মাসুদ পারভেজঃ রূপায়ণ হাউজিং এস্টেট লিঃ এর কর্ণধার এল এ মুকুল ও তার ভাই আলী আকবর খান রতন এর বিরুদ্ধে এলাকার সহস্রাধিক ভুক্তভোগী মানববন্ধন করেন। আজ সকাল ১১ টায় উত্তরা ১২ নং সেক্টর খালপাড় “রূপায়ণ সিটি উত্তরা”র সামনে ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবারের লোকজন বিভিন্ন ভেনার ফেস্টুন হাতে নিয়ে মুকুল ও তার ভাইকে ভূমিদস্যু আখ্যায়িত করে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন। রানা ভোলা এলাকায় বসবাসরত ভুক্তভোগী মোস্তফা জামান ইনকিলাবকে বলেন,তার পিতা মোহাম্মদ আলী সাবেক হরিরামপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ছিলেন।
বাবার সু-নামে তিনি পরর্বতীতে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়ে এলাকার জনগনের সেবা করেছে। তারা অত্র এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা, এই এলাকায় তার বাপ দাদারও জন্মভূমি। এখানে তাদের অনেক জমি জমা (সম্পদ) রয়েছে।তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তারা জেল জুলুম ও মামলা হামলার স্বীকার হয়েছেন। রূপায়ণ সিটির মালিক অন্যায় ভাবে তার আত্মীয় সজন ও পরিবারের লোকজনের ৩৬ বিঘা জমি জোরপূর্বক দখল করে নিয়ে যায়। তিনি আরো বলেন,সে সময় মুকুল ও তার ভাই তাদের পালিত সন্রাসীবাহীনি ও দলবল নিয়ে এসে তাকে দুই কোটি তেত্রিশ লক্ষ টাকার চেক দিয়ে জমিটি রেজিস্ট্রি করে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে তিনি আদালতে মামলা করে সেই টাকা আদায় করেন। মোস্তফা জামান আরো বলেন,রূপায়ন সিটির মালিক মুকুলের সাথে তাদের ২০১০ সালে ৩৬৩৫ নম্বর সমঝোতা চুক্তিপত্র সম্পাদিত ও রেজিস্ট্রি হইয়াছে। চুক্তি মোতাবেক তাদেরকে কোন টাকা পয়সা না দিয়া উক্ত সম্পত্তি অন্যত্র হস্তান্তর করিয়া টাকা নেন এবং সেই জমি জুলুমবাজী করিয়া তার প্রজেক্টে অন্তর্ভুক্ত করে নেন। উপায় না পেয়ে তিনি পরবর্তীতে রূপায়ন হাউজিং এস্টেট লিঃ ও সিনিয়র অ্যাডভোকেট সরদার নুরুজ্জামান অ্যাডভোকেট সুপ্রিম কোর্টের নিকট উভয় পক্ষ কাগজপত্র জমা দেন। রূপায়ন হাউজিং এস্টেট লিঃ এর আবেদনের আলোকে আরবিট্রেশন কেইস ১/২০১৬ খোলা হয়। আরবিট্টেশন আদালত কাগজপত্র পর্যালোচনা করে ২৮/৫/২০১৮ ইং তারিখ রোয়েদাদ প্রদান করেন। সে সময় রূপায়নের দরখাস্ত মতে সম্পত্তির মূল্যমান নির্ধারণে কমিটি করা হয়। কমিটির মতামতে প্রতি কাঠা জমির মূল্য এক কোটি ছাব্বিশ লক্ষ পঞ্চাশ হাজার নির্ধারণ করা হয়। উক্ত সিদ্ধান্ত উভয় পক্ষ মানার কথা থাকলেও রূপায়ন হাউজিং এস্টেট লিঃ নিয়ম না মানার কারণে তারা আবারও আরবিট্টেশন ৩৭৩/২০১৮ করেন। উক্ত আরবিট্রেশনে জেলা জজ আদালত সম্পত্তির আকার,প্রকার পরিবর্ধনে ও বেচাবিক্রি