনগুলোর ইবাদত আল্লাহর কাছে জিলহজের প্রথম দশকের ইবাদত থেকে অধিক প্রিয়। জিলহজের প্রথম দশকের প্রত্যেক দিনের রোজা এক বছরের রোজার সমতুল্য। আর প্রত্যেক রাতের ইবাদত লাইলাতুল কদরের ইবাদতের সমতুল্য। (তিরমিজি)
গুরুত্বপূর্ণ ৭ আমল
কুরবানির আগে মুসলিম উম্মাহর জন্য মর্যাদার এ দশকে গুরুত্বপূর্ণ ৭টি আমল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাহলো-
১. কুরআন তেলাওয়াত করা : কুরবানির আগে বেশি বেশি কুরআন তেলাওয়াত করা এ দশকের গুরুত্বপূর্ণ আমল। এমনিতেই যতবেশি সম্ভব কুরআন পড়া উত্তম। আল্লাহ তাআলা এ দিনগুলোতে বেশি বেশি ভালো কাজ করা বা ইবাদত করাকে ভালোবাসেন। যদি কেউ সুযোগ না পায়; অল্প হলেও কুরআন তেলাওয়াত করা।
২. নফল নামাজ বাড়িয়ে পড়া : প্রতিদিনের ফরজ নামাজের সঙ্গে সঙ্গে কুরবানির এ দশকে যতবেশি সম্ভব নফল নামাজ পড়া উত্তম। তাই ভালো কাজ করার সঙ্গে সঙ্গে বেশি বেশি নফল নামাজ পড়া। তা হতে পারে ইশরাক, চাশত, তাহাজ্জুদসহ দিন ও রাতের যে কোনো সময়ে নফল নামাজ।
৩. জিকির করা : দিনভর চলাফেরা-ওঠাবসায় বেশি বেশি জিকির করা। কেননা এ দশকের তাকবির, তাহলিল, তাহমিদ- মূলত এগুলো সবই মহান আল্লাহ তাআলার জিকির। এ জন্য বেশি বেশি জিকির ও তাসবিহ পড়া। বিশেষ করে-
> اَللهُ اَكْبَر আল্লাহু আকবার; আল্লাহ মহান।
> اَلْحَمْدُ للهِ আলহামদুলিল্লাহ ; সব প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
> لَا اِلَهَ اِلله লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ ; আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই।
> سُبْحَانَ الله সুবহানাল্লাহ ; মহান আল্লাহ পবিত্র।
৪. রোজা রাখা : কুরবানির আগ পর্যন্ত রোজা রাখা। বিশেষ করে আরাফার দিনে রোজা পালনের মর্যাদা অনেক বেশি। এ দিনগুলোতে রোজা পালনকে সারা বছর রোজা রাখার সাওয়াবের ঘোষণা এসেছে হাদিসে। তাই কুরবানির আগে রোজা রাখা উত্তম।
৫. দান করা: দান করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ আমল। হাদিসের অনেক বর্ণনায় দনের ফজিলত ঘোষণা করা হয়েছে। কুরবানি ও হজের মাসেও দানের মর্যাদা অনেক বেশি। তাই দানের ক্ষেত্রে দেরি না করে সাধ্যমতো দান করাকেও উত্তম আমল বলেছেন বিশ্বনবি।
৬. ঈদুল আজহার নামাজ পড়া: ঈদের দিন সকাল সকাল ঈদুল আজহার নামাজ পড়ার গুরুত্ব ও ফজিলত অনেক বেশি। ঈদের দিন সুন্নাতের অনুসরণে নামাজ পড়া কথা বলেছেন প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
৭. কুরবানি করা: ঈদের নামাজ পড়েই এ দিন আল্লাহর জন্য পশু কুরবানি করা। কুরবানির ক্ষেত্রে এ কথা স্মরণ রাখা যে, এ কুরবানি মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দার জন্য এক মহা নির্দশন। কুরবানির পশুর রক্ত, পশম কোনো কিছুই মহান আল্লাহর কাছে পৌঁছে না। বরং পৌছে বান্দার নিয়ত। সে কারণে যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে বিশুদ্ধ নিয়তে কুরবানি দেওয়া।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরবানি করার আগ পর্যন্ত উল্লেখিত আমলগুলো যথাযথভাবে আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।