ফাইনালে দুর্দান্ত এক স্পেল, যা সহজ করে দেয় ইংল্যান্ডের বিশ্ব শিরোপা জয়ের পথ। ম্যাচসেরা পুরস্কার পাবেন তা অনুমেয় ছিল। কিন্তু ইতিহাসের প্রথম পেসার হিসেবে স্যাম কুরান জিতেছেন বিশ্বকাপের টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কারও।
ফাস্ট বোলার মানেই ২২ গজে তুলবে গতির ঝড়। ত্রাস ছড়াবে প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানের মনে। বর্তমান সময়ে জোফরা আর্চার, নরকিয়া, বুমরাহ, লোকি ফার্গুসন কিংবা হারিস রউফ। এই বোলাররা সমীহ পায় যে কোনো ব্যাটসম্যানের।
যদিও এই তালিকায় কখনোই ছিল না স্যাম কুরানের নাম। অবশ্য গতি না থাকলেও বলের সুইং দিয়ে নজর কাড়েন অল্প বয়সেই। বাবা কেভিন কুরান জিম্বাবুয়ে জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন। স্যাম নিজেও জিম্বাবুয়ে অনূর্ধ্ব-১৩ দলেও প্রতিনিধিত্ব করেছেন। কিন্তু নিয়তি ভিন্ন কিছুই লিখে রেখেছিল।
ইংল্যান্ডে এসে সারে কাউন্টির বয়সভিত্তিক ও মূল দলের হয়ে নজরকাড়া পারফর্ম করেন। এরপর পর্যায়ক্রমে সুযোগ আসে জাতীয় দলে খেলার। চার বছরের ক্যারিয়ারে থ্রি লায়ন জার্সিতে প্রথম বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ আসে অস্ট্রেলিয়ায়। আর কি দারুণ অভিষেকটাই না হয় এই বাঁহাতি মিডিয়াম পেসারের। বিশ্বকাপ অভিষেকেই ক্যারিয়ারের প্রথম পাঁচ উইকেট শিকার, পেয়ে যান প্রথম ম্যাচসেরাও।
এরপর আর পিছে ফিরে তাকাতে হয়নি স্যাম কুরানকে। ভারতের বিপক্ষে কিছুটা খরুচে বোলিং করলেও ফাইনালে তা পুষিয়ে দেন করায় গন্ডায়। মেলবোর্নের সিমিং কন্ডিশনে, তাকে খেলতে রীতিমতো ধুঁকেছে পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানরা। ৪ ওভারে ডট বল দিয়েছেন ১৫টা। উইকেট তুলে নেন রিজওয়ান-শান মাসুদ-নওয়াজের।
ফাইনালে তিন উইকেটসহ পুরো আসরে কুরানের শিকার ১৩ উইকেট। শুধু সুপার টুয়েলভের হিসেব করলে, বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি ২৪ বছর বয়সী এই মিডিয়াম পেসারের। পুরো আসরে ওভার প্রতি রান দিয়েছেন সাড়ে ৬। এমন পারফরম্যান্স কারই বা নজর এড়াবে। তাই তো বিশ্বকাপ ইতিহাসে এমন এক নজির গড়ে ফেলেন, যা আগের আসরগুলোতে দেখা যায়নি।
এই প্রথমবারের মতো কোনো পেসারের হাতে উঠল টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার। চ্যাম্পিয়ন দলের ক্রিকেটারের হাতে ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্টের স্বীকৃতি সচরাচর দেখা যায় না। তৃতীয় ক্রিকেটার হিসেবে যে নজির গড়লেন কুরান। কাকতালীয়ভাবে এক যুগ আগে, ইংল্যান্ডের প্রথম শিরোপা জয়ের পথেও আসর সেরা হয়েছিলেন থ্রি লায়ন ক্রিকেটার কেভিন পিটারসেন।