‘এই রূপালি গিটার ফেলে একদিন চলে যাব দূরে, বহুদূরে। সেদিন তুমি অশ্রু চোখে রেখ গোপন করে।’ রূপালি গিটার ফেলে ঠিকই চলে গেছেন আইয়ুব বাচ্চু। কিন্তু রেখে গেছেন স্মৃতি। চট্টগ্রাম নগরের প্রবর্তক মোড়ে স্থাপিত রূপালি গিটারটি আজও নাড়া দিয়ে যায় তার ভক্তদের মনে।
গিটারটি দেখে অশ্রু চোখে গোপন করে পথ পেরিয়ে যান ভক্তরা। কিন্তু স্বয়ং গিটারের নিচেই অশ্রু চোখে নিজেকে গোপন করছেন আরো একজন! তিনি বাচ্চু ভক্ত কিনা জানা না গেলেও, এটুক বলা চলে- তিনি জীবনযুদ্ধে লড়ে যাওয়াদের একজন।
আইয়ুব বাচ্চুর স্মৃতিচিহ্ন হয়ে থাকা এ গিটারকে আশ্রয় করে বেঁচে থাকার চেষ্টা করে যাচ্ছেন পয়ত্রিশোর্ধ্ব আমিন। শীতের এ রাতে গিটারটিই তার আশ্রয়স্থল। কাগজ আর ছেঁড়া কাপড় জড়ো করে গিটারের নিচেই বিছানা পাতেন আমিন। আর সকাল হলেই চলে যান কাজে।
আমিনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চট্টগ্রাম নগরে চলাচলকারী বাসে হেলপার হিসেবে কাজ করেন তিনি। কিন্তু কখনো কাজ জুটে, আবার কখনো জুটে না; দুয়ের মাঝে হয় না বাসা ভাড়া জোগাড়। ফলে আইয়ুব বাচ্চুর রূপালি গিটারের ভাস্কর্যটিকেই আশ্রয়স্থল হিসেবে বেছে নিয়েছেন তিনি।
শীতে একটু কষ্ট হলেও মানিয়ে নিয়েছেন বলে জানান আমিন। তবে বাড়ি কোথায় কিংবা কে কে আছেন বাড়িতে, এসব কিছুই জানাতে চাননি তিনি।
বাংলাদেশের ব্যান্ড সঙ্গীতাঙ্গনে গিটারের জাদুকর হিসেবে খ্যাত আইয়ুব বাচ্চু ২০১৮ সালের ১৮ অক্টোবর না ফেরার দেশে পাড়ি জমান। আইয়ুব বাচ্চুর শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে তার স্মৃতি সংরক্ষণ করার উদ্যোগ প্রকাশ করেছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের তৎকালীন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। সে অনুযায়ী পরের বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর প্রবর্তক মোড়ে ভাস্কর্যটি উদ্বোধন করা হয়। তার একটি জনপ্রিয় গানের শিরোনাম অনুসারে ভাস্কর্যটির নাম রাখা হয়েছে ‘রূপালি গিটার’।