মুলতান ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুক্রবার দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১২০ রানে হারিয়েছে পাকিস্তান। ২৭৫ রানের পুঁজি গড়ে ক্যারিবিয়ানদের তারা গুটিয়ে দেন স্রেফ ১৫৫ রানে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এই নিয়ে টানা ১০টি ওয়ানডে সিরিজ জিতল পাকিস্তান। এ জয়ের ফলে তিন ম্যাচের সিরিজে ২-০ তে এগিয়ে পাকিস্তান।ম্যান অব দা ম্যাচ: মোহাম্মদ নওয়াজ।
টস জিতে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তানের শুরুটা ভালো ছিল না। ১৭ রান করে সপ্তম ওভারে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন ফখর জামান। অবিশ্বাস্য ধারাবাহিকতায় যথারীতি আবারও বড় জুটি গড়ে তোলেন ইমাম ও বাবর। ইমাম ৫২ বলে পূরণ করেন ফিফটি। এই সংস্করণে টানা ছয় ইনিংসে পঞ্চাশ স্পর্শ করলেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
১২০ রানের জুটি ভাঙে দুই ব্যাটসম্যানের ভুল বোঝাবুঝিতে ইমামের রান আউটে। ৬টি চারে গড়া তার ৭২ রানের ইনিংসটি। ওয়ানডেতে টানা চার ও সব মিলিয়ে আটটি শতরানের জুটি হলো ইমাম ও বাবরের। এই সংস্করণে পাকিস্তানের হয়ে তাদের চেয়ে বেশি শতরানের জুটি আছে কেবল মোহাম্মদ ইউসুফ ও ইউনিস খানের, ৯টি।
৬৭ বলে পঞ্চাশ ছুঁয়ে বাবর ছুটছিলেন ওয়ানডেতে কুমার সাঙ্গাকারার টানা চার সেঞ্চুরির বিশ্বরেকর্ডের দিকে। কিন্তু ২৩ রানের জন্য পারেননি তিনি। ৫ চার ও একটি ছক্কায় সাজানো ৭৭ রানের ইনিংস থামে স্পিনার আকিল হোসেনকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে। পেছনে ফেলেন স্বদেশী জাভেদ মিয়াঁদাদকে, ৮টি।
বাবরের বিদায়ে এলোমেলো হয়ে যায় পাকিস্তান। ২ উইকেটে ১৮৭ থেকে দ্রুতই তাদের স্কোর হয়ে যায় ৬ উইকেটে ২০৭। মোহাম্মদ হারিস, মোহাম্মদ রিজওয়ান ও নওয়াজ টিকতে পারেননি। শাদাব খান ও খুশদিল শাহ দুই জনই ফেরেন ২২ রান করে। এরপর মোহাম্মদ ওয়াসিমের ১৩ বলে ১৭ ও শাহিন শাহ আফ্রিদির ৬ বলে ১৫ রানের অপরাজিত দুটি ইনিংসে পৌনে তিনশ করতে পারে স্বাগতিকরা।
৫২ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সফলতম বোলার আকিল। আলজারি জোসেফ ও অ্যান্ডারসন ফিলিপ নেন ২টি করে উইকেট।
জবাবে প্রথম ওভারেই ধাক্কা খায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান শেই হোপকে বিদায় করে দেন আফ্রিদি। দ্বিতীয় উইকেটে কাইল মেয়ার্স ও শামার ব্রুকসের দারুণ জুটি লড়াইয়ে রাখে সফরকারীদের। দুই জনই খেলেন দারুণ সব শট। কিন্তু ৫৪ বলে ৬৭ রানের জুটি ভাঙতেই পথ হারিয়ে ফেলে ক্যারিবিয়ানরা। ২৫ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ৩৩ রান করা মেয়ার্সকে বোল্ড করে দেন মোহাম্মদ ওয়াসিম।
এরপর বাঁহাতি স্পিনার নওয়াজ একে একে বিদায় করেন ব্রান্ডন কিং (০), ব্রুকস (৪২), রভম্যান পাওয়েল (১০) ও নিকোলাস পুরানকে (২৫)। রোমারিও শেফার্ডকে টিকতে দেননি লেগ স্পিনার শাদাব। ১ উইকেটে ৭১ থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর তখন ৭ উইকেটে ১২০! এরপর পরাজয়ের ব্যবধানই কেবল কমাতে পারে তারা। শেষ ৩ উইকেট হারায় ১০ রানের মধ্যে।
ওয়াসিম ৩৪ রানে নেন ৩ উইকেট। ৪০ রানে শাদাবের প্রাপ্তি ২টি।
এই জয়ে রান রেটে ক্যারিবিয়ানদের পেছনে ফেলে ক্রিকেট বিশ্বকাপ সুপার লিগে চার নম্বরে পাকিস্তান (৮০)। তাদের চেয়ে এগিয়ে আছে কেবল বাংলাদেশ (১২০), আফগানিস্তান (১০০) ও ইংল্যান্ড (৯৫)। আগামী রোববার ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর চ্যালেঞ্জ।