হইতে বিরত থাকার জন্য নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেয়। আদালতের আদেশ অমান্য করে রূপায়ন হাউজিং এস্টেট লিঃ সেখানে উন্নয়ন কাজ করে। মোস্তফা জামান আরো জানান,সে সময় তিনি একটি ভায়েলেশন মিস ১২২/২০০৯ আনয়ন করেন। রূপায়ন হাউজিং এস্টেট লিঃ এর আরবিট্রিশন মিস ৩৮৭/২৯১৮ আনয়ন করিলে উক্ত অরবিট্রেশন মিস কেইস দুইটি শুনানি অন্তে তার কেইসটি মন্জুর হয়,এবং রূপায়ন হাউজিং এস্টেট লিঃ এর আনিত কেইসটি ডিসমিস করিয়া রোয়েদাদ,বহাল রাখে। এ ভাবে বছরের পর বছর তারা ভুক্তভোগীদেরকে আদলতে ঘুরপাক করাচ্ছে।
এসময় অনান্য ভুক্তভোগী মিন্টু, মোশারফ,জহিরুল,হাসেম,
মোস্তফা,আলমগীরসহ শতাধিক ভুক্তভোগীরা রূপায়ণ সিটি উত্তরার চেয়ারম্যান ও পরিচালকদের বিভিন্ন অনিয়ম,দূর্নীতি, জাল জালিয়াতির চিত্র তুলে ধরেন।এসময় ফ্ল্যাট মালিকগণ বলেন,ফ্ল্যাট বিক্রির সময় তারা বলেছিলেন ৩ স্তরের সিকিউরিটি সেবা ও নানাবিধ সুযোগ সুবিধা দেওয়ার কথা বলে ফ্ল্যাট বিক্রি করে। এখন দেখছি তাদের কথা কাজে মিল নাই। বর্তমানে তারা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। অন্যান্য ভুক্তভোগীরা বলেন, প্রকল্পের শুরুতে এলাকার সহজ সরল শত শত মানুষের কাছ থেকে তারা জমি লিখে নিয়ে যায়। জমি রেজিষ্ট্রি করে নেওয়ার পর টাকা নিয়ে বিভিন্ন তালবাহানা শুরু করে। চুক্তি অনুযায়ী অনেককে নগদ টাকার পাশাপাশি ফ্ল্যাট দেওয়ার কথা থাকলেও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তারা বছরের পর বছর তাদেরকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করছে।
এ সময় রানা ভেলা এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা মোস্তফা জামান সাংবাদিকদের বলেন,রূপায়ন হাউজিং এস্টেট লিমিটেড মহামান্য সুপ্রিম কোর্টে আরবিট্রেশন মিস কেইসের আদেশের বিরুদ্ধে আরবিট্রেশন মিস আপীল করেন। যাহা শুনানীর অপেক্ষায় রয়েছে। এছাড়াও তিনি রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের নিকট তর্কিত সম্পত্তির মালিকানা দাবি করে বিগত ১৮/০৫/২০১৫ইং প্রকাশিত গেজেট বাতিল চেয়ে আবেদন করেন।তিনি আরো বলেন, তার ভাইয়ের ৪২ হাজার স্কয়ার বর্গফুটের ফ্লাট কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত দেয় নি। তার ৮.১৮ কাঠা জমি জয়েন্ট ভেঞ্চার দেওয়ার বিনিময়ে রূপায়ন সিটি উত্তরা প্রকল্পের ১ নং ফেইজের ১৬ নং বিল্ডিং এর ৩য় তলা এ/১,এবং এ/২,৪র্থ তলার এ/১ এবং এ/২,ও ৫ম তলার এ/১ এর ৫ টি ফ্ল্যাট অদ্যাবদি বুঝাইয়া দেয় নাই।এসব তথ্য তার দেওয়া লিখিত আবেদন থেকে জানা যায়। মানববন্ধনে ভুক্তভোগীরা তদন্তপূর্বক রূপায়নসিটির মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে দাবি জানান।