রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন বলেছেন, দরিদ্রদের চিকিৎসা সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। তারা যেন চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত না হয় বা অর্থের অভাবে অবহেলিত না হয় এটি নিশ্চিত করতে হবে। দেশের বিশাল জনগোষ্ঠীর জন্য মানসম্পন্ন চিকিৎসা প্রদান করা একটি চ্যালেঞ্জ। কিন্তু সরকার এরই মধ্যে উন্নত চিকিৎসার জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। এর ফলে স্বাস্থ্য খাতে ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে।
শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘চতুর্থ আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলন-২০২৪’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
রাষ্ট্রপতি বলেন, অবৈধ হাসপাতাল-ক্লিনিক বা ভুয়া চিকিৎসকদের দ্বারা কেউ যেন প্রতারিত না হয়- সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। কিছু কিছু ভুয়া চিকিৎসক ও চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের কারণে সমগ্র চিকিৎসক সমাজের সততা ও সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে।
চিকিৎসকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, চিকিৎসা একটি মহৎ পেশা। রোগীদের সঙ্গে সদয় আচরণ করুন। রোগীর মর্যাদা ও গোপনীয়তা রক্ষার জন্য সর্বোচ্চ সাবধানতা অবলম্বন করুন। বিশাল জনগোষ্ঠীকে চিকিৎসা প্রদানে চিকিৎসক ও নার্সদের আরো আন্তরিক হতে হবে। গুটিকয়েক অসাধু লোক, ভুয়া চিকিৎসক ও অবৈধ চিকিৎসা কেন্দ্রের কারণে মানুষের মনে যেন কোনো নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি না হয়- সে ব্যাপারে আপনারা সতর্ক থাকবেন।
দেশের জনসংখ্যা অনুপাতে চিকিৎসক ও নার্সের সংখ্যা অপ্রতুল উল্লেখ করে দেশের সার্বিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাত ও চিকিৎসকদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান মো. সাহাবুদ্দিন।
বাংলাদেশের চিকিৎসকদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আস্থার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশে অনেক বিশ্বমানের চিকিৎসক রয়েছেন, যাদের ওপর নির্ভর করা যায়। বাংলাদেশে বিনামূল্যে কোভিড-১৯ টিকাদান কর্মসূচি সারাবিশ্বে রোল মডেল তৈরি করেছে। এজন্য সেবাখাতের সংশ্লিষ্ট সবাই প্রশংসার দাবিদার।
আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনের আয়োজকদের প্রশংসা করে রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, দেশি-বিদেশি বিশিষ্ট হৃদরোগ বিশেষজ্ঞদের অংশগ্রহণ ও মতবিনিময় চিকিৎসকদের, বিশেষ করে তরুণ চিকিৎসকদের পেশাগত দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধকরণে সহায়ক হবে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পর পরই যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা সম্প্রসারণের যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্বাস্থ্য খাতে ‘রূপকল্প-২০৪১’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে চিকিৎসকদের কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। প্রতিটি নাগরিকের জন্য দূষণমুক্ত ও পরিবেশ-বান্ধব একটি সুস্থ জীবন নিশ্চিত করে কল্যাণমূলক সমাজ ও রাষ্ট্র গঠন করাই সরকারের লক্ষ্য। আধুনিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকার নতুন হাসপাতাল ও নার্সিং ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ, ইন্টারভেনশনাল একাডেমির কোর্স চেয়ারম্যান ডা. রাজেশ এম দেব, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ, বাংলাদেশ কার্ডিওভাসকুলার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. এস এম মোস্তফা জামান প্রমুখ।