আন্তর্জাতিক ডেস্ক,সিটিজেন নিউজ : অধিকৃত জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করায় ভারতের তীব্র সমালোচনা করে আসছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। এবার আসামের জাতীয় নাগরিক পঞ্জিকা (এনআরসি) নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন পাকিস্তানের এই প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেছেন, কাশ্মীরের বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদা তুলে নেয়া থেকে জাতীয় নাগরিক তালিকা থেকে ১৯ লাখ মানুষের নাম বাদ দেয়াটা আসলে ভারত থেকে মুসলিমদের বিতাড়িত করার একটি বড় ছক।
এনআরসি নিয়ে পাক এই মন্ত্রী বলেন, মোদি সরকারের এই মুসলিম তাড়ানোর নীতি সারা পৃথিবীকে সতর্ক বার্তা দিচ্ছে। কাশ্মীর থেকে এনআরসি পুরোটাই মুসলিমদের উৎখাত করার বৃহত্তর কৌশলের অংশ।
কাশ্মীর নিয়ে কয়েক দিন আগেই মোদি নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারকে ‘ফ্যাসিস্ট’ বলে আক্রমণ করেছিল ইসলামাবাদ। ইমরান খান বলেছিলেন, মোদি সরকার নাৎসি পার্টির আদর্শ নিয়ে চলছে।
গত শনিবার আসামের চূড়ান্ত নাগরিক তালিকা প্রকাশ করা হয়। এই তালিকা থেকে বাদ পড়ছে ১৯ লাখের বেশি মানুষ। এনআরসি সেবা কেন্দ্র ও সরকারি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তালিকায় দেখা যায়, ভারতের নাগরিকত্ব পেয়েছেন ৩ কোটি ১১ লাখ ২১ হাজার ৪ জন। অপরদিকে চূড়ান্ত এই তালিকা থেকে বাদ পড়েছে ১৯ লাখ ৬ হাজার ৬৫৭ জনের নাম।
গত বছরের ৩০ জুলাই এনআরসির প্রথম দফার তালিকা থেকে বাদ পড়েছিল প্রায় ৪০ লাখ আবেদনকারীর নাম। এদের বেশিরভাগই মুসলিম এবং বাঙালি।
তবে সব ধরনের আইনি প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত নাগরিক পঞ্জিকা থেকে বাদ পড়া ব্যক্তিদের এখনই বিদেশি বলে গণ্য করা হবে না বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
এনডিটিভি বলছে, যারা এনআরসি থেকে বাদ পড়েছেন, তারা ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে আবেদন করতে পারবেন। এই আবেদনের সময়সীমা ৬০ দিন থেকে বাড়িয়ে ১২০ দিন করা হয়েছে।
দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, শুনানির জন্য মোট ১ হাজার ট্রাইব্যুনাল স্থাপন করা হবে। ইতোমধ্যে ১০০টি ট্রাইব্যুনাল চালু করা হয়েছে এবং আরও ২০০টি ট্রাইব্যুনাল সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে চালু করা হবে।
ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে নাগরিকত্ব প্রমাণের মামলায় হেরে গেলে হাইকোর্ট এবং পরে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে পারবেন রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়া ভারতীয়রা। সব আইনি প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত কাউকে আটক করা হবে না।
তবে চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ পড়া ১৯ লাখ মানুষের মধ্যে ১৪ লাখকে বাংলাদেশি অবৈশ অনুপ্রবেশকারী বলে দাবি করেছেন আসামের অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। ভারতীয় জনতা পার্টি নেতৃত্বাধীন সরকারের মন্ত্রী বিশ্বশর্মা এই ১৪ লাখ মানুষকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর হুমকি দিয়েছেন।