বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৭ অপরাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান

পেঁয়াজের দাম হঠাৎ কেন বেড়ে গেল?

  • আপডেট টাইম : শনিবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০২৩
  • ৬০ বার পঠিত

মাত্র একরাতের ব্যবধানের দেশের বাজারে পাইকারিতেই ভারতীয় পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ৮০ টাকা পর্যন্ত এবং দেশি পেঁয়াজের কেজি বেড়েছে ৬০ টাকা। মূলত ভারতের অভ্যন্তরীণ বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ ও দাম নিয়ন্ত্রণের রাখতে নিত্যপণ্যটির রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। যার প্রভাবেই দেশের বাজারে আবারও ঝাঁজ ছড়াচ্ছে পেঁয়াজ।

বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) ভারতের ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফরেন ট্রেড বা বৈদেশিক বাণিজ্যবিষয়ক মহাপরিচালকের কার্যালয় জানিয়েছে, আগামী বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ থাকবে। এই নির্দেশনা শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) থেকে কার্যকর হবে।

রফতানি নীতি সংশোধন করে পেঁয়াজ রফতানির ওপর এই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ভারতের ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফরেন ট্রেড।

এর আগে দাম স্থিতিশীল রেখে স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়াতে গত ২৯ অক্টোবর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পেঁয়াজ রফতানিতে ন্যূনতম রফতানি মূল্য প্রতি মেট্রিক টনে ৮০০ ডলার আরোপ করা হয়েছিল।

পেঁয়াজ রফতানির ওপর ভারতের এই নিষেধাজ্ঞার পর বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে হু হু করে বাড়তে থাকে দাম। মাত্র একরাতের ব্যবধানে শনিবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর শ্যামাবাজার, হাতিরপুল, কারওয়ানবাজারসহ বেশ কয়েটি বাজারে সরেজমিনে দেখা গেছে, ভারতীয় পেঁয়াজের দাম পাইকারি বাজারে কেজিতে বেড়ে গেছে ৮০ টাকা পর্যন্ত আর দেশিতে বেড়েছে ৬০ টাকা।

এক্ষেত্রে বিক্রেতারা জানান, বাজারে চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত পেঁয়াজ নেই। পাশাপাশি পেঁয়াজ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ভারত। এতে নতুন করে বাড়ছে দাম।

পাইকাররা জানান, গতকাল যে মানের ভারতীয় পেঁয়াজ রাজধানীর শ্যামাবাজারে বিক্রি হয়েছে ১০২ টাকা থেকে ১০৫ টাকা কেজি দরে, আজ তা বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা থেকে ১৮৫ টাকায়। দেশি পুরনো পেঁয়াজের দাম একরাতে ৬০ টাকা বেড়ে আজ সকাল থেকে বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকা কেজি দরে। আর দেশি নতুনের দাম ১০৫ টাকা থেকে ঠেকেছে ১৪০ টাকায়।

তবে বাজারের এই অস্থিরতাকে সাময়িক বলছেন তারা। বাজারে পেঁয়াজ কম। পাশাপাশি ভারতের পেঁয়াজ রফতানির নিষেধাজ্ঞার খবরে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী দাম বাড়াচ্ছেন বলেও অভিযোগ পাইকারি ব্যবসায়ীদের। নতুন পেঁয়াজ পুরোদমে ওঠা শুরু হলে দাম কমে যাবে বলেও মত তাদের।

পুরান ঢাকার শ্যামবাজারের মেসার্স আহসান বাণিজ্যালয়ের আক্কাস জোয়ার্দার বলেন, ভারতে পেঁয়াজের দাম বেশি। শিগগিরই নতুন পেঁয়াজ উঠবে। তাই আমদানিকারকরা পেঁয়াজ আমদানি কমিয়ে দিয়েছেন। পাশাপাশি পেঁয়াজ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ভারত। তাই সরবরাহ কিছুটা কম থাকায় পেঁয়াজের দাম সাময়িক বেড়েছে।

তিনি বলেন, দেশি পেঁয়াজ বাজারে আসতে শুরু করেছে। আবহাওয়ার কারণে কিছুটা বিঘ্ন ঘটেছে। এক সপ্তাহের মধ্যেই দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে গেলেই দাম আবার কমে যাবে।

পেঁয়াজ আমদানিকারক ও শ্যামবাজার পেঁয়াজ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল মাজেদ বলেন,

ভারত পেঁয়াজ রফতানি নিষেধাজ্ঞা দেয়ায় এর প্রভাব পড়বে দেশের বাজারে। এমনিতেই বাজারে দাম ঊর্ধ্বমুখী। নিষেধাজ্ঞার এ খবরে দাম আরও বাড়ছে।

তবে পেঁয়াজের এই ঊর্ধ্বমুখী বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের কঠোর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন ক্রেতারা। তাদের দাবি, ভারতের পেঁয়াজ রফতানি নিষেধাজ্ঞাকে পুঁজি করে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এই সিন্ডিকেট না ভাঙলে আবারও ৩০০ টাকা ছাড়াতে পারে দাম।

দেশের কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্র অনুসারে, গত ২ বছরে দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন বেড়েছে ১০ লাখ টন। দুই বছরে আগে যেখানে উৎপাদন হতো ২৫ লাখ টনের মতো, এখন উৎপাদন হচ্ছে ৩৫ লাখ টন। পেঁয়াজের সংগ্রহ থেকে শুরু করে ভোক্তা পর্যন্ত পণ্যটি পৌঁছাতে বিভিন্ন ধাপে অপচয় ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ বাদে গত বছর নিট উৎপাদন হয়েছে ২৪ দশমিক ৫৩ লাখ টন। বাংলাদেশে পেঁয়াজের চাহিদা বছরে প্রায় ২৮ থেকে ৩০ লাখ টন। এই চাহিদা মেটাতে ২০২১-২২ অর্থবছরে ৬ দশমিক ৬৫ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com