প্রয়োজনীয় খাদ্যের অভাবে গাজায় সামাজিক রীতিনীতি ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে আহতদের চিকিৎসাসেবাও। অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার এই বেহাল দশায়ও হামলা বন্ধ করেনি ইসরায়েল। গতকাল সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ছাড়িয়েছে ১৮ হাজার ২০০। এ অবস্থায় আশঙ্কা করা হচ্ছে, সীমান্তের বাধা উপেক্ষা করে মিসরে চলে যেতে পারে বিপুলসংখ্যক গাজাবাসী।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, গাজায় ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছে ১৮ হাজার ২০৫ জন, যার অর্ধেকেরই বেশি শিশু ও নারী। এ ছাড়া ইসরায়েলি হামলায় আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে অর্ধলক্ষ। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় নিয়মিত আপডেটে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৫০ হাজার মানুষ আহত হয়েছে।
জাতিসংঘের বিশেষায়িত সংস্থা ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম (ডব্লিউএফপি) জানিয়েছে, গাজার ২৩ লাখ বাসিন্দার প্রায় সবাইকেই ঘরছাড়া হতে হয়েছে ইসরায়েলি হামলার কারণে। তাদের প্রায় অর্ধেকই এখন অনাহারে।
গাজায় শরণার্থীদের নিয়ে কাজ করা জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠান ইউএনআরডব্লিউএ গাজায় তীব্র খাদ্যসংকটের কথা উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে জানিয়েছে, ‘ক্ষুধা সবাইকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে।’ সংস্থাটি জানিয়েছে, এ অবস্থায় গাজায় সামাজিক মূল্যবোধ, রীতিনীতি ভেঙে পড়েছে। শরণার্থী শিবির পালিয়ে মিসরের দিকে চলে যাওয়ার ঝোঁক বাড়ছে।
সংস্থাটি জানিয়েছে, গাজার মানুষ কেবল খাবারের অভাব বোধ করছে তা নয়, নিরাপদ আশ্রয় না থাকায় তীব্র শীতেও তারা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। প্রয়োজনীয় খাবার তো নেইই, যা-ও বা আছে, তার মূল্য এত বেশি যে তা প্রায় সবারই নাগালের বাইরে। এই অবস্থায় অবরুদ্ধ অঞ্চলটিতে সামাজিক রীতিনীতির ভাঙন দেখা দিয়েছে। লুট, ডাকাতির মতো কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে।
এই অবস্থায় জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে গাজায় মানবিক যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে একটি প্রস্তাব উত্থাপিত হতে যাচ্ছে আজ মঙ্গলবার। এই প্রস্তাবটি গত রোববার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে যে প্রস্তাবটি উত্থাপন করা হয়েছিল তার অনুরূপ। নিরাপত্তা পরিষদে এই প্রস্তাব বাস্তবতা বিবর্জিত বলে ভেটো দেয় যুক্তরাষ্ট্র। ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকে যুক্তরাজ্য।